ঢাকা ০৭:১৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পাকিস্তান সফরে যেতে চান না কোচ ও ক্রিকেটাররা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৮:৫৯:৩৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০১৯
  • ২২৩ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ দুই সপ্তাহ আগে পাকিস্তান সফর নিয়ে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান বলেছিলেন, ‘খেলোয়াড়েরা না যেতে চাইলে যাবে না। এখানে জোর করার কিছু নেই।’ বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) পাকিস্তান সফর নিয়ে আসলেই মুশফিকদের জোর করছে না, বিসিবি সভাপতি গতকাল আরেকবার সেটি পরিষ্কার করলেন।

পাকিস্তান সফর নিয়ে পরশু পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডকে (পিসিবি) নিজেদের ভাবনার কথা আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছে বিসিবি। পিসিবিকে কী বলা হয়েছে, সেটি গতকাল সাংবাদিকদের কাছে খোলাসা করেছেন বিসিবি সভাপতি,‘আমরা বলেছি, টি-টোয়েন্টি খেলতে যাব। চেষ্টা করছি, টি-টোয়েন্টি দল পাঠাতে। ওরা যদি রাজি হয়…। এটা শুধু বোর্ডের বিষয় না। এখানে বোর্ডের বাইরেও অনেক কিছু আছে। খেলোয়াড়, কোচিং স্টাফরা যদি সবাই রাজি হয়, আমরা একটা ভালো দল যদি পাঠাতে পারি তাহলে যাব। দ্বিতীয় বিষয় হচ্ছে সরকারি ছাড়পত্র। প্রত্যেকটা জায়গা থেকে ছাড়পত্র দরকার। আমরা একটা জায়গা থেকে পেয়েছি। অন্য জায়গা থেকে হয়তো পেয়ে যাব দু’এক দিনের মধ্যে। সব (ছাড়পত্র) পেয়ে গেলে আমরা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেব।’

পাকিস্তান সফরে বাংলাদেশ শুধু টি-টোয়েন্টি খেলতে চাচ্ছে কেন, সেটিরও ব্যাখ্যা দিয়েছেন নাজমুল। বাংলাদেশ দলের কোচিং স্টাফদের বেশির ভাগই পাকিস্তান সফরে যেতে আগ্রহী নয়। কেউ কেউ যেতে চান অল্প সময়ের জন্য। ক্রিকেটাররাও লম্বা সময় পাকিস্তান সফর করতে চান না। পাকিস্তান সফর নিয়ে বেশির ভাগ খেলোয়াড়ের কাছ থেকে নেতিবাচক সাড়া পেয়েছে বিসিবি। নাজমুল বললেন, ‘ক্রিকেটারদের সঙ্গে কথা বলছি। কথা বলে বুঝেছি, কিছু কিছু খেলোয়াড় যেতে চায় না। কিছু কিছু ক্রিকেটার যেতে রাজি আছে, কিন্তু অল্প সময়ের জন্য। আমি জানতে চাইছিলাম কেন তারা যেতে চায় না? একাধিক বিষয় এসেছে। একটা বিষয় হচ্ছে পরিবার। ওদের বাবা-মা, আত্মীয়-স্বজন সবাই খুব চিন্তিত, উৎকণ্ঠিত এই পাকিস্তান সফর নিয়ে।’

আরেকটি বিষয় চলে আসছে সামনে। যদি পাকিস্তান সফরে যায় বাংলাদেশ, যে কড়া নিরাপত্তাব্যবস্থা থাকবে চারদিকে, সেটি দেখে ক্রিকেটারদের মনে হতে পারে যুদ্ধের মধ্যে খেলতে এসেছেন! এমন দমবন্ধ পরিবেশে ক্রিকেটে পূর্ণ মনোযোগ রাখা কঠিন। খেলোয়াড়দের এই মনোভাব নিয়ে বিসিবি সভাপতি বললেন, ‘দমবন্ধ একটা পরিবেশে কত দিন থাকা যায়? যাদের সঙ্গে কথা বলেছি ওদের অনেকেই বলেছে যে এত লম্বা সময় থাকতে চায় না পাকিস্তানে। এ কারণে আমরা শুধু টি-টোয়েন্টি খেলতে যেতে পারি। এতে করে এক সপ্তাহের মধ্যে সফর শেষ করা যাবে। এই অভিজ্ঞতা ভবিষ্যতে আমাদের সাহায্য করতে পারে। চিন্তা করতে পারি যে সেখানে টেস্টও খেলতে যায় কিনা।’

বাংলাদেশ যদি টেস্ট খেলতে না যায় পাকিস্তানে, টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের পয়েন্ট হারানোর শঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। বিষয়টি আইসিসিকে পিসিবি জানাতে পারে বলেও শোনা যাচ্ছে। নাজমুল হাসান অবশ্য এটা নিয়ে মোটেও চিন্তিত নন, ‘এটা নিয়ে চিন্তিত না। সিদ্ধান্তটা আমাদের নিতে হবে। এটা বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড ও খেলোয়াড়রা সিদ্ধান্ত নেবে। তারা তাদের পক্ষ থেকে বলেছে, আমাদেরকে চিন্তা করতে হবে বাংলাদেশ দল নিয়ে। আমাদের খেলোয়াড় এবং কোচিং স্টাফদের নিয়ে। আমরা বলছি না যে আমরা যাব না। যেহেতু এই প্রথমবারের মতো যাচ্ছি সুতরাং ক্রিকেটারদের মধ্যে একটা শঙ্কা থাকতেই পারে। এসব ব্যাপারে কাউকে জোর করার প্রশ্নই উঠে না।’

তবে পয়েন্ট হারানোর বিষয়টি এখনো পরিষ্কার জানা নেই বিসিবি সভাপতির। নাজমুল বরং পাল্টা প্রশ্ন তুলছেন, ওয়েস্ট ইন্ডিজের জন্য নিরপেক্ষ ভেন্যুতে টেস্ট আয়োজন করতে পেরেছে পাকিস্তান। বাংলাদেশের জন্য কেন তারা পারবে না? বিসিবি সভাপতি বললেন, ‘এখনো পুরো প্রক্রিয়াটা জানি না। এই পরিস্থিতি বারবার আসে না। যেটা জানি ওরা এটা নিয়ে অবশ্যই আলোচনা করবে। তারা আমদের পরিস্থিতি বুঝবে এবং নিরপেক্ষ ভেন্যুতে টেস্ট আয়োজনের ব্যবস্থা করবে। তারা এটা ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে করেছে। এমন তো না যে আমাদের সঙ্গে প্রথম করতে হচ্ছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের জন্য ওরা এমন করেছে। আমাদের জন্য আয়োজন করতে অসুবিধা কোথায়?’

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

পাকিস্তান সফরে যেতে চান না কোচ ও ক্রিকেটাররা

আপডেট টাইম : ০৮:৫৯:৩৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০১৯

হাওর বার্তা ডেস্কঃ দুই সপ্তাহ আগে পাকিস্তান সফর নিয়ে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান বলেছিলেন, ‘খেলোয়াড়েরা না যেতে চাইলে যাবে না। এখানে জোর করার কিছু নেই।’ বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) পাকিস্তান সফর নিয়ে আসলেই মুশফিকদের জোর করছে না, বিসিবি সভাপতি গতকাল আরেকবার সেটি পরিষ্কার করলেন।

পাকিস্তান সফর নিয়ে পরশু পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডকে (পিসিবি) নিজেদের ভাবনার কথা আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছে বিসিবি। পিসিবিকে কী বলা হয়েছে, সেটি গতকাল সাংবাদিকদের কাছে খোলাসা করেছেন বিসিবি সভাপতি,‘আমরা বলেছি, টি-টোয়েন্টি খেলতে যাব। চেষ্টা করছি, টি-টোয়েন্টি দল পাঠাতে। ওরা যদি রাজি হয়…। এটা শুধু বোর্ডের বিষয় না। এখানে বোর্ডের বাইরেও অনেক কিছু আছে। খেলোয়াড়, কোচিং স্টাফরা যদি সবাই রাজি হয়, আমরা একটা ভালো দল যদি পাঠাতে পারি তাহলে যাব। দ্বিতীয় বিষয় হচ্ছে সরকারি ছাড়পত্র। প্রত্যেকটা জায়গা থেকে ছাড়পত্র দরকার। আমরা একটা জায়গা থেকে পেয়েছি। অন্য জায়গা থেকে হয়তো পেয়ে যাব দু’এক দিনের মধ্যে। সব (ছাড়পত্র) পেয়ে গেলে আমরা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেব।’

পাকিস্তান সফরে বাংলাদেশ শুধু টি-টোয়েন্টি খেলতে চাচ্ছে কেন, সেটিরও ব্যাখ্যা দিয়েছেন নাজমুল। বাংলাদেশ দলের কোচিং স্টাফদের বেশির ভাগই পাকিস্তান সফরে যেতে আগ্রহী নয়। কেউ কেউ যেতে চান অল্প সময়ের জন্য। ক্রিকেটাররাও লম্বা সময় পাকিস্তান সফর করতে চান না। পাকিস্তান সফর নিয়ে বেশির ভাগ খেলোয়াড়ের কাছ থেকে নেতিবাচক সাড়া পেয়েছে বিসিবি। নাজমুল বললেন, ‘ক্রিকেটারদের সঙ্গে কথা বলছি। কথা বলে বুঝেছি, কিছু কিছু খেলোয়াড় যেতে চায় না। কিছু কিছু ক্রিকেটার যেতে রাজি আছে, কিন্তু অল্প সময়ের জন্য। আমি জানতে চাইছিলাম কেন তারা যেতে চায় না? একাধিক বিষয় এসেছে। একটা বিষয় হচ্ছে পরিবার। ওদের বাবা-মা, আত্মীয়-স্বজন সবাই খুব চিন্তিত, উৎকণ্ঠিত এই পাকিস্তান সফর নিয়ে।’

আরেকটি বিষয় চলে আসছে সামনে। যদি পাকিস্তান সফরে যায় বাংলাদেশ, যে কড়া নিরাপত্তাব্যবস্থা থাকবে চারদিকে, সেটি দেখে ক্রিকেটারদের মনে হতে পারে যুদ্ধের মধ্যে খেলতে এসেছেন! এমন দমবন্ধ পরিবেশে ক্রিকেটে পূর্ণ মনোযোগ রাখা কঠিন। খেলোয়াড়দের এই মনোভাব নিয়ে বিসিবি সভাপতি বললেন, ‘দমবন্ধ একটা পরিবেশে কত দিন থাকা যায়? যাদের সঙ্গে কথা বলেছি ওদের অনেকেই বলেছে যে এত লম্বা সময় থাকতে চায় না পাকিস্তানে। এ কারণে আমরা শুধু টি-টোয়েন্টি খেলতে যেতে পারি। এতে করে এক সপ্তাহের মধ্যে সফর শেষ করা যাবে। এই অভিজ্ঞতা ভবিষ্যতে আমাদের সাহায্য করতে পারে। চিন্তা করতে পারি যে সেখানে টেস্টও খেলতে যায় কিনা।’

বাংলাদেশ যদি টেস্ট খেলতে না যায় পাকিস্তানে, টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের পয়েন্ট হারানোর শঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। বিষয়টি আইসিসিকে পিসিবি জানাতে পারে বলেও শোনা যাচ্ছে। নাজমুল হাসান অবশ্য এটা নিয়ে মোটেও চিন্তিত নন, ‘এটা নিয়ে চিন্তিত না। সিদ্ধান্তটা আমাদের নিতে হবে। এটা বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড ও খেলোয়াড়রা সিদ্ধান্ত নেবে। তারা তাদের পক্ষ থেকে বলেছে, আমাদেরকে চিন্তা করতে হবে বাংলাদেশ দল নিয়ে। আমাদের খেলোয়াড় এবং কোচিং স্টাফদের নিয়ে। আমরা বলছি না যে আমরা যাব না। যেহেতু এই প্রথমবারের মতো যাচ্ছি সুতরাং ক্রিকেটারদের মধ্যে একটা শঙ্কা থাকতেই পারে। এসব ব্যাপারে কাউকে জোর করার প্রশ্নই উঠে না।’

তবে পয়েন্ট হারানোর বিষয়টি এখনো পরিষ্কার জানা নেই বিসিবি সভাপতির। নাজমুল বরং পাল্টা প্রশ্ন তুলছেন, ওয়েস্ট ইন্ডিজের জন্য নিরপেক্ষ ভেন্যুতে টেস্ট আয়োজন করতে পেরেছে পাকিস্তান। বাংলাদেশের জন্য কেন তারা পারবে না? বিসিবি সভাপতি বললেন, ‘এখনো পুরো প্রক্রিয়াটা জানি না। এই পরিস্থিতি বারবার আসে না। যেটা জানি ওরা এটা নিয়ে অবশ্যই আলোচনা করবে। তারা আমদের পরিস্থিতি বুঝবে এবং নিরপেক্ষ ভেন্যুতে টেস্ট আয়োজনের ব্যবস্থা করবে। তারা এটা ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে করেছে। এমন তো না যে আমাদের সঙ্গে প্রথম করতে হচ্ছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের জন্য ওরা এমন করেছে। আমাদের জন্য আয়োজন করতে অসুবিধা কোথায়?’