রাষ্ট্রপতি মো: আব্দুল হামিদ বলেছেন, দেশে শিক্ষার হার বৃদ্ধি পেলেও শিক্ষার গুণগত মান এখনও কাক্সিক্ষত পর্যায়ে পৌঁছেনি। এজন্য শিক্ষায় বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। নোবেল বিজয়ী কৈলাশ সতীর্থের উক্তি উল্লেখ করে তিনি বলেন, শিক্ষায় বিনিয়োগে রিটার্ন নয়গুণ। গুণগত শিক্ষার পাশাপাশি জ্ঞানভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে এ রিটার্ন অর্জন সম্ভব।
তিনি আরও বলেন, আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় সর্বস্তরেই প্রয়োজনের তুলনায় দক্ষ ও অভিজ্ঞতা শিক্ষকের অপ্রতুলতা রয়েছে। এ অবস্থা দূরীকরণে শিক্ষাঙ্গনে প্রকৃত শিক্ষানুরাগীদের নিয়োগের পাশাপাশি তাঁদের উচ্চতর গবেষণা ও সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করতে হবে।
রাষ্ট্রপতি মো: আব্দুল হামিদ বুধবার খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়(খুবি)র পঞ্চম সমাবর্তনে সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। তিনি এই বিশ্বদ্যিালয়ের আচার্য হিসেবে অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।
এতে সমাবর্তন বক্তা ছিলেন এমেরিটাস অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান। বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান। খুবি উপাচার্য প্রফেসর ড. ফায়েক উজ্জামান স্বাগত ভাষন দেন। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন খুবি ট্রেজারার খান আতিয়ার রহমান।
রাষ্ট্রপতি শিক্ষকদের দায়িত্ব সম্পর্কে বলেন, শিক্ষক যখন তাঁর মহান আদর্শ থেকে দূরে চলে যান, তখন শিক্ষার্থীদের মধ্যে তার নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। তাই আদর্শের প্রতি অবিচল থেকে জ্ঞান অর্জন ও বিতরণে শিক্ষমন্ডলী নিবেদিত থাকবেন জাতি তা প্রত্যাশা করে। শ্রেণীকক্ষে পাঠদানের মধ্যে শিক্ষকদের দায়িত্ব সীমাবদ্ধ না রেখে ছাত্র-ছাত্রীদের প্রতি তিনি আরও মনোযোগী হওয়ার আহ্বান জানান।
Presidentসমাবর্তন বক্তার ভাষণে এমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, সমাজ যদি জ্ঞানভিত্তিক না হয়, তবে অগ্রগতি থেমে যেতে বাধ্য। জ্ঞানের অগ্রগতির অপরিহার্য শর্ত মুক্তবুদ্ধির চর্চা করা, সব বিষয়ে প্রশ্ন করা। বাংলাদেশে আজ যে ধরণের পরিবেশ সৃষ্টির চেষ্টা চলছে, তা মুক্তবুদ্ধি চর্চার অনুকূল নয়। এই অবস্থা আমাদেরকে মধ্যযুগীয় অন্ধকারের দিকে টানবে; এর থেকে পরিত্রাণ পেতে হবে। ব্যক্তি-স্বাধীনতা, বাক-স্বাধীনতা ও মতপ্রকাশের যে স্বাধীনতা সংবিধান আমাদের দিয়েছে, আমরা তা প্রয়োগ করতে চাই।
সমাবর্তন অনুষ্ঠানে ২০১১ থেকে ২০১৫ সালের ৩১ আগস্ট পর্যন্ত প্রায় সাড়ে চার হাজার শিক্ষার্থীকে ডিগ্রী দেয়া হয়েছে। এরমধ্যে আড়াই হাজার গ্রাজুয়েট উপস্থিত ছিলেন। এর মধ্যে ১৫ জনকে পোস্ট গ্রাজুয়েট ডিপ্লোমা ইন আইটি (পিজিডিআইটি) ও একজনকে পিএইচডি ডিগ্রি প্রদান করা হয়। পিএইচডি ডিগ্রি পেয়েছেন মোঃ হাসানুজ্জামান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্কুলের (অনুষদ) পরীক্ষার ফলাফলে অসাধারণ কৃতিত্বের জন্য এবার ১৪ জন শিক্ষার্থীকে গোল্ড মেডেল প্রদান করা হয়। তবে ১৩ জন উপস্থিত থেকে গোল্ড মেডেল গ্রহণ করেন।