ঢাকা ০৬:১০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫, ৩০ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হিলির মাঠে মাঠে সরিষা ফুলের সমারোহ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:১৯:৫৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২০
  • ২৪৬ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ দিনাজপুরের হিলির বিস্তির্ন মাঠে ছড়িয়ে ছিটিয়ে সরিষার ক্ষেত। মাঠে মাঠে সরিষার সমারোহ। হলুদ ফুলে ছেয়ে গেছে ফসলের মাঠ। রাস্তার দুই পাশে তাকালেই চোখে পড়ছে হলুদ রংয়ের লীলাভুমি। মৌমাছিরা ব্যস্ত ফুল থেকে মধু আহরণে। সরিষার হলুদ ফুলের গন্ধে গ্রামগুলো মাতোয়ারা।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও স্থানীয় কৃষকরা আশা করছেন আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় সরিষার উৎপাদন লক্ষমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। ভালো ফলনের আশা করছেন তারা।

উপজেলা কৃষি অফিস তথ্য অনুযায়ী জানা যায়, দিনাজপুর জেলার ছোট্ট এ উপজেলায় গেলো মৌসুমে ৭১০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছিল। এবার আবাদ বেড়ে ৮২০ হেক্টরে দাঁড়িয়েছে। ধান বা অন্য ফসলের তুলনায় লাভজনক হওয়ায় কৃষকেরা দিন দিন সরিষা চাষের দিকে ঝুঁকেছেন।

উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, সরিষার হলুদ ফুলে শোভায় সেজেছে ফসলের মাঠ। স্থানীয় কৃষকরা জানান, ধানের উৎপাদন খরচ বেশী, দাম কম। প্রতি বিঘা জমিতে বোরো ধান আবাদে সেচ, সার, বীজ, কিটনাশক ও অন্যান্য মিলে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা খরচ হয়। কিন্তু উৎপাদিত ধান বিক্রি করে তেমন লাভ থাকেনা। অন্যদিকে প্রতি বিঘা জমিতে সরিষা আবাদে খরচ হয় মাত্র ১ হাজার ৫শ’ থেকে ১ হাজার ৮শ’ টাকা। ভালো ফলন হলে এক বিঘা জমি থেকে ৬ মণ পর্যন্ত সরিষা পাওয়া য়ায়। বর্তমানে প্রতি মণ সরিষার বাজার মূল্য ১ হাজার ৮শ’ থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত। এক্ষেত্রে প্রতি বিঘা জমি থেকে সব খরচ বাদ দিলেও ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা লাভ থাকে। ফলে চলতি মৌসুমে সরিষার আবাদ কিছুটা বেড়েছে। আগামী ১৫ দিনের  মধ্যে সরিষা চাষিদের ঘরে উঠবে।

উপজেলার খাট্রাউছনা গ্রামের কৃষক রাজ্জাক হোসেন রাইজিংবিডিকে জানান, তিনি ৪ বিঘা জমিতে সরিষার চাষ করেছেন। ফুল বেশ ভালো ধরেছে। হঠাৎ বৃষ্টি না হলে ফলন ভালো হবে। ঠিক ঠাক মতো ফসল ঘরে তুলতে পারলে তিনি কমপক্ষে ২৫/৩০ হাজার টাকা লাভ করবেন বলে আশা করছেন।

মহেশপুর গ্রামের কৃষক আলতাফ রাইজিংবিডিকে জানান, বীজ বপনের মাত্র দুই মাসের মধ্যে সরিষা ঘরে ওঠে। এছাড়াও চলতি মৌসুমটা সরিষার জন্য বেশ অনুকূল আছে। ফলে এবার সরিষা থেকে ভালো লাভের আশা আছে।

হাকিমপুর (হিলি) উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শামীমা নাজনীন বলেন, জমির অবস্থা বুঝে কৃষকদের সঠিক মাত্রায় সার ও কীটনাশক দেওয়ার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। এ ছাড়াও সরিষা আবাদে কৃষকদের উৎসাহিত করতে ১৪০ জন কৃষকদের বিনামূল্যে সার ও বীজ দেওয়া হয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

হিলির মাঠে মাঠে সরিষা ফুলের সমারোহ

আপডেট টাইম : ১০:১৯:৫৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ দিনাজপুরের হিলির বিস্তির্ন মাঠে ছড়িয়ে ছিটিয়ে সরিষার ক্ষেত। মাঠে মাঠে সরিষার সমারোহ। হলুদ ফুলে ছেয়ে গেছে ফসলের মাঠ। রাস্তার দুই পাশে তাকালেই চোখে পড়ছে হলুদ রংয়ের লীলাভুমি। মৌমাছিরা ব্যস্ত ফুল থেকে মধু আহরণে। সরিষার হলুদ ফুলের গন্ধে গ্রামগুলো মাতোয়ারা।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও স্থানীয় কৃষকরা আশা করছেন আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় সরিষার উৎপাদন লক্ষমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। ভালো ফলনের আশা করছেন তারা।

উপজেলা কৃষি অফিস তথ্য অনুযায়ী জানা যায়, দিনাজপুর জেলার ছোট্ট এ উপজেলায় গেলো মৌসুমে ৭১০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছিল। এবার আবাদ বেড়ে ৮২০ হেক্টরে দাঁড়িয়েছে। ধান বা অন্য ফসলের তুলনায় লাভজনক হওয়ায় কৃষকেরা দিন দিন সরিষা চাষের দিকে ঝুঁকেছেন।

উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, সরিষার হলুদ ফুলে শোভায় সেজেছে ফসলের মাঠ। স্থানীয় কৃষকরা জানান, ধানের উৎপাদন খরচ বেশী, দাম কম। প্রতি বিঘা জমিতে বোরো ধান আবাদে সেচ, সার, বীজ, কিটনাশক ও অন্যান্য মিলে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা খরচ হয়। কিন্তু উৎপাদিত ধান বিক্রি করে তেমন লাভ থাকেনা। অন্যদিকে প্রতি বিঘা জমিতে সরিষা আবাদে খরচ হয় মাত্র ১ হাজার ৫শ’ থেকে ১ হাজার ৮শ’ টাকা। ভালো ফলন হলে এক বিঘা জমি থেকে ৬ মণ পর্যন্ত সরিষা পাওয়া য়ায়। বর্তমানে প্রতি মণ সরিষার বাজার মূল্য ১ হাজার ৮শ’ থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত। এক্ষেত্রে প্রতি বিঘা জমি থেকে সব খরচ বাদ দিলেও ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা লাভ থাকে। ফলে চলতি মৌসুমে সরিষার আবাদ কিছুটা বেড়েছে। আগামী ১৫ দিনের  মধ্যে সরিষা চাষিদের ঘরে উঠবে।

উপজেলার খাট্রাউছনা গ্রামের কৃষক রাজ্জাক হোসেন রাইজিংবিডিকে জানান, তিনি ৪ বিঘা জমিতে সরিষার চাষ করেছেন। ফুল বেশ ভালো ধরেছে। হঠাৎ বৃষ্টি না হলে ফলন ভালো হবে। ঠিক ঠাক মতো ফসল ঘরে তুলতে পারলে তিনি কমপক্ষে ২৫/৩০ হাজার টাকা লাভ করবেন বলে আশা করছেন।

মহেশপুর গ্রামের কৃষক আলতাফ রাইজিংবিডিকে জানান, বীজ বপনের মাত্র দুই মাসের মধ্যে সরিষা ঘরে ওঠে। এছাড়াও চলতি মৌসুমটা সরিষার জন্য বেশ অনুকূল আছে। ফলে এবার সরিষা থেকে ভালো লাভের আশা আছে।

হাকিমপুর (হিলি) উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শামীমা নাজনীন বলেন, জমির অবস্থা বুঝে কৃষকদের সঠিক মাত্রায় সার ও কীটনাশক দেওয়ার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। এ ছাড়াও সরিষা আবাদে কৃষকদের উৎসাহিত করতে ১৪০ জন কৃষকদের বিনামূল্যে সার ও বীজ দেওয়া হয়েছে।