হাওর বার্তা ডেস্কঃ ওয়ানেডে নেতৃত্ব তামিম ইকবালের কাছে নতুন নয়। তবে দীর্ঘ পরিসরে পেলেন এবারই। মাশরাফি বিন মুর্তজার উত্তরসূরি তামিম কতোটা সফল হন, তা দেখতে মুখিয়ে সবাই। মাশরাফির অধীনে ৮৮ ওয়ানডেতে বাংলাদেশের জয় ৫০টি। তামিম কি পারবেন তার জায়গা পূরণ করতে? বাঁহাতি এই ওপেনার সময় চেয়ে নিয়েছেন ভক্তদের কাছ থেকে। তিনি জানিয়েছেন, ব্যর্থ হলে নিজেই সরে দাঁড়াবেন।
গত ফেব্রুয়ারিতেই জানা গিয়েছিল জিম্বাবুয়ে সিরিজ দিয়ে শেষ হচ্ছে ‘অধিনায়ক মাশরাফি’ অধ্যায়। এরপর গুঞ্জন উঠে কে হবেন নতুন অধিনায়ক- মুশফিকুর রহীম, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ নাকি তামিম ইকবাল? মাহমুদুল্লাহ টি-টোয়েন্টির দায়িত্বে থাকায় তার ওপর বাড়তি চাপ দিতে চায়নি বিসিবি। মুশফিকুর নাকি ইচ্ছুক ছিলেন না।
আর সাকিব আল হাসান যেহেতু নিষেধাজ্ঞায়, সব দিক বিবেচনায় তামিমকেই বেছে নেয় বোর্ড। ৮ই মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন অধিনায়ক হিসেবে তামিমের নাম ঘোষণা করেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন।
একদিনের ক্রিকেটে মাত্র ৩ ম্যাচে অধিনায়কত্বের অভিজ্ঞতা তামিমের। সেটি সবশেষ শ্রীলঙ্কা সফরে। ২০১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপের পরপরই অনুষ্ঠিত সে সিরিজে বিশ্রামে ছিলেন নিয়মিত অধিনায়ক মাশরাফি। দায়িত্ব দিয়ে পাঠানো তামিমকে। সিরিজে তামিম খুব খারাপ খেলেছিলেন। দলও ফিরেছিল হোয়াইটওয়াশ হয়ে। হঠাৎ করে ব্যাটিংয়ের সঙ্গে দল পরিচালানার কাজ ঠিক যেন বুঝে উঠতে পারেননি তামিম। নতুন অধিনায়কের এমন মানসিক চাপ থাকে। যেমনটি দেখা গেছে টেস্ট অধিনায়ক মুমিনুল হকের ক্ষেত্রেও। মুমিনুলের প্রথম অ্যাসাইনমেন্টই ছিল ভারতের মতো দলের বিপক্ষে। দ্বিতীয় পরীক্ষা পাকিস্তানের মাটিতে। নিজের প্রথম তিন টেস্টে মুমিনুল হেরেছেন ইনিংস ব্যবধানে। নিজেও ব্যাট হাতে সুবিধা করতে পারেননি। ঘরের মাঠে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টে মুমিনুল ও তার দল চমৎকার খেলেছে। আত্মবিশ্বাস ফিরে পাওয়ার লক্ষণ বলা যায় একে।
তামিম প্রথম দিকে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারেন। যদি শেষতক পাকিস্তান সফরে যায় বাংলাদেশ তবে অধিনায়ক হিসেবে প্রথম ম্যাচটা তিনি খেলবেন সেখানেই। এরপর মে মাসে ইংল্যান্ডের মাটিতে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ। আসন্ন সিরিজগুলোতে ক্যাপ্টেনের আর্মব্যান্ড পরে নামতে মুখিয়ে আছেন তামিম। গতকাল বিসিবি একাডেমি মাঠে অনুশীনে এসে তিনি বলেন, ‘‘আমি আপাতত এটাই সবাইকে বলতে পারি, আমার এ ক্ষেত্রে একটু ধৈর্য রাখেন। নিজের ব্যাটিংয়ে এক সিরিজ, দুই সিরিজ বা ৫টা ব্যর্থতা, এটা হতেই পারে। আশা করি হবে না। অধৈর্য হবো না, আপনারাও হবেন না। দর্শকদেরও একই অনুরোধ করবো। চেষ্টা করবো যেন, তাড়াতাড়ি ঠিক হয়ে যায়। আর যদি কোনো কারণে কোনো সময়- সেটা ৬ মাস হোক বা ১ বছর, আমার যদি মনে হয় আমি দলের সঙ্গে সুবিচার করছি না, তাহলে আমিই হব প্রথমজন যে সরে দাঁড়ানোর কথা বলবে। আমিই সবার আগে হাত তুলে বলবো “সরি”।’
করোনা ঝুঁকি এড়াতে করমর্দন এড়িয়ে চলছে সবাই। গতকাল বিসিবি একাডেমি মাঠে অনুশীলনে এসে তামিমও এড়িয়ে গেলেন হ্যান্ডশেক। তবে কনুইমর্দন করেছেন কোচ ও সতীর্থদের সঙ্গে। এ পদ্ধতি নিয়ে তামিম বলেন, ‘যত কম করা যায় (করমর্দন)। আমাদের সংস্কৃতিতে হাত না মেলানো হয়তো অনেকে পছন্দ করবে না। তবে পরিস্থিতি এমনই, হ্যান্ডশেকের বিকল্প কিছু করতেই হবে। এলবো শেক বা কনুই মেলানো সেরকম একটা কিছু হতে পারে।’
করোনা ঝুঁকির ভেতরেই ঢাকা লীগ খেলতে নামছেন তামিমরা। প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবের তারকা তামিম বলেন, আমরা সবাই এটা নিয়ে উদ্বিগ্ন। এই কঠিন পরিস্থিতি থেকে পুরো বিশ্ব যত দ্রুত বেরিয়ে আসতে পারে, সেটাই মঙ্গল। বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনে একটা একটা করে খেলা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। যারা দায়িত্বে আছেন তারা নিশ্চয়ই অনেক চিন্তাভাবনা করে সঠিক সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। আপাতত আমাদের বলা হয়েছে খেলতে। আমরা খেলার জন্য প্রস্তুত। সামনে যে সিদ্ধান্তই আসবে, আমরা সেটি মেনে চলবো।