ঢাকা ০৭:৫৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১২ জানুয়ারী ২০২৫, ২৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

প্রতিদিন পাখিদের মিলনমেলা বসে রোটক কড়ইয়ে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৩:৩৪:৫৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ৯ মার্চ ২০২০
  • ২১৩ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ এক, দুই, তিন… এভাবে গুনতে গুনতে সারাদিন কেটে যাবে। তবুও গুনে শেষ করা যাবে না। মৌখিকভাবে স্বীকৃত যে, প্রতিদিন হাজারখানেক পাখি গাছটিতে বসেন। গাছের বয়সও কিন্তু কম নয়, চারশ’ বছরের বেশি। বলা হয়ে থাকে, বাংলার প্রথম রাজা শের শাহের আমলে গাছটি লাগানো হয়েছে। সেই থেকে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে একই দৃশ্যের দেখা মিলছে।

ফেনী শহর-সোনাগাজী সড়ক দিয়ে গেলেই গাছটির দেখা মিলবে। আরো সহজভাবে বললে, দাউদপুর ব্রিজের কাছে গেলেই প্রায় ৪০০ বছরের রোটক কড়ই গাছটির দেখা মিলবে। সন্ধ্যা হলে এখানে নানা জাতের পাখ-পাখালিতে মিলনমেলা তৈরি হয়। মধ্যরাত পর্যন্ত তাদের কিচির-মিচির শুনে মুগ্ধ হন আশপাশের লোকজন।

লোকমুখে চারশ’ বছর বলা হলেও গাছটি কত কাল ধরে এভাবে দাঁড়িয়ে আছে তার সঠিক ইতিহাস এ জনপদের কেউ জানেন না। ৮০ বছর ধরে গাছটি দেখে আসছেন কাজী এহসান। তিনি বলেন, ছোটবেলায় গাছটির নিচে খেলাধুলা করতাম। এখন বিকেল বেলায় আড্ডা দেই। শুধু আমরা নয়, গছটি নিয়ে দাদা-নানারাও অনেক কিচ্ছা কাহিনী শুনাতেন আমাদেরকে।

পাখি ছাড়া গাছটিকে আমরা কখনও দেখিনি। প্রতিদিন শত শত পাখি গাছটিতে বসে। রাতও কাটায় অনেক পাখি। এসব দেখতে আমাদের ভালো লাগে। গাছটি কাটারও চেষ্টা করা হয়েছিল অনেকবার। কিন্তু আমরা দেইনি। এটা এখন আমাদের ঐতিহ্যের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। কথাগুলো তুলাবাড়িয়ার গ্রামের কনক কর্মকারের। ৪৮ বছরের এ যুবক জানান, একসময় ভয়ে কোনো মানুষ গাছটির আসতে সাহস পেত না।

বাংলা সাহিত্যের অমীয় কবি ও দার্শনিক নবীন চন্দ্র সেনও এ গাছ দেখে মুগ্ধ হতেন। তিনি এ গাছের নিচে বসে কবিতা লিখতেন। একা একা বসে থেকে ভাবনার রাজ্যে হারিয়ে যেতেন। এমন কথাও প্রচলিত আছে ফেনীজুড়ে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

প্রতিদিন পাখিদের মিলনমেলা বসে রোটক কড়ইয়ে

আপডেট টাইম : ০৩:৩৪:৫৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ৯ মার্চ ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ এক, দুই, তিন… এভাবে গুনতে গুনতে সারাদিন কেটে যাবে। তবুও গুনে শেষ করা যাবে না। মৌখিকভাবে স্বীকৃত যে, প্রতিদিন হাজারখানেক পাখি গাছটিতে বসেন। গাছের বয়সও কিন্তু কম নয়, চারশ’ বছরের বেশি। বলা হয়ে থাকে, বাংলার প্রথম রাজা শের শাহের আমলে গাছটি লাগানো হয়েছে। সেই থেকে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে একই দৃশ্যের দেখা মিলছে।

ফেনী শহর-সোনাগাজী সড়ক দিয়ে গেলেই গাছটির দেখা মিলবে। আরো সহজভাবে বললে, দাউদপুর ব্রিজের কাছে গেলেই প্রায় ৪০০ বছরের রোটক কড়ই গাছটির দেখা মিলবে। সন্ধ্যা হলে এখানে নানা জাতের পাখ-পাখালিতে মিলনমেলা তৈরি হয়। মধ্যরাত পর্যন্ত তাদের কিচির-মিচির শুনে মুগ্ধ হন আশপাশের লোকজন।

লোকমুখে চারশ’ বছর বলা হলেও গাছটি কত কাল ধরে এভাবে দাঁড়িয়ে আছে তার সঠিক ইতিহাস এ জনপদের কেউ জানেন না। ৮০ বছর ধরে গাছটি দেখে আসছেন কাজী এহসান। তিনি বলেন, ছোটবেলায় গাছটির নিচে খেলাধুলা করতাম। এখন বিকেল বেলায় আড্ডা দেই। শুধু আমরা নয়, গছটি নিয়ে দাদা-নানারাও অনেক কিচ্ছা কাহিনী শুনাতেন আমাদেরকে।

পাখি ছাড়া গাছটিকে আমরা কখনও দেখিনি। প্রতিদিন শত শত পাখি গাছটিতে বসে। রাতও কাটায় অনেক পাখি। এসব দেখতে আমাদের ভালো লাগে। গাছটি কাটারও চেষ্টা করা হয়েছিল অনেকবার। কিন্তু আমরা দেইনি। এটা এখন আমাদের ঐতিহ্যের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। কথাগুলো তুলাবাড়িয়ার গ্রামের কনক কর্মকারের। ৪৮ বছরের এ যুবক জানান, একসময় ভয়ে কোনো মানুষ গাছটির আসতে সাহস পেত না।

বাংলা সাহিত্যের অমীয় কবি ও দার্শনিক নবীন চন্দ্র সেনও এ গাছ দেখে মুগ্ধ হতেন। তিনি এ গাছের নিচে বসে কবিতা লিখতেন। একা একা বসে থেকে ভাবনার রাজ্যে হারিয়ে যেতেন। এমন কথাও প্রচলিত আছে ফেনীজুড়ে।