ঢাকা ১১:৫৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নবীর শোকে ‘ইয়াসুফে’র আত্মদান

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:০৩:২৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১ মার্চ ২০২০
  • ২৬১ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ আম্বিয়া কেরামের চিরন্তন নিদর্শনাবলীর মধ্যে তাঁদের প্রতি আল্লাহর পক্ষ হতে নাজিলকৃত কিতাবাদি ও সহিফাগুলোর সঠিক সংখ্যা আল্লাহ তাআলাই ভালো জানেন। কোরআনে বর্ণিত নবীগণের নাম ও তাদের প্রতি অবতীর্ণ কিতাবগুলোর মধ্যে তাওরাত, যাবুর ও ইঞ্জিলের নাম বার বার উচ্চারিত হয়েছে। কিন্তু সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ নবী রাসূল হজরত মোহাম্মদ (সা.)-এর প্রতি অবতীর্ণ সর্বশেষ আল্লাহর কালাম আল কোরআন বিশ^ মানবের চিরন্তন জীবনবিধান হিসেবে কেয়ামত পর্যন্ত অবিকল, অক্ষুন্ন থাকবে।

এ পটভ‚মিকার আলোকে বলা যায়, শেষ নবী ব্যতীত তাদের কোনো প্রতীক, নিদর্শণ, নাম ও তওহীদের বাণী ছাড়া আর কিছুই অবশিষ্ট নেই। বাহ্যত; কিছু নবীর কবরের স্থান জানা যায়, তবে তাদের সময় কালে যেসব জন্তু, পাখ-পাখালী যথা- বিহঙ্গক‚লের অস্তিত্ব বিদ্যমান ছিল, তাতে তেমন পরিবর্তন ঘটেনি। সেগুলোকে আগেকার নবীগণের প্রতীক বা নিদর্শণ গণ্য করা হলে তা ভিন্ন বিষয়, এ প্রাকৃতিক সৃষ্টির অন্ত নেই।

পশুক‚লের মধ্যে অনেক পশু রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর সাথে কথা বলেছে, তাদের অভিযোগ পেশ করেছে এবং তাকে আল্লাহর প্রেরিত রাসূল বলে সাক্ষ্য দিয়েছে। এসব ঘটনাকে হুজুর (সা.)-এর মোজেযা বা অলৌকিক ঘটনাবলির অন্তর্ভুক্ত করা হয়। কিন্তু কোনো পশু রাসূল (সা.)-এর প্রেমে আত্মদান করেছে বলে জানা যায় না।

অথচ, রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর উপহার হিসেবে প্রাপ্ত একটি ঘোড়া তাঁর খাদেম রূপে, তাঁর ফর্মাবরদারী বা নির্দেশাবলী পালন করেছিল বলেও উল্লেখিত হয়েছে। ‘ইয়াসুফ’ নামক ঘোড়াটি হুজুর (সা.)-এর প্রতি এতই আসক্ত ছিল যে, তাঁর ওফাতের ঘটনাটি এ রাসূল প্রেমিক পশু সহ্য করতে পারেনি, সে আত্মহত্যা করে রাসূল প্রেমের যে পরিচয় দিয়েছে বলে বর্ণিত হয়ে থাকে তা এক অস্বাভাবিক ঘটনা।

এ ঘটনার পাশাপাশি যখন মহানবী (সা.)-এর প্রতি মানবপ্রেমের বিষয়টি তুলনা করা হয়, তখন নবীদ্রোহিতার বিষয়গুলো সামনে এসে যায় এবং এ শ্রেণীর লোকেদের পশুর চেয়ে অধম বলতে দ্বিধা থাকে না। এ পশু শ্রেণীর লোক দুনিয়ার সর্বত্র বিদ্যমান, অহরহ দেখা যাচ্ছে, দুনিয়ার কোনো না কোনো স্থানে মহানবী (সা.)-এর কুৎসা রটানো, তাঁর প্রতি বিদ্রুপ করা, তাঁর পূতপবিত্র চরিত্রে কলংক লেপনের মতো ধৃষ্টতা এবং কার্টুন একে তাঁর অবমাননাকর আচরণ ইত্যাদি নানা অপকর্ম সাম্প্রতিক কালের জঘন্য আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রে পরিণত হয়েছে।

মুসলমানদের মনে আঘাত দিয়ে তাদেরকে উত্তেজিত করার এ অপকৌশল থেমে নেই। আশেকে রাসূল ও নবী প্রেমিক মুসলমানগণ রাসূল (সা.) দ্রোহীগণের অপতৎপরতা সম্পর্কে সম্যক ওয়াকেফহাল। রসূল (সা.) প্রেমে সিক্ত ‘ইয়াসুফ’ ঘোড়ার আত্মত্যাগের ঘটনা তাদের সামনে। ‘ইয়াসুফ’-এর মতো পশু যেখানে রাসূল (সা.)-এর ওফাতের শোকে প্রাণ উৎসর্গ করতে পারে, সেখানে রাসূল (সা.)-এর অবমাননায় আশেকানে রাসূল (সা.) কি নিশ্চুপ থাকতে পারে?

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

নবীর শোকে ‘ইয়াসুফে’র আত্মদান

আপডেট টাইম : ১১:০৩:২৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১ মার্চ ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ আম্বিয়া কেরামের চিরন্তন নিদর্শনাবলীর মধ্যে তাঁদের প্রতি আল্লাহর পক্ষ হতে নাজিলকৃত কিতাবাদি ও সহিফাগুলোর সঠিক সংখ্যা আল্লাহ তাআলাই ভালো জানেন। কোরআনে বর্ণিত নবীগণের নাম ও তাদের প্রতি অবতীর্ণ কিতাবগুলোর মধ্যে তাওরাত, যাবুর ও ইঞ্জিলের নাম বার বার উচ্চারিত হয়েছে। কিন্তু সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ নবী রাসূল হজরত মোহাম্মদ (সা.)-এর প্রতি অবতীর্ণ সর্বশেষ আল্লাহর কালাম আল কোরআন বিশ^ মানবের চিরন্তন জীবনবিধান হিসেবে কেয়ামত পর্যন্ত অবিকল, অক্ষুন্ন থাকবে।

এ পটভ‚মিকার আলোকে বলা যায়, শেষ নবী ব্যতীত তাদের কোনো প্রতীক, নিদর্শণ, নাম ও তওহীদের বাণী ছাড়া আর কিছুই অবশিষ্ট নেই। বাহ্যত; কিছু নবীর কবরের স্থান জানা যায়, তবে তাদের সময় কালে যেসব জন্তু, পাখ-পাখালী যথা- বিহঙ্গক‚লের অস্তিত্ব বিদ্যমান ছিল, তাতে তেমন পরিবর্তন ঘটেনি। সেগুলোকে আগেকার নবীগণের প্রতীক বা নিদর্শণ গণ্য করা হলে তা ভিন্ন বিষয়, এ প্রাকৃতিক সৃষ্টির অন্ত নেই।

পশুক‚লের মধ্যে অনেক পশু রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর সাথে কথা বলেছে, তাদের অভিযোগ পেশ করেছে এবং তাকে আল্লাহর প্রেরিত রাসূল বলে সাক্ষ্য দিয়েছে। এসব ঘটনাকে হুজুর (সা.)-এর মোজেযা বা অলৌকিক ঘটনাবলির অন্তর্ভুক্ত করা হয়। কিন্তু কোনো পশু রাসূল (সা.)-এর প্রেমে আত্মদান করেছে বলে জানা যায় না।

অথচ, রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর উপহার হিসেবে প্রাপ্ত একটি ঘোড়া তাঁর খাদেম রূপে, তাঁর ফর্মাবরদারী বা নির্দেশাবলী পালন করেছিল বলেও উল্লেখিত হয়েছে। ‘ইয়াসুফ’ নামক ঘোড়াটি হুজুর (সা.)-এর প্রতি এতই আসক্ত ছিল যে, তাঁর ওফাতের ঘটনাটি এ রাসূল প্রেমিক পশু সহ্য করতে পারেনি, সে আত্মহত্যা করে রাসূল প্রেমের যে পরিচয় দিয়েছে বলে বর্ণিত হয়ে থাকে তা এক অস্বাভাবিক ঘটনা।

এ ঘটনার পাশাপাশি যখন মহানবী (সা.)-এর প্রতি মানবপ্রেমের বিষয়টি তুলনা করা হয়, তখন নবীদ্রোহিতার বিষয়গুলো সামনে এসে যায় এবং এ শ্রেণীর লোকেদের পশুর চেয়ে অধম বলতে দ্বিধা থাকে না। এ পশু শ্রেণীর লোক দুনিয়ার সর্বত্র বিদ্যমান, অহরহ দেখা যাচ্ছে, দুনিয়ার কোনো না কোনো স্থানে মহানবী (সা.)-এর কুৎসা রটানো, তাঁর প্রতি বিদ্রুপ করা, তাঁর পূতপবিত্র চরিত্রে কলংক লেপনের মতো ধৃষ্টতা এবং কার্টুন একে তাঁর অবমাননাকর আচরণ ইত্যাদি নানা অপকর্ম সাম্প্রতিক কালের জঘন্য আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রে পরিণত হয়েছে।

মুসলমানদের মনে আঘাত দিয়ে তাদেরকে উত্তেজিত করার এ অপকৌশল থেমে নেই। আশেকে রাসূল ও নবী প্রেমিক মুসলমানগণ রাসূল (সা.) দ্রোহীগণের অপতৎপরতা সম্পর্কে সম্যক ওয়াকেফহাল। রসূল (সা.) প্রেমে সিক্ত ‘ইয়াসুফ’ ঘোড়ার আত্মত্যাগের ঘটনা তাদের সামনে। ‘ইয়াসুফ’-এর মতো পশু যেখানে রাসূল (সা.)-এর ওফাতের শোকে প্রাণ উৎসর্গ করতে পারে, সেখানে রাসূল (সা.)-এর অবমাননায় আশেকানে রাসূল (সা.) কি নিশ্চুপ থাকতে পারে?