ঢাকা ০২:৪৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশায় কিশোরগঞ্জের হাওরাঞ্চলে বোরো বীজতলা নষ্ট হচ্ছে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০১:১৯:৪৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০১৯
  • ২৬৬ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশায় কিশোরগঞ্জের হাওরাঞ্চলে বোরো বীজতলা নষ্ট হচ্ছে। চলতি বোরো মৌসুমে কিশোরগঞ্জ জেলায় আট হাজার ১৭১ হেক্টর জমিতে বীজতলা তৈরির কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।

উৎপাদিত বোরোর চারাগাছ দিয়ে হাওরাঞ্চলসহ সারা জেলায় এক লাখ ৬৭ হাজার ৬৭৬ হেক্টর বোরো জমিতে চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। শীত ও কুয়াশার দাপটে কীটনাশক প্রয়োগ করেও বীজ পচাসহ ছত্রাক রোধ করা যাচ্ছে না। তাই কৃষি অফিসের পরামর্শে বীজতলায় বাড়তি পানি দিয়েও তেমন কোনো ফল পাওয়া যাচ্ছে না।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ জানায়, ২৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৮ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে বীজতলা তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু এসব বীজতলা তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশার কারণে কোল্ড ইনজুরিতে আক্রান্ত হয়েছে। ফলে বীজতলা রক্ষায় পলিথিনে ঢেকে দিয়ে তা রক্ষা করতে কৃষকরা রাত-দিন বাড়তি শ্রম দিচ্ছেন। এদিকে, কৃষি বিভাগের পরামর্শেও কৃষকরা বীজতলা রক্ষা করতে পারছেন না। তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশায় জেলার গভীর হাওরের অষ্টগ্রাম, ইটনা, মিঠামইন, নিকলীসহ হাওর সংলগ্ন করিমগঞ্জ, তাড়াইল ও বাজিতপুর উপজেলায় বোরো ধানের বীজতলাগুলো কোল্ড ইনজুরিতে বেশি আক্রান্ত হয়েছে। কারণ নয় দিন ধরে বিস্তীর্ণ হাওর এলাকায় ঘন কুয়াশার কারণে দুপুর পর্যন্ত সূর্যের মুখ না দেখার কারণে এ সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে।

হাওরের অষ্টগ্রাম উপজেলার দেওঘর গ্রামের কৃষক হোসেন মিয়া (৪৫), মিঠামইন উপজেলার চারিগ্রামের ফজলু মিয়াসহ (৫৫) একাধিক কৃষক জানান, গত কয়েকদিনের তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশার কারণে তাদের বোরো ধানের বীজগুলো হলুদ ও লাল বর্ণের হয়ে গোড়ায় পচন ধরে গাছ মরে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. মতিউর রহমান জানান, কিশোরগঞ্জ জেলায় এখন পর্যন্ত ছয় হাজার ২৫৩ হেক্টর জমিতে বোরো ধান রোপণ করা হয়েছে। বীজতলাগুলোর অবস্থা মোটামুটি ভালো। তবে ঘন কুয়াশা ও শৈত্যপ্রবাহ আরও এক সপ্তাহ স্থায়ী হলে কৃষকরা মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হবেন। এতে বীজের উৎপাদন ও পরাগায়নের সমস্যা হবে। এতে করে ধানে পোকার আক্রমণ ও চিটা হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে। এই সমস্যা সমাধানে কৃষকদের সুপরামর্শ দেওয়ার জন্য ১৩ উপজেলার সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আশা করি সংকট উত্তরণ ঘটবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশায় কিশোরগঞ্জের হাওরাঞ্চলে বোরো বীজতলা নষ্ট হচ্ছে

আপডেট টাইম : ০১:১৯:৪৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০১৯

হাওর বার্তা ডেস্কঃ তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশায় কিশোরগঞ্জের হাওরাঞ্চলে বোরো বীজতলা নষ্ট হচ্ছে। চলতি বোরো মৌসুমে কিশোরগঞ্জ জেলায় আট হাজার ১৭১ হেক্টর জমিতে বীজতলা তৈরির কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।

উৎপাদিত বোরোর চারাগাছ দিয়ে হাওরাঞ্চলসহ সারা জেলায় এক লাখ ৬৭ হাজার ৬৭৬ হেক্টর বোরো জমিতে চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। শীত ও কুয়াশার দাপটে কীটনাশক প্রয়োগ করেও বীজ পচাসহ ছত্রাক রোধ করা যাচ্ছে না। তাই কৃষি অফিসের পরামর্শে বীজতলায় বাড়তি পানি দিয়েও তেমন কোনো ফল পাওয়া যাচ্ছে না।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ জানায়, ২৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৮ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে বীজতলা তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু এসব বীজতলা তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশার কারণে কোল্ড ইনজুরিতে আক্রান্ত হয়েছে। ফলে বীজতলা রক্ষায় পলিথিনে ঢেকে দিয়ে তা রক্ষা করতে কৃষকরা রাত-দিন বাড়তি শ্রম দিচ্ছেন। এদিকে, কৃষি বিভাগের পরামর্শেও কৃষকরা বীজতলা রক্ষা করতে পারছেন না। তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশায় জেলার গভীর হাওরের অষ্টগ্রাম, ইটনা, মিঠামইন, নিকলীসহ হাওর সংলগ্ন করিমগঞ্জ, তাড়াইল ও বাজিতপুর উপজেলায় বোরো ধানের বীজতলাগুলো কোল্ড ইনজুরিতে বেশি আক্রান্ত হয়েছে। কারণ নয় দিন ধরে বিস্তীর্ণ হাওর এলাকায় ঘন কুয়াশার কারণে দুপুর পর্যন্ত সূর্যের মুখ না দেখার কারণে এ সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে।

হাওরের অষ্টগ্রাম উপজেলার দেওঘর গ্রামের কৃষক হোসেন মিয়া (৪৫), মিঠামইন উপজেলার চারিগ্রামের ফজলু মিয়াসহ (৫৫) একাধিক কৃষক জানান, গত কয়েকদিনের তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশার কারণে তাদের বোরো ধানের বীজগুলো হলুদ ও লাল বর্ণের হয়ে গোড়ায় পচন ধরে গাছ মরে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. মতিউর রহমান জানান, কিশোরগঞ্জ জেলায় এখন পর্যন্ত ছয় হাজার ২৫৩ হেক্টর জমিতে বোরো ধান রোপণ করা হয়েছে। বীজতলাগুলোর অবস্থা মোটামুটি ভালো। তবে ঘন কুয়াশা ও শৈত্যপ্রবাহ আরও এক সপ্তাহ স্থায়ী হলে কৃষকরা মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হবেন। এতে বীজের উৎপাদন ও পরাগায়নের সমস্যা হবে। এতে করে ধানে পোকার আক্রমণ ও চিটা হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে। এই সমস্যা সমাধানে কৃষকদের সুপরামর্শ দেওয়ার জন্য ১৩ উপজেলার সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আশা করি সংকট উত্তরণ ঘটবে।