ঢাকা ০৪:৫৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ জানুয়ারী ২০২৫, ২৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আফ্রিকার প্রাচীন রহস্যময় ‘ভৌতিক জনগোষ্ঠী’র সন্ধান

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:৫৮:০৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২০
  • ২১৭ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ আধুনিক ইউরোপীয়দের পূর্বপুরুষ নিয়ান্ডারথালের মতো প্রায় পাঁচ লাখ বছর আগে আফ্রিকার রহস্যময় ‘প্রাচীন ভৌতিক জনগোষ্ঠী’ নামের পূর্বপুরুষদের অস্তিত্ব ছিল বলে দাবি করছেন বিজ্ঞানীরা। তাদের ধারণা, ভিন্ন ভিন্ন জনগোষ্ঠীর জেনেটিক্স পার্থক্যের কারণে ভিন্ন ভিন্ন চেহারার মানুষ দেখা যেত। বিজ্ঞানীরা ওই পূর্বপুরুষদের জিন এখনো মানুষের শরীরের আছে বলে জানান।-খবরটি জানায় সিএনএন।

‘সায়েন্স অ্যাডভান্সেস’ জার্নালের বরাতে সিএনএন জানায়, আধুনিক মানব নিয়ান্ডারথালস ফ্যামিলি ট্রি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়। তবে আরো আগে এ ‘প্রাচীন ভৌতিক জনগোষ্ঠী’ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় নিয়ান্ডারথালস ফ্যামিলি ট্রি। লস এঞ্জেলসের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের দাবি, ‘প্রাচীন ভৌতিক জনগোষ্ঠী’ বিভাজন হয়েছে তিন লাখ ৬০ হাজার থেকে ১০ লাখ বছর আগে।

প্রজনন শাস্ত্রবিদ অরুণ দুর্বাসুলা ও শ্রীরাম শংকররমণেরও দাবি করেন, আধুনিক ইউরোপীয়দের প্রাচীন পূর্বপুরুষ যেমন নিয়ান্ডারথাল ছিল, একইভাবে আধুনিক আফ্রিকানদের পূর্বপুরুষদের ছিল প্রাচীন ‘ভৌতিক জনগোষ্ঠী’। তাদের দুইজনের আরো দাবি, প্রাচীন জনগোষ্ঠীর ডিএনএ এখনো আধুনিক পশ্চিম আফ্রিকানদের বংশগত জিনে ২ থেকে ১৯ শতাংশ রয়েছে।

এছাড়া আধুনিক ইউরোপীয় জনগোষ্ঠীর মধ্যে নিয়ান্ডারথাল ও মহাসাগরীয় জনগোষ্ঠীর মধ্যে ডেনিসভান ডিএনএ’র অস্তিত্ব পেয়েছেন ইউসিএলএ’র গবেষকরা। বিভিন্ন গবেষণায় ডিপ লিনিয়েজ থেকে আধুনিক আফ্রিকা বংশধরদের সম্পর্কে অনেক তথ্য পাওয়ার দাবি করা হয়। কিন্তু আফ্রিকার বিরল জীবাশ্মের রেকর্ড ও প্রাচীন ডিএনএ পাওয়ার অসুবিধায় ডিএনএর প্রকৃতি পরিষ্কার বোঝা যায়নি।

ইউসিএলএ’র বিজ্ঞানীরা নাইজেরিয়া, সিয়েরা লিওন ও গাম্বিয়ায় বসবাসকারী চার জনগোষ্ঠীর প্রাচীন বংশধরদের জিনোম মানচিত্র বানিয়েছেন। তারা কম্পিউটার মডেলিংয়ের কৌশল ব্যবহার করে হোমিনিন জাতিগোষ্ঠীর ‘ভূত’ খুঁজে পেতে বেশ কয়েকটি কঠিন ধাপ পার করেছেন। আর এতে সহায়তা করেছে আধুনিক ডিএনএ।

লিভারপুল জন মুরস বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োআর্কিওলজিস্ট অধ্যাপক জোয়েল ডি আইরিশ জানান, প্রাচীনকালে মানুষের মাঝে আলাদা গোত্র ছিল। তবে জেনেটিক্স কারণে তারা ভিন্ন চেহারা নিয়ে জন্ম নিত। এক পর্যায়ে আলাদা আলাদা গোত্রের মানুষ শারীরিক সম্পর্কের দিকে আগ্রহী হয়ে উঠে। ওই ভৌতিক গোত্র সম্পর্কে আরো তথ্য জানা যাবে বলে জানান তিনি।

এদিকে সিএনএন আরো জানায়, ২০১০ সালে ইউরোপীয়, এশীয় ও আমেরিকানদের প্রাথমিক পূর্বপুরুষ নিয়ান্ডারথাল বলে আবিষ্কার করেন বিজ্ঞানীরা। এর আগে স্টোন এজ হমিনিন্সের হাড় থেকে প্রথম জিনোমগুলো বের করেন তারা।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে প্রিন্সটনের লুইস-সিগলার ইন্সটিটিউট ফর ইন্টিগ্রেটিভ জিনোমিক্সের গবেষকরা দাবি করেন, প্রথমবারের মতো আফ্রিকানদের পূর্বপুরুষের মধ্যে নিয়ান্ডারথালদের অস্তিত্ব পেয়েছেন তারা। গবেষণা অনুযায়ী তাদের দাবি, দুই লাখ বছর আগে নিয়ান্ডারথালদের ডিএনএ নিয়ে আফ্রিকা থেকে মানবগোষ্ঠী ইউরোপ চলে যায়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

আফ্রিকার প্রাচীন রহস্যময় ‘ভৌতিক জনগোষ্ঠী’র সন্ধান

আপডেট টাইম : ১০:৫৮:০৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ আধুনিক ইউরোপীয়দের পূর্বপুরুষ নিয়ান্ডারথালের মতো প্রায় পাঁচ লাখ বছর আগে আফ্রিকার রহস্যময় ‘প্রাচীন ভৌতিক জনগোষ্ঠী’ নামের পূর্বপুরুষদের অস্তিত্ব ছিল বলে দাবি করছেন বিজ্ঞানীরা। তাদের ধারণা, ভিন্ন ভিন্ন জনগোষ্ঠীর জেনেটিক্স পার্থক্যের কারণে ভিন্ন ভিন্ন চেহারার মানুষ দেখা যেত। বিজ্ঞানীরা ওই পূর্বপুরুষদের জিন এখনো মানুষের শরীরের আছে বলে জানান।-খবরটি জানায় সিএনএন।

‘সায়েন্স অ্যাডভান্সেস’ জার্নালের বরাতে সিএনএন জানায়, আধুনিক মানব নিয়ান্ডারথালস ফ্যামিলি ট্রি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়। তবে আরো আগে এ ‘প্রাচীন ভৌতিক জনগোষ্ঠী’ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় নিয়ান্ডারথালস ফ্যামিলি ট্রি। লস এঞ্জেলসের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের দাবি, ‘প্রাচীন ভৌতিক জনগোষ্ঠী’ বিভাজন হয়েছে তিন লাখ ৬০ হাজার থেকে ১০ লাখ বছর আগে।

প্রজনন শাস্ত্রবিদ অরুণ দুর্বাসুলা ও শ্রীরাম শংকররমণেরও দাবি করেন, আধুনিক ইউরোপীয়দের প্রাচীন পূর্বপুরুষ যেমন নিয়ান্ডারথাল ছিল, একইভাবে আধুনিক আফ্রিকানদের পূর্বপুরুষদের ছিল প্রাচীন ‘ভৌতিক জনগোষ্ঠী’। তাদের দুইজনের আরো দাবি, প্রাচীন জনগোষ্ঠীর ডিএনএ এখনো আধুনিক পশ্চিম আফ্রিকানদের বংশগত জিনে ২ থেকে ১৯ শতাংশ রয়েছে।

এছাড়া আধুনিক ইউরোপীয় জনগোষ্ঠীর মধ্যে নিয়ান্ডারথাল ও মহাসাগরীয় জনগোষ্ঠীর মধ্যে ডেনিসভান ডিএনএ’র অস্তিত্ব পেয়েছেন ইউসিএলএ’র গবেষকরা। বিভিন্ন গবেষণায় ডিপ লিনিয়েজ থেকে আধুনিক আফ্রিকা বংশধরদের সম্পর্কে অনেক তথ্য পাওয়ার দাবি করা হয়। কিন্তু আফ্রিকার বিরল জীবাশ্মের রেকর্ড ও প্রাচীন ডিএনএ পাওয়ার অসুবিধায় ডিএনএর প্রকৃতি পরিষ্কার বোঝা যায়নি।

ইউসিএলএ’র বিজ্ঞানীরা নাইজেরিয়া, সিয়েরা লিওন ও গাম্বিয়ায় বসবাসকারী চার জনগোষ্ঠীর প্রাচীন বংশধরদের জিনোম মানচিত্র বানিয়েছেন। তারা কম্পিউটার মডেলিংয়ের কৌশল ব্যবহার করে হোমিনিন জাতিগোষ্ঠীর ‘ভূত’ খুঁজে পেতে বেশ কয়েকটি কঠিন ধাপ পার করেছেন। আর এতে সহায়তা করেছে আধুনিক ডিএনএ।

লিভারপুল জন মুরস বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োআর্কিওলজিস্ট অধ্যাপক জোয়েল ডি আইরিশ জানান, প্রাচীনকালে মানুষের মাঝে আলাদা গোত্র ছিল। তবে জেনেটিক্স কারণে তারা ভিন্ন চেহারা নিয়ে জন্ম নিত। এক পর্যায়ে আলাদা আলাদা গোত্রের মানুষ শারীরিক সম্পর্কের দিকে আগ্রহী হয়ে উঠে। ওই ভৌতিক গোত্র সম্পর্কে আরো তথ্য জানা যাবে বলে জানান তিনি।

এদিকে সিএনএন আরো জানায়, ২০১০ সালে ইউরোপীয়, এশীয় ও আমেরিকানদের প্রাথমিক পূর্বপুরুষ নিয়ান্ডারথাল বলে আবিষ্কার করেন বিজ্ঞানীরা। এর আগে স্টোন এজ হমিনিন্সের হাড় থেকে প্রথম জিনোমগুলো বের করেন তারা।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে প্রিন্সটনের লুইস-সিগলার ইন্সটিটিউট ফর ইন্টিগ্রেটিভ জিনোমিক্সের গবেষকরা দাবি করেন, প্রথমবারের মতো আফ্রিকানদের পূর্বপুরুষের মধ্যে নিয়ান্ডারথালদের অস্তিত্ব পেয়েছেন তারা। গবেষণা অনুযায়ী তাদের দাবি, দুই লাখ বছর আগে নিয়ান্ডারথালদের ডিএনএ নিয়ে আফ্রিকা থেকে মানবগোষ্ঠী ইউরোপ চলে যায়।