ঢাকা ১০:৫৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ২৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যে দেশে নারীর কোন নাম নেই

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০২:৫৭:৪২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ জুলাই ২০২০
  • ১৯৯ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ আফগানিস্তানে নারীরা তাদের নিজস্ব পরিচয় প্রকাশের অধিকার আদায়ের আন্দোলন শুরু করেন তিন বছর আগে। মুখ খুলেছেন সাহার সামেতসহ আরো অনেকে। তাদের মতে, একজন নারীর পরিচয় প্রকাশ তার একটা মৌলিক অধিকার। এরই মধ্যে হোয়্যারইজমাইনেম বিষয়টি সংসদে উঠেছে। তবে রাজনীতিবিদরা কি প্রতিক্রিয়া দেখাবেন তার উপরই নির্ভর করছে এই আন্দোলনের ভবিষ্যৎ।

রাবিয়ার অনেক জ্বর, সারা শরীরে ব্যথা। অনেক জ্বর নিয়ে তিনি গেছেন ডাক্তারের কাছে। ডাক্তার তার কভিড-১৯ শনাক্ত করেছেন। রাবিয়া বাসায় ফিরে তার স্বামীর হাতে পেসক্রিপশনটা দিলেন, যাতে স্বামী তার জন্য ওষুধগুলো কিনে আনতে পারেন। স্বামীর চোখে পড়ল প্রেসক্রিপশনে রাবিয়ার নাম লেখা। ক্রোধে উন্মাদ হয়ে গেলেন স্বামী। বাইরের একজন অপরিচিত পুরুষের কাছে তার নাম প্রকাশ করার জন্য তাকে পেটাতে লাগলেন।

আফগানিস্তানের সমাজে এটাই নিয়ম। বাইরের অপরিচিত মানুষের কাছে মেয়েরা তাদের নাম গোপন রাখতে বাধ্য হন পরিবারের চাপে। এমনকি ডাক্তারের কাছেও নাম বলা যাবে না। কিন্তু কিছু কিছু নারী এখন এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন। সমস্যার শুরু হয় একজন কন্যা সন্তানের জন্মের সময় থেকেই। বহু বছর পর্যন্ত তার কোন নামই থাকে না। তাকে নাম দিতেই তার মৃত্যুর সময় হয়ে যায়।

একটি মেয়ের যখন বিয়ে হয়, বিয়ের আমন্ত্রণপত্রে কোথাও তার নাম উল্লেখ করা হয় না। সে অসুস্থ হলে চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশনেও প্রায়শই তার নাম উল্লেখ করা হয় না। সে যখন মারা যায়, তখন তার মৃত্যু সনদেও তার নাম লেখা হয় না। এমনকি কবরের স্মৃতিফলকেও সে নামহীনই থেকে যায়। যখন কেউ তাদের নাম জিজ্ঞেস করে, তখন ভাবতে হয় নিজের ভাই,বাবা বা হবু স্বামীর সম্মান রক্ষার কথা। কেউ চাই তাকে বাবার কন্যা বলে পরিচয় দেয়া হোক, আমার ভাইয়ের বোন বলা হোক এবং ভবিষ্যতে চাই পরিচয় দেয়া হোক স্বামীর স্ত্রী নামে, তারপর সন্তানের মা এই নামে।

মেয়েরা তাদের নিজেদের নাম ব্যবহার করলে সমাজ তাকে ভ্রূকুটি করে। এমনকি আফগানিস্তানের অনেক জায়গায় মেয়েদের নাম ব্যবহার করাকে পরিবারের জন্য অপমানজনক মনে করা হয়।

বহু আফগান পুরুষ তাদের বোন, স্ত্রী বা মায়ের নাম প্রকাশ্যে উচ্চারণ করেন না, কারণ বাইরে তাদের নাম বলা লজ্জার এবং অসম্মানজনক। নারীদের সাধারণত পরিচয় দেয়া হয় পরিবারের সবচেয়ে বয়স্ক পুরুষের সাথে তার সম্পর্কের সূত্র ধরে – যেমন অমুকের মা, অমুকের বোন বা অমুকের মেয়ে। আফগান আইন অনুযায়ী শিশুর জন্ম সনদে শুধু বাবার নাম নথিভূক্ত করার বিধান আছে।

ফরিদা সাদাতের বিয়ে হয়েছিল শিশু বয়সে। তার প্রথম সন্তানের যখন জন্ম হয়, তখন তার বয়স ছিল ১৫। পরে স্বামীর সাথে তার ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। ফরিদা তার চার সন্তানকে নিয়ে জার্মানি চলে যান। তিনি বলছেন যে তার সন্তানদের দৈনন্দিন জীবনে, তাদের বেড়ে ওঠার সময় তার স্বামী শারীরিক এবং মানসিকভাবে অনুপস্থিত ছিলেন। তাই ফরিদা মনে করেন “আমার সন্তানদের পরিচয়পত্রে” আমার স্বামীর নাম থাকার কোন অধিকার তার নেই।তিনি বলেন, আফগানিস্তানে অনেক পুরুষ আছেন, আমার সাবেক স্বামীর মত, যাদের অনেক স্ত্রী আছেন। তারা সন্তানদের দেখেনও না।

সে কারণেই আন্দোলনে নেমেছেন কিছু নারী। তারা চাইছেন তাদের নাম প্রকাশের স্বাধীনতা। তাদের আন্দোলনের নাম তারা দিয়েছেন হোয়্যারইজমাইনেম – আমার নাম কোথায়? সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং পোস্টারে এই হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করছেন আন্দোলনকারী নারীরা। হোয়্যারইজমাইনেম আন্দোলনকারীরা তাদের প্রচারণায় ব্যবহার করছেন লালেহ ওসমানি নামে এক নারীর নাম।

লালেহ ওসমানী বলছেন হোয়্যারইজমাইনেম আন্দোলন তিনি শুরু করেন যাতে মেয়েরা তাদের এই মৌলিক অধিকার আবার ফিরে পায়। লালেহ ওসমানীও হেরাতের বাসিন্দা। তিনি এই প্রথায় ত্যক্তবিরক্ত হয়ে শুরু করেছিলেন হোয়্যারইজমাইনেম? আন্দোলন, যাতে নারীরা এই মৌলিক অধিকার আবার ফিরে পেতে পারেন। তিনি বলেন, আমাদের আন্দোলনের ফলে সন্তানের জন্ম সনদে বাবার নামের পাশাপাশি মায়ের নামও যাতে নথিভূক্ত করা যায়, তার জন্য আফগান সরকারকে রাজি করানোর পথে আমরা এক ধাপ এগিয়েছি। মারিয়াম সামা আবেদন করেছেন যাতে সন্তানের জন্ম সনদে মায়ের নাম নথিভূক্ত করার বিধান আনা হয়। তিনি এ নিয়ে টুইট করেছেন। এবং বিষয়টি নিয়ে আরও আলোচনার পক্ষে সমর্থনও দেখা যাচ্ছে।

কেউ কেউ তার আন্দোলন নিয়ে ব্যাঙ্গ করেছেন, কেউ মস্করা করে লিখেছেন এরপর হয়ত মিস ওসমানী আন্দোলন করবেন যাতে সন্তানের জন্ম সনদে সব আত্মীয়-স্বজনের নাম নথিভূক্ত করা হয়। কেউ কেউ বলেছেন পরিবারের মধ্যে শান্তি বজায় রাখাটা অগ্রাধিকার পাওয়া উচিত। আপনি কোনটাকে অগ্রাধিকার দেবেন, সেটা আগে ভাবুন।

সঙ্গীতশিল্পী ও সঙ্গীত পরিচালক ফারহাদ দারিয়া এবং সঙ্গীত রচয়িতা আরিয়ানা সাঈদ প্রথম থেকেই এই আন্দোলনের পক্ষে আছেন। তিনি বলছেন কারও মা, বোন, কন্যা বা স্ত্রী সেটা পরিবারে একজন নারীর স্থানকে বোঝায়। সেটা ওই নারীর পরিচিতি নয়।পুরুষ যখন একজন নারীর নিজস্ব পরিচিতিকে অস্বীকার করে, তখন সেই নারীরাও বিশ্বাস করতে শুরু করে তাদের আলাদা কোন পরিচয় থাকতে পারে না। আফগানিস্তানের যেসব তারকা শিল্পী এই আন্দোলনের পেছনে আছেন তাদের একজন জনপ্রিয় সঙ্গীত শিল্পী আরিয়ানা সাঈদ।

আফগানিস্তানের পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নারীদের পরিচিতিকে স্বীকৃতি না দেবার প্রধান কারণ হল, পুরুষরা তাদের সম্মান রক্ষায় নারীদের সারা শরীর ঢেকে রাখতেই শুধু বাধ্য করেন না, তারা চান মেয়েদের নামও ঢেকে রাখতে বলছেন আফগান সমাজবিজ্ঞানী আলী কাভে। তিনি আরো বলেন: আফগান সমাজে, তারাই আদর্শ নারী যাদের কখনও চোখে দেখা যায়নি, যাদের কণ্ঠ কখনও শোনা যায়নি। প্রবাদ আছে: ‘সে নারীকে সূর্য এবং চন্দ্রও দেখেনি।’

আফগান চিকিৎসক শাকারদক্ত জাফারী মনে করেন এই আন্দোলনের জন্য সরকারের সহায়তার প্রয়োজন । তিনি মনে করেন আফগান নারীকে তার নিজস্ব পরিচয় তুলে ধরতে হলে তার আর্থিক, সামাজিক ও মানসিক স্বাধীনতারও প্রয়োজন। প্রায় দুই দশক আগে তালেবান প্রশাসনের পতন ঘটার পর থেকে আফগানিস্তানে নারীদের প্রকাশ্যে আনার চেষ্টা হচ্ছে দেশের ভেতর থেকে এবং বাইরে থেকেও।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

যে দেশে নারীর কোন নাম নেই

আপডেট টাইম : ০২:৫৭:৪২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ জুলাই ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ আফগানিস্তানে নারীরা তাদের নিজস্ব পরিচয় প্রকাশের অধিকার আদায়ের আন্দোলন শুরু করেন তিন বছর আগে। মুখ খুলেছেন সাহার সামেতসহ আরো অনেকে। তাদের মতে, একজন নারীর পরিচয় প্রকাশ তার একটা মৌলিক অধিকার। এরই মধ্যে হোয়্যারইজমাইনেম বিষয়টি সংসদে উঠেছে। তবে রাজনীতিবিদরা কি প্রতিক্রিয়া দেখাবেন তার উপরই নির্ভর করছে এই আন্দোলনের ভবিষ্যৎ।

রাবিয়ার অনেক জ্বর, সারা শরীরে ব্যথা। অনেক জ্বর নিয়ে তিনি গেছেন ডাক্তারের কাছে। ডাক্তার তার কভিড-১৯ শনাক্ত করেছেন। রাবিয়া বাসায় ফিরে তার স্বামীর হাতে পেসক্রিপশনটা দিলেন, যাতে স্বামী তার জন্য ওষুধগুলো কিনে আনতে পারেন। স্বামীর চোখে পড়ল প্রেসক্রিপশনে রাবিয়ার নাম লেখা। ক্রোধে উন্মাদ হয়ে গেলেন স্বামী। বাইরের একজন অপরিচিত পুরুষের কাছে তার নাম প্রকাশ করার জন্য তাকে পেটাতে লাগলেন।

আফগানিস্তানের সমাজে এটাই নিয়ম। বাইরের অপরিচিত মানুষের কাছে মেয়েরা তাদের নাম গোপন রাখতে বাধ্য হন পরিবারের চাপে। এমনকি ডাক্তারের কাছেও নাম বলা যাবে না। কিন্তু কিছু কিছু নারী এখন এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন। সমস্যার শুরু হয় একজন কন্যা সন্তানের জন্মের সময় থেকেই। বহু বছর পর্যন্ত তার কোন নামই থাকে না। তাকে নাম দিতেই তার মৃত্যুর সময় হয়ে যায়।

একটি মেয়ের যখন বিয়ে হয়, বিয়ের আমন্ত্রণপত্রে কোথাও তার নাম উল্লেখ করা হয় না। সে অসুস্থ হলে চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশনেও প্রায়শই তার নাম উল্লেখ করা হয় না। সে যখন মারা যায়, তখন তার মৃত্যু সনদেও তার নাম লেখা হয় না। এমনকি কবরের স্মৃতিফলকেও সে নামহীনই থেকে যায়। যখন কেউ তাদের নাম জিজ্ঞেস করে, তখন ভাবতে হয় নিজের ভাই,বাবা বা হবু স্বামীর সম্মান রক্ষার কথা। কেউ চাই তাকে বাবার কন্যা বলে পরিচয় দেয়া হোক, আমার ভাইয়ের বোন বলা হোক এবং ভবিষ্যতে চাই পরিচয় দেয়া হোক স্বামীর স্ত্রী নামে, তারপর সন্তানের মা এই নামে।

মেয়েরা তাদের নিজেদের নাম ব্যবহার করলে সমাজ তাকে ভ্রূকুটি করে। এমনকি আফগানিস্তানের অনেক জায়গায় মেয়েদের নাম ব্যবহার করাকে পরিবারের জন্য অপমানজনক মনে করা হয়।

বহু আফগান পুরুষ তাদের বোন, স্ত্রী বা মায়ের নাম প্রকাশ্যে উচ্চারণ করেন না, কারণ বাইরে তাদের নাম বলা লজ্জার এবং অসম্মানজনক। নারীদের সাধারণত পরিচয় দেয়া হয় পরিবারের সবচেয়ে বয়স্ক পুরুষের সাথে তার সম্পর্কের সূত্র ধরে – যেমন অমুকের মা, অমুকের বোন বা অমুকের মেয়ে। আফগান আইন অনুযায়ী শিশুর জন্ম সনদে শুধু বাবার নাম নথিভূক্ত করার বিধান আছে।

ফরিদা সাদাতের বিয়ে হয়েছিল শিশু বয়সে। তার প্রথম সন্তানের যখন জন্ম হয়, তখন তার বয়স ছিল ১৫। পরে স্বামীর সাথে তার ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। ফরিদা তার চার সন্তানকে নিয়ে জার্মানি চলে যান। তিনি বলছেন যে তার সন্তানদের দৈনন্দিন জীবনে, তাদের বেড়ে ওঠার সময় তার স্বামী শারীরিক এবং মানসিকভাবে অনুপস্থিত ছিলেন। তাই ফরিদা মনে করেন “আমার সন্তানদের পরিচয়পত্রে” আমার স্বামীর নাম থাকার কোন অধিকার তার নেই।তিনি বলেন, আফগানিস্তানে অনেক পুরুষ আছেন, আমার সাবেক স্বামীর মত, যাদের অনেক স্ত্রী আছেন। তারা সন্তানদের দেখেনও না।

সে কারণেই আন্দোলনে নেমেছেন কিছু নারী। তারা চাইছেন তাদের নাম প্রকাশের স্বাধীনতা। তাদের আন্দোলনের নাম তারা দিয়েছেন হোয়্যারইজমাইনেম – আমার নাম কোথায়? সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং পোস্টারে এই হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করছেন আন্দোলনকারী নারীরা। হোয়্যারইজমাইনেম আন্দোলনকারীরা তাদের প্রচারণায় ব্যবহার করছেন লালেহ ওসমানি নামে এক নারীর নাম।

লালেহ ওসমানী বলছেন হোয়্যারইজমাইনেম আন্দোলন তিনি শুরু করেন যাতে মেয়েরা তাদের এই মৌলিক অধিকার আবার ফিরে পায়। লালেহ ওসমানীও হেরাতের বাসিন্দা। তিনি এই প্রথায় ত্যক্তবিরক্ত হয়ে শুরু করেছিলেন হোয়্যারইজমাইনেম? আন্দোলন, যাতে নারীরা এই মৌলিক অধিকার আবার ফিরে পেতে পারেন। তিনি বলেন, আমাদের আন্দোলনের ফলে সন্তানের জন্ম সনদে বাবার নামের পাশাপাশি মায়ের নামও যাতে নথিভূক্ত করা যায়, তার জন্য আফগান সরকারকে রাজি করানোর পথে আমরা এক ধাপ এগিয়েছি। মারিয়াম সামা আবেদন করেছেন যাতে সন্তানের জন্ম সনদে মায়ের নাম নথিভূক্ত করার বিধান আনা হয়। তিনি এ নিয়ে টুইট করেছেন। এবং বিষয়টি নিয়ে আরও আলোচনার পক্ষে সমর্থনও দেখা যাচ্ছে।

কেউ কেউ তার আন্দোলন নিয়ে ব্যাঙ্গ করেছেন, কেউ মস্করা করে লিখেছেন এরপর হয়ত মিস ওসমানী আন্দোলন করবেন যাতে সন্তানের জন্ম সনদে সব আত্মীয়-স্বজনের নাম নথিভূক্ত করা হয়। কেউ কেউ বলেছেন পরিবারের মধ্যে শান্তি বজায় রাখাটা অগ্রাধিকার পাওয়া উচিত। আপনি কোনটাকে অগ্রাধিকার দেবেন, সেটা আগে ভাবুন।

সঙ্গীতশিল্পী ও সঙ্গীত পরিচালক ফারহাদ দারিয়া এবং সঙ্গীত রচয়িতা আরিয়ানা সাঈদ প্রথম থেকেই এই আন্দোলনের পক্ষে আছেন। তিনি বলছেন কারও মা, বোন, কন্যা বা স্ত্রী সেটা পরিবারে একজন নারীর স্থানকে বোঝায়। সেটা ওই নারীর পরিচিতি নয়।পুরুষ যখন একজন নারীর নিজস্ব পরিচিতিকে অস্বীকার করে, তখন সেই নারীরাও বিশ্বাস করতে শুরু করে তাদের আলাদা কোন পরিচয় থাকতে পারে না। আফগানিস্তানের যেসব তারকা শিল্পী এই আন্দোলনের পেছনে আছেন তাদের একজন জনপ্রিয় সঙ্গীত শিল্পী আরিয়ানা সাঈদ।

আফগানিস্তানের পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নারীদের পরিচিতিকে স্বীকৃতি না দেবার প্রধান কারণ হল, পুরুষরা তাদের সম্মান রক্ষায় নারীদের সারা শরীর ঢেকে রাখতেই শুধু বাধ্য করেন না, তারা চান মেয়েদের নামও ঢেকে রাখতে বলছেন আফগান সমাজবিজ্ঞানী আলী কাভে। তিনি আরো বলেন: আফগান সমাজে, তারাই আদর্শ নারী যাদের কখনও চোখে দেখা যায়নি, যাদের কণ্ঠ কখনও শোনা যায়নি। প্রবাদ আছে: ‘সে নারীকে সূর্য এবং চন্দ্রও দেখেনি।’

আফগান চিকিৎসক শাকারদক্ত জাফারী মনে করেন এই আন্দোলনের জন্য সরকারের সহায়তার প্রয়োজন । তিনি মনে করেন আফগান নারীকে তার নিজস্ব পরিচয় তুলে ধরতে হলে তার আর্থিক, সামাজিক ও মানসিক স্বাধীনতারও প্রয়োজন। প্রায় দুই দশক আগে তালেবান প্রশাসনের পতন ঘটার পর থেকে আফগানিস্তানে নারীদের প্রকাশ্যে আনার চেষ্টা হচ্ছে দেশের ভেতর থেকে এবং বাইরে থেকেও।