হাওর বার্তা ডেস্কঃ সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে একটি দুর্লভ প্রজাতির হরিয়াল পাখি উদ্ধার করা হয়েছে। শুক্রবার বিকেলে উপজেলার পোতাজিয়া মধ্য গ্রামের এরশাদ আলীর বাড়ি থেকে পাখিটি উদ্ধার করা হয়।
এরশাদ আলী বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন অমান্য করে গত ৩ মাস ধরে পাখিটিকে গাছ থেকে ধরে খাঁচাবন্দী করে রেখে ছিলেন।
খবর পেয়ে দি বার্ড সেফটি হাউজের চেয়ারম্যান মামুন বিশ্বাস ও আজম আলী ঘটনাস্থল থেকে হরিয়াল পাখিটিকে উদ্ধার করে।
এ বিষয়ে দি বার্ড সেফটি হাউজের চেয়ারম্যান মামুন বিশ্বাস জানান, হরিয়াল পাখিটি যাতে উড়ে যেতে না পারে সে জন্য এরশাদ আলী পাখিটির ডানার পালক কেটে ফেলেছে। ফলে পাখিটি আর আগের মত ভালোভাবে উড়তে পারছে না।
তিনি বলেন, পাখিটি দীর্ঘদিন ধরে খাঁচাবন্দী থাকায় বেশ অসুস্থ হয়ে পড়েছে। এটি উদ্ধারের পর এর চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। আশা করছি দ্রুতই সুস্থ হয়ে পাখিটি বনে ফিরে যেতে পারবে।
তিনি আরও জানান, হরিয়াল পাখি মূলত কবুতর প্রণালির ফল ভক্ষক বৃক্ষচারী পাখি। এর মাংস অত্যন্ত সুস্বাদু। এর গলা, পাখা ও লেজের পালক ঝকঝকে সোনালি রঙের পা দুটোও সোনালি। মাথা ও পেটের রিচের অংশ ধূসর রঙের। শান্ত প্রকৃতির দৃষ্টিনন্দন পাখিটি সহজে সবার নজর কাড়ে। এটা দেখতে অনেকটা ঘুঘু ও কবুতরের মতো। আকারও অনেকটা সেরকমই। এক সময় দেশের চিরহরিৎ বনাঞ্চলে এ পাখি প্রচুর দেখা যেত।
এ ছাড়া শাহজাদপুরসহ চলনবিল অঞ্চলেও এর বিচরণ ছিল লাখ করার মতো। এখন পাখি শিকারিদের উৎপাত ও আবাসস্থল সংকটের কারণে এর বংশবিস্তার বহুলাংশে কমে গেছে। তাই এই নজরকাড়া পাখিটিকে খুব একটা দেখা যায় না।
পাখিটি অনেকটাই বিলুপ্তির পথে। তাই প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় এ পাখিটি সংরক্ষণ খুবই জরুরি হয়ে পড়েছে। ফলে দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে পাখিটি উদ্ধার করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বিশ্বে ২৩ প্রজাতির হরিয়াল পাখি রয়েছে। আমাদের দেশেও বেশ কয়েক প্রকারের হরিয়াল পাখি দেখতে পাওয়া যায়।
তিনি বলেন, এরই মধ্যে রাজশাহী বিভাগীয় বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের পরিচালক এ.এস.এম জহির উদ্দিন আকন্দের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই পাখিটিকে সংরক্ষণের জন্য তার কাছে হস্তান্তর করা হবে। এ ছাড়া পাখিটি পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠলে নিরাপদ অভয়াশ্রম অবমুক্ত করা হবে।