হাওর বার্তা ডেস্কঃ দুই পাশে সাগর-সমুদ্রের ঢেউ। বয়ে যায় মাতাল হাওয়া। যত দূর চোখ যায় জলরাশির অবারিত ঢল। এমন বিস্তীর্ণ হাওরের বুক চিরে গেছে পিচঢালা এক সড়কপথ। আর এমন দিগন্তজোড়া সড়ক মেলে ধরেছে শিল্পীর তুলিতে আঁকা চিত্রকর্ম। এতে আগ্রহ বেড়েছে পর্যটকদের।
দৃষ্টিনন্দন নতুন সড়কটি নির্মিত হয়েছে জলে ভাসা কিশোরগঞ্জের তিন উপজেলা ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রামে। এতে নতুনত্বের ছোঁয়া পেয়েছে হাওরের প্রাকৃতিক রূপবৈচিত্র্যে। দূরের বিচ্ছিন্ন ছোট ছোট গ্রাম যেন একেকটি ভেসে থাকা দ্বীপ। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এই লীলাভূমিতে পর্যটন আকর্ষণের নতুন সম্ভাবনা হাতছানি দিচ্ছে হাওরবাসীর স্বপ্নে।
ভরা বর্ষায় এখানকার মানুষের চলাচলে একমাত্র ভরসা ছিল নৌকা। আর এখন হাওরের বিস্ময় খ্যাত এই সড়কে চলে নানা ধরনের যানবাহন। উত্তাল ঢেউ আর এলোমেলো বাতাসে খানিকটা পথ মাড়ালেই মিলবে নৈসর্গিক তৃপ্তি। বিচ্ছিন্ন এসব এলাকার মানুষ এখন পাকা সড়ক ধরেই গন্তব্যে ছুটছেন।
ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম উপজেলায় এক হাজার ২৬৮ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয় ‘অল ওয়েদার রোড’। এর মাধ্যমে ৪৭ কিলোমিটার উঁচু পাকা সড়ক ও ৩৫ কিলোমিটার সাবমারসিবল সড়ক এবং দৃষ্টিনন্দন সেতু ধরে সারা বছর যাতায়াত করে মানুষ। অল ওয়েদার সড়কের দুই পাশে অথৈ জলরাশি। বর্ষায় আকাশে সাদা মেঘের ভেলা মন কাড়ে। মেঘ আর জলের মিতালী এককথায় মনোরম।
সাগরের মতোই হাওরে সূর্য ডোবে। ভোরে পানির নিচ থেকে উঠে আসা সূর্যকে দেখলে মনে জাগে অন্যরকম অনুভূতি। সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের সময় সৃষ্টি হয় চমৎকার সৌন্দর্য।
মিঠামইনের ইউএনও প্রভাংশু সোম মহান বলেন, প্রাকৃতিকভাবেই হাওরের সৌন্দর্য নয়নাভিরাম। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে সারা বছর চলাচল উপযোগী অল ওয়েদার রোড। সড়কটির ফলে এই এলাকা জুড়ে এখন পর্যটনের নতুন সম্ভাবনা।
কিশোরগঞ্জ-৪ আসনের এমপি রেজওয়ান আহম্মদ তৌফিক বলেন, হাওরে গাড়ি চলবে এমন স্বপ্ন আমার পূর্বপুরুষেরা কখনো দেখেনি। এখানে পর্যটন নিয়ে কিছু করলে মানুষ কক্সবাজার না গিয়ে এখানে আসবে।