ঢাকা ১১:০৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কাঁঠালের বিচির উপকারিতা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৩:৪২:২০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ জুলাই ২০২০
  • ২৩৩ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ গরম পড়তেই ফলের বাজারে অন্যতম আকর্ষণ হয়ে থাকে কাঁঠাল। ইতিমধ্যেই কাঁঠালকে ঘরে তোলা শুরু করে দিয়েছেন অনেকেই। প্রোটিন, ভিটামিন ও পটাসিয়ামসমৃদ্ধ এই ফল গরমে শরীর সুস্থ রাখার পক্ষে একেবারে আদর্শ। তবে শুধু ফলেই নয়, গুণ রয়েছে ফলের বীজেও। কাঁঠালের বীজের উপকারিতা জানলে আর কোনওদিন সেটিকে ফেলে দেওয়ার কথা মাথাতেও আনবেন না। অনেকেই এই কাঁঠালের বিচি পরিষ্কারের ঝামেলার জন্য এর স্বাদ গ্রহণ করতে পারে না। এর গায়ে লেগে থাকা লাল চামড়া পরিষ্কার করতে অনেকটা সময় লাগে এবং কষ্টকরও। তাই কাঁঠালের বিচি অনেকেই খেতে চান না।

কাঁঠালের বীজের উপকারিতা-
বলিরেখা দূর করে
ত্বকে বলিরেখা থেকে নিষ্কৃতি দিতে ম্যাজিকের মতো কাজ করে কাঁঠালের বীজ। একটি বীজ কোল্ড ক্রিমের সঙ্গে পিষে পেস্ট তৈরি করুন। তারপর সেটি নিয়মিত ত্বকে লাগান। বলিরেখা পালাবে। কাঁঠালের বীজ আপনার ত্বককে করে তুলবে সজীব ও তরতাজা। দু-একটি বীজ সামান্য দুধ ও মধুতে কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রেখে, সেটা দিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করুন। সেই পেস্ট সারা মুখে লাগিয়ে শুকোতে দিন। তারপর উষ্ণ গরম জলে মুখটা ধুয়ে ফেলুন। দেখবেন, ত্বকের ঔজ্জ্ল্য বেড়ে দ্বিগুণ হয়ে যাবে।

মানসিক চাপ কমায়, ত্বকের রোগ সারায়
কাঁঠালের বীজ প্রোটিন ও মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টসে ঠাসা। সেজন্যই এটি মানসিক চাপ কমাতে বিশেষ কার্যকরী। এটি ত্বকের নানা রোগও সারায়। ত্বকে ময়েশ্চারের মাত্রা বেশি রাখতে ও স্বাস্থ্যকর চুল পেতে নিয়মিত কাঁঠালের বীজ খাওয়া ভালো।

রক্তস্বল্পতার শত্রু
রোজ মেনুতে কাঁঠালের বীজ রাখলে আপনার শরীরের আয়রনের মাত্রা বাড়বে। এই বীজে প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকে। কাঁঠালের বীজ হিমোগ্লোবিনের একটি উপাদান। ফলে এটি খেলে অ্যানিমিয়া বা রক্তস্বল্পতা দূরে হঠবে। আয়রন সুস্থ রাখবে আপনার মস্তিষ্ক ও হার্টকেও।

স্বাস্থ্যকর চুল ও ভালো দৃষ্টিশক্তি
কাঁঠালের বীজে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ থাকে। চোখের স্বাস্থ্যের জন্য এই ভিটামিন অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। এটি রাতকানা রোগ কাটাতেও সাহায্য করে। শুধু চোখ নয়, চুলের স্বাস্থ্যও ভালো রাখে ভিটামিন এ। চুলের আগা ফেটে যাওয়া রোধ করে এই ভিটামিন।

হজমশক্তি বাড়ায়
বদহজম রোধে খুবই কার্যকরী কাঁঠালের বীজ। এটি রোদে শুকিয়ে বেঁটে পাউডারের মতো করে ফেলুন। বদহজমে সহজ হোমমেড রেমেডি হতে পারে এই পাউডার। এতকিছু না করে শুধু কাঁঠালের বীজ খেলে কমবে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা। কারণ প্রচুর ফাইবার থাকে কাঁঠালের বীজে।

তবে না ঘষে আপনি খুব সহজেই কাঁঠালের বিচির গায়ে থাকা লাল চামড়া মিনিটেই পরিষ্কার করতে পারবেন। আর সংরক্ষণও করতে পারবেন। চলুন তবে জেনে নেয়া যাক কাঁঠালের বিচি পরিষ্কার ও সংরক্ষণ পদ্ধতি-

যেভাবে সহজে পরিষ্কার করবেন
– প্রথমে কাঁঠালের বিচির উপরের সাদা খোসা ছাড়িয়ে নিন। সব খোসা ছাড়ানো হয়ে গেলে, একটি পাত্রে পানি নিয়ে তাতে বিচিগুলো দিয়ে দিন। পানি এমনভাবে দেবেন যাতে সব বিচিগুলোই পানির ভেতর ডুবে থাকে। এবার পাত্রটি চুলায় বসিয়ে দিন। চুলায় হাই ফ্লেমে দিয়ে বলক আশা পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। বলক আসার সঙ্গে সঙ্গে নামিয়ে পানি ছেঁকে নিন। এবার সামান্য ডলা দিয়ে দেখুন, লাল চামড়া সহজেই উঠে আসবে। চাইলে চালনিতে ডলা দিতে পারেন। বেশি করে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। দেখবেন একদম কম সময়ে সব বিচি পরিষ্কার হয়ে গেছে।

– এছাড়াও কাঁঠালের বিচি পরিষ্কার করার আরেকটি উপায় হচ্ছে ঘষে নেয়া। এক্ষেত্রে আপনি ব্যবহার করতে পারেন শিল-পাটা। কাঁঠালের বিচি খোসা ছাড়িয়ে কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রাখুন। তারপর পাটায় মধ্যে একটি কিংবা চার-পাঁচটি করে বিচি রেখে হাতের সাহায্যে ঘষে নিন। দেখবেন খুব সহজেই লালচে অংশ উঠে গেছে।

– খোসা ছাড়ানো কাঁঠালের বিচি থেকে লালচে অংশটুকু আপনি চাইলে দা বা বটির সাহায্যেও কেটে বাদ দিতে পারেন। এক্ষেত্রেও আলু যেভাবে ছিলে সেই একই পদ্ধতি অবলম্বন করুন।

তবে এ তিনটি পদ্ধতির চেয়ে প্রথমটিই সহজ।

সংরক্ষণ পদ্ধতি
পরিস্কার করা বিচি ভালো করে পানি ঝরিয়ে নিন। ফ্যানের বাতাসে ছড়িয়ে শুকিয়ে নিন। এবার এয়ারটাইট বক্স বা জিপ লকার বচে ভরে ৬ থেকে ৭ মাস সংরক্ষণ করুন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

কাঁঠালের বিচির উপকারিতা

আপডেট টাইম : ০৩:৪২:২০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ জুলাই ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ গরম পড়তেই ফলের বাজারে অন্যতম আকর্ষণ হয়ে থাকে কাঁঠাল। ইতিমধ্যেই কাঁঠালকে ঘরে তোলা শুরু করে দিয়েছেন অনেকেই। প্রোটিন, ভিটামিন ও পটাসিয়ামসমৃদ্ধ এই ফল গরমে শরীর সুস্থ রাখার পক্ষে একেবারে আদর্শ। তবে শুধু ফলেই নয়, গুণ রয়েছে ফলের বীজেও। কাঁঠালের বীজের উপকারিতা জানলে আর কোনওদিন সেটিকে ফেলে দেওয়ার কথা মাথাতেও আনবেন না। অনেকেই এই কাঁঠালের বিচি পরিষ্কারের ঝামেলার জন্য এর স্বাদ গ্রহণ করতে পারে না। এর গায়ে লেগে থাকা লাল চামড়া পরিষ্কার করতে অনেকটা সময় লাগে এবং কষ্টকরও। তাই কাঁঠালের বিচি অনেকেই খেতে চান না।

কাঁঠালের বীজের উপকারিতা-
বলিরেখা দূর করে
ত্বকে বলিরেখা থেকে নিষ্কৃতি দিতে ম্যাজিকের মতো কাজ করে কাঁঠালের বীজ। একটি বীজ কোল্ড ক্রিমের সঙ্গে পিষে পেস্ট তৈরি করুন। তারপর সেটি নিয়মিত ত্বকে লাগান। বলিরেখা পালাবে। কাঁঠালের বীজ আপনার ত্বককে করে তুলবে সজীব ও তরতাজা। দু-একটি বীজ সামান্য দুধ ও মধুতে কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রেখে, সেটা দিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করুন। সেই পেস্ট সারা মুখে লাগিয়ে শুকোতে দিন। তারপর উষ্ণ গরম জলে মুখটা ধুয়ে ফেলুন। দেখবেন, ত্বকের ঔজ্জ্ল্য বেড়ে দ্বিগুণ হয়ে যাবে।

মানসিক চাপ কমায়, ত্বকের রোগ সারায়
কাঁঠালের বীজ প্রোটিন ও মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টসে ঠাসা। সেজন্যই এটি মানসিক চাপ কমাতে বিশেষ কার্যকরী। এটি ত্বকের নানা রোগও সারায়। ত্বকে ময়েশ্চারের মাত্রা বেশি রাখতে ও স্বাস্থ্যকর চুল পেতে নিয়মিত কাঁঠালের বীজ খাওয়া ভালো।

রক্তস্বল্পতার শত্রু
রোজ মেনুতে কাঁঠালের বীজ রাখলে আপনার শরীরের আয়রনের মাত্রা বাড়বে। এই বীজে প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকে। কাঁঠালের বীজ হিমোগ্লোবিনের একটি উপাদান। ফলে এটি খেলে অ্যানিমিয়া বা রক্তস্বল্পতা দূরে হঠবে। আয়রন সুস্থ রাখবে আপনার মস্তিষ্ক ও হার্টকেও।

স্বাস্থ্যকর চুল ও ভালো দৃষ্টিশক্তি
কাঁঠালের বীজে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ থাকে। চোখের স্বাস্থ্যের জন্য এই ভিটামিন অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। এটি রাতকানা রোগ কাটাতেও সাহায্য করে। শুধু চোখ নয়, চুলের স্বাস্থ্যও ভালো রাখে ভিটামিন এ। চুলের আগা ফেটে যাওয়া রোধ করে এই ভিটামিন।

হজমশক্তি বাড়ায়
বদহজম রোধে খুবই কার্যকরী কাঁঠালের বীজ। এটি রোদে শুকিয়ে বেঁটে পাউডারের মতো করে ফেলুন। বদহজমে সহজ হোমমেড রেমেডি হতে পারে এই পাউডার। এতকিছু না করে শুধু কাঁঠালের বীজ খেলে কমবে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা। কারণ প্রচুর ফাইবার থাকে কাঁঠালের বীজে।

তবে না ঘষে আপনি খুব সহজেই কাঁঠালের বিচির গায়ে থাকা লাল চামড়া মিনিটেই পরিষ্কার করতে পারবেন। আর সংরক্ষণও করতে পারবেন। চলুন তবে জেনে নেয়া যাক কাঁঠালের বিচি পরিষ্কার ও সংরক্ষণ পদ্ধতি-

যেভাবে সহজে পরিষ্কার করবেন
– প্রথমে কাঁঠালের বিচির উপরের সাদা খোসা ছাড়িয়ে নিন। সব খোসা ছাড়ানো হয়ে গেলে, একটি পাত্রে পানি নিয়ে তাতে বিচিগুলো দিয়ে দিন। পানি এমনভাবে দেবেন যাতে সব বিচিগুলোই পানির ভেতর ডুবে থাকে। এবার পাত্রটি চুলায় বসিয়ে দিন। চুলায় হাই ফ্লেমে দিয়ে বলক আশা পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। বলক আসার সঙ্গে সঙ্গে নামিয়ে পানি ছেঁকে নিন। এবার সামান্য ডলা দিয়ে দেখুন, লাল চামড়া সহজেই উঠে আসবে। চাইলে চালনিতে ডলা দিতে পারেন। বেশি করে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। দেখবেন একদম কম সময়ে সব বিচি পরিষ্কার হয়ে গেছে।

– এছাড়াও কাঁঠালের বিচি পরিষ্কার করার আরেকটি উপায় হচ্ছে ঘষে নেয়া। এক্ষেত্রে আপনি ব্যবহার করতে পারেন শিল-পাটা। কাঁঠালের বিচি খোসা ছাড়িয়ে কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রাখুন। তারপর পাটায় মধ্যে একটি কিংবা চার-পাঁচটি করে বিচি রেখে হাতের সাহায্যে ঘষে নিন। দেখবেন খুব সহজেই লালচে অংশ উঠে গেছে।

– খোসা ছাড়ানো কাঁঠালের বিচি থেকে লালচে অংশটুকু আপনি চাইলে দা বা বটির সাহায্যেও কেটে বাদ দিতে পারেন। এক্ষেত্রেও আলু যেভাবে ছিলে সেই একই পদ্ধতি অবলম্বন করুন।

তবে এ তিনটি পদ্ধতির চেয়ে প্রথমটিই সহজ।

সংরক্ষণ পদ্ধতি
পরিস্কার করা বিচি ভালো করে পানি ঝরিয়ে নিন। ফ্যানের বাতাসে ছড়িয়ে শুকিয়ে নিন। এবার এয়ারটাইট বক্স বা জিপ লকার বচে ভরে ৬ থেকে ৭ মাস সংরক্ষণ করুন।