হাওর বার্তা ডেস্কঃ ঊর্ধ্বতন কর্তৃৃপক্ষের ‘কমান্ড’ মেনে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে বিজিবি সদস্যদের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ‘বিজিবি দিবস-২০১৯’ উপলক্ষে গতকাল বুধবার পিলখানায় সীমান্তরক্ষা বাহিনীর সদর দপ্তরে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, আমার আবেদন থাকবে, ঊর্ধ্বতন কর্তৃৃপক্ষের কমান্ড মেনে চলবেন। শান্তি-শৃংখলা বজায় রাখবেন। আপনারা সব সময় নিয়ম-নীতি মেনে সততার সাথে, নিষ্ঠার সাথে, দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে আপনাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করবেন।
প্রায় ১১ বছর আগে পিলখানায় বিদ্রোহ আর নারকীয় হত্যাযজ্ঞের পর নাম, পতাকাসহ অনেক কিছু বদলে যাওয়া এ বাহিনীর সদস্যদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনাদের কোনো অসুবিধা হলে সেটা দেখার জন্য তো আমরা আছি। শেখ হাসিনা বলেন, মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গারা যখন বাংলাদেশে এলো, সরকার যখন তাদের আশ্রয় দেয়া সিদ্ধান্ত যখন নিল, বিজিবি তখন উদ্যোগ নিয়ে তাদের থাকা, রেজিস্ট্রেশন করা, ত্রাণ পৌঁছে দেয়াসহ সব ধরনের দেখাশোনা করেছে ‘অত্যন্ত মানবিকতা আর দক্ষতার সাথে’।
তিনি বলেন, আপনাদের কাছে আমরা চাই যে আপনারা এই দেশকে ভালোবেসে দেশের মানুষের প্রতি কর্তব্য পালন করবেন। দেশ যদি উন্নত হয়, আপনাদের পরিবার পরিজন তারাই উন্নত হবে। এদেশের মানুষই উন্নত হবে। সেই কথাটা সবসময় মনে রাখবেন। আমি আশা করি আপনারা সব সময় দেশপ্রেম, সততা ও দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করে এই বাহিনীর সুনাম ও মর্যাদা সমুন্নত রাখবেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা চাই সব সময় এই বাহিনী সুরক্ষিত থাকুক। যেটা জাতির পিতা নির্দেশ দিয়ে গেছেন। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ ২২৪ বছরের ঐতিহ্যবাহী সীমান্তরক্ষী বাহিনী। বারবার এর নাম, পোশাক পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু তারপরও আমি বলব বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য, বিশেষ করে আমাদের সীমান্ত রক্ষার জন্য বিজিবির ভূমিকা অপরিসীম।
মুক্তিযুদ্ধে বিজিবি সদস্যদের ভূমিকা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ বাহিনীর প্রায় ১২ হাজার বাঙালি সদস্য মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন। ২ জন বীরশ্রেষ্ঠ, ৮ জন বীর উত্তম, ৩২ জন বীর বিক্রম এবং ৭৭ জন বীর প্রতীক পদকে ভূষিত হন। এ বাহিনীর ৮১৭ জন সদস্য মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হন। আমি তাদের মহান আত্মত্যাগ গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি। আমাদের স্বাধীনতা অর্জনে তাদের বিরাট অবদান রয়েছে।
অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, বিজিবি মহাপরিচালক মো. সাফিনুল ইসলামসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বিজিবি দিবস উপলক্ষে বীরত্বপূর্ণ ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বিডিআর কর্মকর্তাদের মাঝে বর্ডার গার্ড পদক-২০১৯, রাষ্ট্রপতি বর্ডার গার্ড পদক-২০১৯, বর্ডার গার্ড পদক সেবা-২০১৯ এবং রাষ্ট্রপতি বর্ডার গার্ড পদক সেবা-২০১৯ বিতরণ করেন।
প্রধানমন্ত্রী কুচকাওয়াজে অংশগ্রহণকারী প্যারেড কমান্ডার এবং অন্যান্য কন্টিনজেন্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এছাড়া অনুষ্ঠানে মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা এবং কূটনৈতিক কোরের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বীর উত্তম ফজলুর রহমান খন্দকার মিলনায়তনে বিজিবি সদস্যদের বিশেষ দরবারে অংশগ্রহণ করেন।