ঢাকা ০২:৫৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

করোনা প্রতিরোধে স্যানিটাইজারের চেয়ে সাবানই ভালো

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০২:৩৬:৫৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ মার্চ ২০২০
  • ২০৭ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া মহামারী করোনাভাইরাস আতঙ্কে কাঁপছে পুরো বিশ্ব। তাই এ থেকে পরিত্রাণের উপায় খুঁজছেন সবাই। সংক্রমণ এড়াতে হাত পরিষ্কার রাখার পরামর্শ দিয়েছেন গবেষকরা।
এই পরিস্থিতিতে অনেকেই হ্যান্ড স্যানিটাইজারের দিকে হন্যে হয়ে ছুটছেন। বর্তমানে অবস্থা এমন হয়ে দাঁড়িয়েছে যে, হ্যান্ড স্যানিটাইজার পাওয়া সোনার হরিণ পাওয়ারই সমতুল্য! আর পেলেও আকাশচুম্বী দাম। এ পরিস্থিতিতে বিজ্ঞানী ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা বলছেন, করোনাভাইরাস দমনে সাবানই যথেষ্ট।

গত রোববার দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত তিনজন রোগী শনাক্ত করা হয়। এরপর থেকেই হ্যান্ড স্যানিটাইজার কিনতে তোড়জোড় শুরু করে সাধারণ মানুষ। সরকারের ঔষধ প্রশাসন অধিদফতর বাধ্য হয়ে এর দাম নির্ধারণ করে দিয়ে বলেছে, বেশি দামে বিক্রি করা যাবে না।

এদিকে সাধারণ মানুষ হ্যান্ড স্যানিটাইজার খুব বেশি ব্যবহারে অভ্যস্ত নন। হ্যান্ড স্যানিটাইজারে রাসায়নিকের সঙ্গে অ্যালকোহলও থাকে। এ কারণে তালুতে ঢেলে ঘষলেই কিছুক্ষণ পর তা শুকিয়ে যায়। হাত জীবাণুমুক্ত করার জন্য মূলত চিকিৎসকেরাই এটা নিয়মিত ব্যবহার করেন। যারা পরীক্ষাগারে কাজ করেন, নার্সসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীরাও ব্যবহার করেন। এছাড়া বিশেষ প্রয়োজনে অনেকেই ব্যবহার করে থাকেন।

করোনাভাইরাস প্রতিরোধে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ অন্যান্যরা বলছেন, হাতে নোংরা দৃশ্যমান হলে সাবান-পানি দিয়ে ধুতে হবে। হাতের নোংরা দৃশ্যমান না হলে অ্যালকোহলসমৃদ্ধ হ্যান্ড রাব (হ্যান্ড স্যানিটাইজার) অথবা সাবান-পানি দিয়ে বারবার হাত ধুতে হবে।

এরপর থেকেই করোনাভাইরাস প্রতিরোধে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহারের প্রতি সবার ঝোঁক শুরু হয়। তবে বিশেষজ্ঞারা বলছেন, হ্যান্ড স্যানিটাইজারের জন্য হাপিত্যেশ করার প্রয়োজন নেই। সাবানই যথেষ্ট। সাশ্রয়ী হওয়ার পাশাপাশি দেশের সব জায়গায় পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মোশতাক আহমেদ বলেন, করোনাভাইরাসের ওপরের আবরণ চর্বি (লিপিড) দিয়ে তৈরি। সাবানে রয়েছে ক্ষার। চর্বি যখন ক্ষারের সংস্পর্শে আসে, তখন চর্বি ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যায়। সাবানের সংস্পর্শে আসার সঙ্গে সঙ্গে করোনাভাইরাসের ওপরের আবরণ নষ্ট হয়ে যায়, ভাইরাসও মরে যায়। সাবানে ক্ষার যত বেশি থাকে, ভাইরাস তত দ্রুত মরে। সেজন্য কাপড় কাচা সাবানই এ ক্ষেত্রে শ্রেয়।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের রোগনিয়ন্ত্রণ বিষয়ক প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) এর মতে, কিছু জীবাণু মারতে হ্যান্ড স্যানিটাইজারের চেয়ে সাবান–পানি বেশি কার্যকর। হ্যান্ড স্যানিটাইজার জীবাণুর পরিমাণ হয়তো কমিয়ে আনতে পারে। তবে কিছু ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ মারতে সক্ষম হয় না।

এছাড়া অস্ট্রেলিয়ার সিডনির নিউ সাউথ ওয়েলস বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক প্যালি থোরডার্সন বলেন, করোনাভাইরাস থেকে বাঁচতে স্যানিটাইজার কিংবা দামি লিকুইড সাবান ব্যবহার করা জরুরি নয়। সাধারণ সাবান দিয়ে হাত ধুলেই ভাইরাস মোকাবিলা করা যাবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

করোনা প্রতিরোধে স্যানিটাইজারের চেয়ে সাবানই ভালো

আপডেট টাইম : ০২:৩৬:৫৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ মার্চ ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া মহামারী করোনাভাইরাস আতঙ্কে কাঁপছে পুরো বিশ্ব। তাই এ থেকে পরিত্রাণের উপায় খুঁজছেন সবাই। সংক্রমণ এড়াতে হাত পরিষ্কার রাখার পরামর্শ দিয়েছেন গবেষকরা।
এই পরিস্থিতিতে অনেকেই হ্যান্ড স্যানিটাইজারের দিকে হন্যে হয়ে ছুটছেন। বর্তমানে অবস্থা এমন হয়ে দাঁড়িয়েছে যে, হ্যান্ড স্যানিটাইজার পাওয়া সোনার হরিণ পাওয়ারই সমতুল্য! আর পেলেও আকাশচুম্বী দাম। এ পরিস্থিতিতে বিজ্ঞানী ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা বলছেন, করোনাভাইরাস দমনে সাবানই যথেষ্ট।

গত রোববার দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত তিনজন রোগী শনাক্ত করা হয়। এরপর থেকেই হ্যান্ড স্যানিটাইজার কিনতে তোড়জোড় শুরু করে সাধারণ মানুষ। সরকারের ঔষধ প্রশাসন অধিদফতর বাধ্য হয়ে এর দাম নির্ধারণ করে দিয়ে বলেছে, বেশি দামে বিক্রি করা যাবে না।

এদিকে সাধারণ মানুষ হ্যান্ড স্যানিটাইজার খুব বেশি ব্যবহারে অভ্যস্ত নন। হ্যান্ড স্যানিটাইজারে রাসায়নিকের সঙ্গে অ্যালকোহলও থাকে। এ কারণে তালুতে ঢেলে ঘষলেই কিছুক্ষণ পর তা শুকিয়ে যায়। হাত জীবাণুমুক্ত করার জন্য মূলত চিকিৎসকেরাই এটা নিয়মিত ব্যবহার করেন। যারা পরীক্ষাগারে কাজ করেন, নার্সসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীরাও ব্যবহার করেন। এছাড়া বিশেষ প্রয়োজনে অনেকেই ব্যবহার করে থাকেন।

করোনাভাইরাস প্রতিরোধে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ অন্যান্যরা বলছেন, হাতে নোংরা দৃশ্যমান হলে সাবান-পানি দিয়ে ধুতে হবে। হাতের নোংরা দৃশ্যমান না হলে অ্যালকোহলসমৃদ্ধ হ্যান্ড রাব (হ্যান্ড স্যানিটাইজার) অথবা সাবান-পানি দিয়ে বারবার হাত ধুতে হবে।

এরপর থেকেই করোনাভাইরাস প্রতিরোধে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহারের প্রতি সবার ঝোঁক শুরু হয়। তবে বিশেষজ্ঞারা বলছেন, হ্যান্ড স্যানিটাইজারের জন্য হাপিত্যেশ করার প্রয়োজন নেই। সাবানই যথেষ্ট। সাশ্রয়ী হওয়ার পাশাপাশি দেশের সব জায়গায় পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মোশতাক আহমেদ বলেন, করোনাভাইরাসের ওপরের আবরণ চর্বি (লিপিড) দিয়ে তৈরি। সাবানে রয়েছে ক্ষার। চর্বি যখন ক্ষারের সংস্পর্শে আসে, তখন চর্বি ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যায়। সাবানের সংস্পর্শে আসার সঙ্গে সঙ্গে করোনাভাইরাসের ওপরের আবরণ নষ্ট হয়ে যায়, ভাইরাসও মরে যায়। সাবানে ক্ষার যত বেশি থাকে, ভাইরাস তত দ্রুত মরে। সেজন্য কাপড় কাচা সাবানই এ ক্ষেত্রে শ্রেয়।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের রোগনিয়ন্ত্রণ বিষয়ক প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) এর মতে, কিছু জীবাণু মারতে হ্যান্ড স্যানিটাইজারের চেয়ে সাবান–পানি বেশি কার্যকর। হ্যান্ড স্যানিটাইজার জীবাণুর পরিমাণ হয়তো কমিয়ে আনতে পারে। তবে কিছু ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ মারতে সক্ষম হয় না।

এছাড়া অস্ট্রেলিয়ার সিডনির নিউ সাউথ ওয়েলস বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক প্যালি থোরডার্সন বলেন, করোনাভাইরাস থেকে বাঁচতে স্যানিটাইজার কিংবা দামি লিকুইড সাবান ব্যবহার করা জরুরি নয়। সাধারণ সাবান দিয়ে হাত ধুলেই ভাইরাস মোকাবিলা করা যাবে।