উপবৃত্তির টাকায় বিষপান, একসঙ্গে প্রেমিক-প্রেমিকার মৃত্যু

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বিয়েতে পরিবারের অসম্মতি থাকায় একসঙ্গে বিষপান করে প্রেমিক-প্রেমিকা। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল তারা। বৃহস্পতিবার রাতে বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় প্রেমিকা পূজা বৈরাগীর (১৫)। মৃত্যুর খবর পায় প্রেমিক প্রকাশ বিশ্বাস (১৭)। অবশেষে পরপারে চলে গেল প্রকাশও।

শনিবার (১৪ মার্চ) বেলা ১১টার দিকে বরিশাল নগরীর রাহাত আনোয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় প্রেমিক প্রকাশ বিশ্বাসের মৃত্যু হয়। প্রকাশ বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার রত্নপুর ইউনিয়নের বারপাইকা গ্রামের পরিমল বিশ্বাসের ছেলে। পূজা উপজেলার একই ইউনিয়নের মোহনকাঠি গ্রামের হীরা লাল বৈরাগীর মেয়ে ও মোহনকাঠি স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্রী ছিল।

স্থানীয়রা জানায়, প্রকাশ বিশ্বাসের সঙ্গে পূজা বৈরাগীর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। উভয় পরিবারকে বিষয়টি জানালে তাদের সম্পর্ক মানতে অস্বীকৃতি জানায় পরিবার। ফলে সোমবার (০৯ মার্চ) সকালে উজিরপুর উপজেলার ভাউধর গ্রামে প্রেমিক প্রকাশের মামা নিহার বাড়ৈর বাড়িতে যায় প্রকাশ ও পূজা। সেখানে দুপুরে একসঙ্গে বিষপান করে তারা। তাদের উদ্ধার করে আগৈলঝাড়া উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করেন স্বজনরা। অবস্থার অবনতি হলে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয় তাদের।

আগৈলঝাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক বখতিয়ার আল মামুন বলেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তিনদিন চিকিৎসাধীন ছিল প্রকাশ ও পূজা। এরপর উন্নত চিকিৎসার জন্য বৃহস্পতিবার তাদের বরিশাল মেডিকেলে পাঠানো হয়।

বৃহস্পতিবার রাতে মেডিকেলের মেডিসিন ইউনিট-৩ এ চিকিৎসাধীন অবস্থায় প্রকাশ বিশ্বাস চিকিৎসকদের জানায়, পূজার সঙ্গে তার দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক। তারা বিয়ে করতে চায়। কিন্তু পূজা ও তার পরিবার দুজনের বয়সের কারণে বিয়েতে রাজি হয়নি। কিন্তু পূজা তাকে বিয়ের জন্য চাপ দিচ্ছিল। ৯ মার্চ পূজা স্কুল থেকে উপবৃত্তির টাকা উত্তোলন করে। এরপর আমাকে বিয়ে করতে বলে। কিন্তু পূজার বয়স কম হাওয়ায় আমি রাজি হইনি। আমি জানতাম এ বিয়ে পূজা ও আমার পরিবার মেনে নেবে না। এরপর পূজা উপবৃত্তির টাকা দিয়ে বিষ কেনে। পরে দুজন উজিরপুর ভাউধর গ্রামে আমার মামা নিহার বাড়ৈর বাড়িতে যাই। সেখানে বেলা দেড়টার দিকে প্রথমে বিষপান করে পূজা। এরপর আমিও বিষপান করি। ওই পরিবারের সদস্যরা আমাদের উদ্ধার করে আগৈলঝাড়া হাসপাতালে ভর্তি করেন।

কোতোয়ালি থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) নাজমুল হুদা বলেন, বৃহস্পতিবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় পূজার মৃত্যু হয়। অবস্থার অবনতি হলে প্রকাশকে মেডিকেল থেকে নগরীর রাহাত আনোয়ার হাসপাতালে ভর্তি করেন স্বজনরা। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার বেলা ১১টার দিকে প্রকাশের মৃত্যু হয়। প্রকাশ ও পূজার মরদেহ মর্গে রয়েছে।

আগৈলঝাড়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আফজাল হোসেন বলেন, পূজার মৃত্যুর খবর আগেই পেয়েছিলাম। শনিবার দুপুরে প্রকাশের মৃত্যুর খবর শুনেছি। তবে তাদের মরদেহ গ্রামের বাড়িতে আনা হয়নি।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর