ঢাকা ০৪:৪৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ত্রাণ পাচ্ছেন না দুর্গতরা বন্যায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতি পবাদিপশু নিয়ে মানুষ আশ্রয় নিচ্ছে উঁচু বাঁধে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৮:৫৯:০৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ জুলাই ২০২০
  • ২২৭ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বৃষ্টি আর ভারতের পানির ঢলে সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতি কয়েকটি জেলায় অবনতি হয়েছে। যমুনা নদীর পানি বেড়ে সিরাজগঞ্জ জেলার পাঁচটি উপজেলার নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। গতকালও দেশের ১১টি নদীর পানি বিভিন্ন পয়েন্টে বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। বন্যায় লাখ লাখ মানুষ এখন পানিবন্দি। ঘরবাড়ি ছেড়ে অনেকে আশ্রয় নিয়েছেন বাঁধে বা উঁচু স্থানে। কেউ বা আশ্রয় নিয়েছেন আশ্রয় শিবিরে। বন্যার্তদের মাঝে দেখা দিয়েছে খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সঙ্কট। অনেক জেলায় সরকারি ত্রাণ দেওয়া শুরু হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় কম। তাই অনেকে ত্রাণ পাচ্ছেন না।

বন্যার পানিতে ডুবে গেছে ফসলি জমি। বন্যায় কৃষির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ধানের ভালো দাম পেয়ে এবার বোরো কাটার সঙ্গে সঙ্গে চাষিরা আউশ ধান আবাদ করেছেন। বন্যায় আউশ ধান ছাড়াও আমন বীজতলা, কাউন, চিনা বাদাম, তিল, বেগুন, মরিচ, পটল, শশা, চিচিঙ্গা, ঝিঙে, ঢেঁড়স, কাকরোল ও পেপেসহ সবধরনের সবজির খেত এখন পানির নিচে। হাজার হাজার বিঘা খেতের ফসল ডুবে যাওয়ায় অনেক কৃষক এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছে। এছাড়া অনেকের পুকুর ডুবে লাখ লাখ টাকার মাছ ভেসে গেছে।
বর্ষা মৌসুমে সারাদেশে বন্যা পরিস্থিাতি পর্যবেক্ষণ ও তথ্য সংগ্রহে কন্ট্রোল রুম চালু করেছে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়। কন্ট্রোল রুমের মোবাইল নম্বর-০১৩১৮২৩৪৫৬০। সকাল ৯টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সার্বক্ষণিকভাবে এটি চালু থাকবে।

সিরাজগঞ্জ জেলা সংবাদদাতা সৈয়দ শামীম শিরাজী জানান, এ জেলার নদী তীরবর্তী সদর, কাজিপুর, বেলকুচি, শাহজাদপুর ও চৌহালী এই ৫টি উপজেলায় ক্রমশ বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হচ্ছে। এছাড়াও অভ্যন্তরীণ নদ-নদীর পানিও বৃদ্ধি পেয়ে প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। ইতোমধ্যেই ২৫ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ২২টি শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান এবং চরাঞ্চলের প্রায় আড়াই হাজার হেক্টর জমির ফসল। বন্যার্তরা গবাদী পশু নিয়ে পড়েছে বিপাকে। এসব স্থানে বিশুদ্ধ পানির অভাব দেখা দিয়েছে, ভেঙ্গে পড়েছে স্যানিটেশন ব্যবস্থা।

গতকাল সকালে যমুনা নদীর পানি ২৪ ঘন্টায় সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে ১৪ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৪৮ এবং কাজিপুর উপজেলায় ৭ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৭০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।
এদিকে সুনামগঞ্জ জেলার বন্যা পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হলেও এ জেলার শাল্লা উপজেলার বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। এরই মধ্যে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন শত শত পরিবার। তলিয়ে গেছে নিচু এলাকার মানুষের ঘরবাড়ি। গবাদিপশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন পানিবন্দি মানুষ। উপজেলার ৪ টি ইউনিয়নের বহু গ্রামেই বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে। বানের পানিতে ভেসে গেছে অনেক মৎস্য চাষির পুকুরের মাছ।

কুড়িগ্রাম জেলা সংবাদদাতা শফিকুল ইসলাম বেবু জানান, জেলার নদ-নদীর পানি সামান্য কমলেও এখনো ব্রহ্মপুত্র ও ধরলার পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গতকাল ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে বিপদসীমার ৬৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে, নুনখাওয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ৫৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে এবং ধরলার পানি সেতু পয়েন্টে বিপদসীমার ৪৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। ঘরবাড়ি থেকে পানি নেমে না যাওয়ায় দুর্ভোগ কমেনি প্রায় দেড় লক্ষাধিক বানভাসি মানুষের। অনেকের হাতে কাজ ও ঘরে খাবার না থাকায় খেয়ে না খেয়ে দিন অতিবাহিত করছেন । সরকারিভাবে ত্রাণ তৎপরতা শুরু হলেও অনেকের ভাগ্যে তা জুটছে না।

এ বন্যায় কোনো ত্রাণ সহায়তা পেয়েছেন কি না জানতে চাইলে, যাত্রাপুর ইউনিয়নের চর যাত্রাপুর গ্রামের রহিমা বেগম ও আমিনা জানান, আমার গুলার সবার ঘরোত পানি, চকি থাকি নাইমবার পাই নাই। পানিত হাটতে হাটতে ঠেংগোত ঘাও হইছে। হ্যামরা ৪-৫ দিন থাকি কোনরহমে খ্যায়া না খ্যায়া দিন পার করবাছি বাহে। আজ পর্যন্ত কাইও আমাক কিছু দেয় নাই, কাইও খবরো নিবার আসেও নাই।

বগুড়ার ধুনটে বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতি হয়েছে। অতি বৃষ্টি ও ভারতের ঢলে উপজেলার গোসাইবাড়ি ও ভান্ডারবাড়ি ইউনিয়নে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন কয়েক হাজার মানুষ। গতকাল সারিয়াকান্দির মথুরাপাড়া পয়েন্টে সন্ধ্যা পর্যন্ত যমুনার পানি বিপদসীমার ৬৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। উপজেলার ভান্ডারবাড়ি ইউনিয়নের আটাচর, শহড়াবাড়ি, বৈশাখী-চর, শিমুলবাড়ি, কয়াগাড়ি, বানিয়াজান, ভান্ডারবাড়ি গ্রাম এবং গোসাইবাড়ি ইউনিয়নের দড়িপাড়া, আওলাকান্দী, গোদাখালী, চন্দনবাইশা গ্রাম তলিয়ে গেছে। এতে কয়েক হাজার মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছে। নষ্ট হয়েছে শত শত হেক্টর আবাদি ফসল। পরিবার ও গবাদি পশু নিয়ে বিপাকে পড়েছে এ অঞ্চলের মানুষ।
জামালপুরে বন্যার পানি ছড়িয়ে পড়েছে ৫টি উপজেলার ৩৮টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার বিস্তীর্ণ এলাকায়। প্রায় ২ লাখ মানুষ এখন পানিবন্দি। বন্যার্তরা শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকটে ভুগছে।

রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলা সংবাদদাতা মোজাম্মেল হক জানান, উপজেলার দৌলতদিয়া ঘাট পয়েন্টে ৩০ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে , যা বিপদ সীমার ৮ দশমিক ৯৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গত ২৪ ঘন্টার চেয়ে ১২ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে । ১ ও ২নং ফেরি ঘাটে নদী ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় লঞ্চ ঘাটের পল্টুনের যাত্রীদের যাতাযাতের সিড়ির মাথার দিকে ডুবে যাওয়ার কারনে বালু ভর্তি বস্তা ফেলে উঁচু করা হয়েছে। ফেরি ঘাটের পল্টুনের র‌্যাম মিড ওয়াটার থেকে হাই ওয়াটার পয়েন্টে সরানো হয়েছে।
রংপুর জেলার চরাঞ্চলে পানিতে তলিয়েছে সবজি ক্ষেতসহ ফসলি জমি। তিস্তা ব্যারেজের সবকটি গেট খুলে দেওয়ায় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় সঙ্গে সঙ্গে পানিবন্দি হয়ে আছে দুই হাজারেরও বেশি পরিবার। গেল ২৪ ঘণ্টায় রংপুরের গঙ্গাচড়া ও কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি কিছুটা কমলেও বেড়েছে ভাঙন ঝুঁকি। নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে বেশ কয়েকটি ঘরবাড়ি। নদীগর্ভের খুব কাছাকাছি থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদ ও মক্তব নিয়ে চিন্তিত স্থানীয়রা।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

ত্রাণ পাচ্ছেন না দুর্গতরা বন্যায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতি পবাদিপশু নিয়ে মানুষ আশ্রয় নিচ্ছে উঁচু বাঁধে

আপডেট টাইম : ০৮:৫৯:০৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ জুলাই ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বৃষ্টি আর ভারতের পানির ঢলে সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতি কয়েকটি জেলায় অবনতি হয়েছে। যমুনা নদীর পানি বেড়ে সিরাজগঞ্জ জেলার পাঁচটি উপজেলার নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। গতকালও দেশের ১১টি নদীর পানি বিভিন্ন পয়েন্টে বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। বন্যায় লাখ লাখ মানুষ এখন পানিবন্দি। ঘরবাড়ি ছেড়ে অনেকে আশ্রয় নিয়েছেন বাঁধে বা উঁচু স্থানে। কেউ বা আশ্রয় নিয়েছেন আশ্রয় শিবিরে। বন্যার্তদের মাঝে দেখা দিয়েছে খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সঙ্কট। অনেক জেলায় সরকারি ত্রাণ দেওয়া শুরু হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় কম। তাই অনেকে ত্রাণ পাচ্ছেন না।

বন্যার পানিতে ডুবে গেছে ফসলি জমি। বন্যায় কৃষির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ধানের ভালো দাম পেয়ে এবার বোরো কাটার সঙ্গে সঙ্গে চাষিরা আউশ ধান আবাদ করেছেন। বন্যায় আউশ ধান ছাড়াও আমন বীজতলা, কাউন, চিনা বাদাম, তিল, বেগুন, মরিচ, পটল, শশা, চিচিঙ্গা, ঝিঙে, ঢেঁড়স, কাকরোল ও পেপেসহ সবধরনের সবজির খেত এখন পানির নিচে। হাজার হাজার বিঘা খেতের ফসল ডুবে যাওয়ায় অনেক কৃষক এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছে। এছাড়া অনেকের পুকুর ডুবে লাখ লাখ টাকার মাছ ভেসে গেছে।
বর্ষা মৌসুমে সারাদেশে বন্যা পরিস্থিাতি পর্যবেক্ষণ ও তথ্য সংগ্রহে কন্ট্রোল রুম চালু করেছে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়। কন্ট্রোল রুমের মোবাইল নম্বর-০১৩১৮২৩৪৫৬০। সকাল ৯টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সার্বক্ষণিকভাবে এটি চালু থাকবে।

সিরাজগঞ্জ জেলা সংবাদদাতা সৈয়দ শামীম শিরাজী জানান, এ জেলার নদী তীরবর্তী সদর, কাজিপুর, বেলকুচি, শাহজাদপুর ও চৌহালী এই ৫টি উপজেলায় ক্রমশ বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হচ্ছে। এছাড়াও অভ্যন্তরীণ নদ-নদীর পানিও বৃদ্ধি পেয়ে প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। ইতোমধ্যেই ২৫ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ২২টি শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান এবং চরাঞ্চলের প্রায় আড়াই হাজার হেক্টর জমির ফসল। বন্যার্তরা গবাদী পশু নিয়ে পড়েছে বিপাকে। এসব স্থানে বিশুদ্ধ পানির অভাব দেখা দিয়েছে, ভেঙ্গে পড়েছে স্যানিটেশন ব্যবস্থা।

গতকাল সকালে যমুনা নদীর পানি ২৪ ঘন্টায় সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে ১৪ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৪৮ এবং কাজিপুর উপজেলায় ৭ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৭০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।
এদিকে সুনামগঞ্জ জেলার বন্যা পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হলেও এ জেলার শাল্লা উপজেলার বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। এরই মধ্যে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন শত শত পরিবার। তলিয়ে গেছে নিচু এলাকার মানুষের ঘরবাড়ি। গবাদিপশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন পানিবন্দি মানুষ। উপজেলার ৪ টি ইউনিয়নের বহু গ্রামেই বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে। বানের পানিতে ভেসে গেছে অনেক মৎস্য চাষির পুকুরের মাছ।

কুড়িগ্রাম জেলা সংবাদদাতা শফিকুল ইসলাম বেবু জানান, জেলার নদ-নদীর পানি সামান্য কমলেও এখনো ব্রহ্মপুত্র ও ধরলার পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গতকাল ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে বিপদসীমার ৬৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে, নুনখাওয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ৫৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে এবং ধরলার পানি সেতু পয়েন্টে বিপদসীমার ৪৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। ঘরবাড়ি থেকে পানি নেমে না যাওয়ায় দুর্ভোগ কমেনি প্রায় দেড় লক্ষাধিক বানভাসি মানুষের। অনেকের হাতে কাজ ও ঘরে খাবার না থাকায় খেয়ে না খেয়ে দিন অতিবাহিত করছেন । সরকারিভাবে ত্রাণ তৎপরতা শুরু হলেও অনেকের ভাগ্যে তা জুটছে না।

এ বন্যায় কোনো ত্রাণ সহায়তা পেয়েছেন কি না জানতে চাইলে, যাত্রাপুর ইউনিয়নের চর যাত্রাপুর গ্রামের রহিমা বেগম ও আমিনা জানান, আমার গুলার সবার ঘরোত পানি, চকি থাকি নাইমবার পাই নাই। পানিত হাটতে হাটতে ঠেংগোত ঘাও হইছে। হ্যামরা ৪-৫ দিন থাকি কোনরহমে খ্যায়া না খ্যায়া দিন পার করবাছি বাহে। আজ পর্যন্ত কাইও আমাক কিছু দেয় নাই, কাইও খবরো নিবার আসেও নাই।

বগুড়ার ধুনটে বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতি হয়েছে। অতি বৃষ্টি ও ভারতের ঢলে উপজেলার গোসাইবাড়ি ও ভান্ডারবাড়ি ইউনিয়নে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন কয়েক হাজার মানুষ। গতকাল সারিয়াকান্দির মথুরাপাড়া পয়েন্টে সন্ধ্যা পর্যন্ত যমুনার পানি বিপদসীমার ৬৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। উপজেলার ভান্ডারবাড়ি ইউনিয়নের আটাচর, শহড়াবাড়ি, বৈশাখী-চর, শিমুলবাড়ি, কয়াগাড়ি, বানিয়াজান, ভান্ডারবাড়ি গ্রাম এবং গোসাইবাড়ি ইউনিয়নের দড়িপাড়া, আওলাকান্দী, গোদাখালী, চন্দনবাইশা গ্রাম তলিয়ে গেছে। এতে কয়েক হাজার মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছে। নষ্ট হয়েছে শত শত হেক্টর আবাদি ফসল। পরিবার ও গবাদি পশু নিয়ে বিপাকে পড়েছে এ অঞ্চলের মানুষ।
জামালপুরে বন্যার পানি ছড়িয়ে পড়েছে ৫টি উপজেলার ৩৮টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার বিস্তীর্ণ এলাকায়। প্রায় ২ লাখ মানুষ এখন পানিবন্দি। বন্যার্তরা শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকটে ভুগছে।

রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলা সংবাদদাতা মোজাম্মেল হক জানান, উপজেলার দৌলতদিয়া ঘাট পয়েন্টে ৩০ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে , যা বিপদ সীমার ৮ দশমিক ৯৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গত ২৪ ঘন্টার চেয়ে ১২ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে । ১ ও ২নং ফেরি ঘাটে নদী ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় লঞ্চ ঘাটের পল্টুনের যাত্রীদের যাতাযাতের সিড়ির মাথার দিকে ডুবে যাওয়ার কারনে বালু ভর্তি বস্তা ফেলে উঁচু করা হয়েছে। ফেরি ঘাটের পল্টুনের র‌্যাম মিড ওয়াটার থেকে হাই ওয়াটার পয়েন্টে সরানো হয়েছে।
রংপুর জেলার চরাঞ্চলে পানিতে তলিয়েছে সবজি ক্ষেতসহ ফসলি জমি। তিস্তা ব্যারেজের সবকটি গেট খুলে দেওয়ায় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় সঙ্গে সঙ্গে পানিবন্দি হয়ে আছে দুই হাজারেরও বেশি পরিবার। গেল ২৪ ঘণ্টায় রংপুরের গঙ্গাচড়া ও কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি কিছুটা কমলেও বেড়েছে ভাঙন ঝুঁকি। নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে বেশ কয়েকটি ঘরবাড়ি। নদীগর্ভের খুব কাছাকাছি থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদ ও মক্তব নিয়ে চিন্তিত স্থানীয়রা।