হাওর বার্তা ডেস্কঃ নভেল করোনাভাইরাসের বৈশ্বিক মহামারী অন্যান্য অনেক পণ্যের মতো স্বর্ণের বাজারেও টালমাটাল পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বছরের শুরুর দিকে আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্যবান ধাতুটির স্পটমূল্য বাড়তে শুরু করেছিল। এ পর্যায়ে তা আউন্সপ্রতি ১ হাজার ৭০০ ডলার ছাড়িয়ে যায়। তবে এখন স্বর্ণের স্পটমূল্য ১ হাজার ৫০০ ডলারের নিচে নেমে এসেছে। এ টালমাটাল পরিস্থিতি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে অনিশ্চয়তার জন্ম দিয়েছে। অনেকে মুদ্রা কিংবা শেয়ারবাজারের অনিশ্চয়তা এড়াতে স্বর্ণে বিনিয়োগ বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তবে অনিশ্চয়তা পিছু ছাড়েনি।
এমন পরিস্থিতিতেও উদ্বিগ্ন নন সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বিনিয়োগ ব্যাংক ইউবিএস গ্রুপের ওয়েলথ-ম্যানেজমেন্ট ইউনিটের কমোডিটি ও ফরেন এক্সচেঞ্জ শাখার নির্বাহী পরিচালক ওয়েনি গর্ডন। এ বাজার বিশ্লেষক বলছেন, স্বর্ণে বিনিয়োগের এটাই উপযুক্ত সময়। আমাকে যদি এখনই কোথাও বিনিয়োগ করতে বলা হয়, তবে আমি স্বর্ণ কিনব।
এ মন্তব্যের পেছনে জোরালো যুক্তি দিয়েছেন গর্ডন। তিনি বলেন, নভেল করোনাভাইরাস পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেবে কিছুই বলা যাচ্ছে না। এমনকি মহামারী কতদিন থাকবে, সেটাও নয়। এ পরিস্থিতিতে শেয়ার ও মুদ্রাবাজার টালমাটাল অবস্থায় থাকবে। জ্বালানি ও পণ্যবাজারসহ সামগ্রিক বৈশ্বিক অর্থনীতি স্থবির হয়ে থাকবে। মানুষ সেফ হেভেন হিসেবে স্বর্ণ কিনতে চাইবেন। ফলে দীর্ঘমেয়াদে স্বর্ণের বাজার তুলনামূলক নিরাপদ থাকবে। এখন দাম কমলেও বাড়তি চাহিদা আগামী দিনগুলোয় স্বর্ণের বাজার চাঙ্গা করতে তুলবে।
এদিকে টরেন্টোভিত্তিক স্প্রট ইনকরপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পিটার গ্রসকপ বলেন, আপত্কালীন স্বর্ণের বাজার বরাবরই ভরসার জায়গা হিসেবে চিহ্নিত হয়ে এসেছে। এখন বৈশ্বিক মহামারী চলছে। এ সময় স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগকারীদের শেষ ভরসার জায়গা হলো স্বর্ণ। তাই এটা বলা যায় স্বর্ণ কেনার এখন উপযুক্ত সময়।
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের স্পট মার্কেটে গতকাল প্রতি আউন্স স্বর্ণ ১ হাজার ৪৯৮ ডলার ৬৪ সেন্টে বিক্রি হয়েছে, যা আগের দিনের তুলনায় ১ দশমিক ৮৬ শতাংশ বেশি। অন্যদিকে ভবিষ্যৎ সরবরাহ চুক্তিতে প্রতি আউন্স স্বর্ণ বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ৪৮৮ ডলার ১০ সেন্টে, যা আগের দিনের তুলনায় দশমিক ৩৯ শতাংশ বেশি। টানা মন্দা ভাবের ধাক্কা কাটিয়ে দুদিন ধরে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে স্বর্ণের আন্তর্জাতিক বাজার। এ অবস্থা চলতে থাকলে চলতি মাসের শেষ দিকে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ১ হাজার ৫০০ ডলারের ওপরে উঠতে পারে। ব্লুমবার্গ অবলম্বনে