ঢাকা ০৭:৫১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
দেশ ও জাতি গঠনে “দৈনিক আমার দেশ” পত্রিকার কাছে নেত্রকোণার জনগণের প্রত্যাশা শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত ভুল অস্ত্রোপচার, যা ঘটেছিল প্রিয়াঙ্কা সঙ্গে সচিবালয়ে উপদেষ্টা হাসান আরিফের তৃতীয় জানাজা সম্পন্ন সাবেক সচিব ইসমাইল রিমান্ডে অবশেষে বিল পাস করে ‘শাটডাউন’ এড়াল যুক্তরাষ্ট্র চাঁদাবাজদের ধরতে অভিযান শুরু হচ্ছে: ডিএমপি কমিশনার নির্বাচনের পর নিজের নিয়মিত কাজে ফিরে যাবেন ড. ইউনূস ইয়েমেন থেকে ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, আহত ১৬ জুলাই আন্দোলন বিগত বছরগুলোর অনিয়মের সমষ্টি: ফারুকী তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম ‘সড়কে নৈরাজ্যের সঙ্গে রাজনৈতিক প্রভাব জড়িত

ঘাটতি মেটাতে পারে বারি পাতা পেঁয়াজ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৮:০৯:৫৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০১৯
  • ২২৬ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বিদেশি জার্মপ্লাজম সংগ্রহ করে বাংলাদেশে চাষ উপযোগী ‘বারি পাতা পেঁয়াজ-১’ নামে একটি উন্নত জাত উদ্ভাবন করেছে বিএআরআইয়ের মসলা গবেষণা কেন্দ্র, বগুড়া। ২০১৪ সালে এটি উদ্ভাবন করা হয়।

দেশে পেঁয়াজ উৎপাদনের ঘা টতি পূরণ করতে কৃষক পর্যায়ে এ জাতের চাষাবাদে কৃষকদের আগ্রহ বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ। চাহিদা মেটাতে বসতভিটাসহ মাঠপর্যায়ে সারা বছর এই পেঁয়াজ চাষ করা সম্ভব।

আঞ্চলিক মসলা গবেষণা কেন্দ্র, গাজীপুরের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও প্রকল্প পরিচালক ড. শৈলেন্দ্র নাথ মজুমদার জানান, পাতা পেঁয়াজ একটি গুরুত্বপূর্ণ মসলাজাতীয় ফসল। এশিয়ার বিভিন্ন দেশে এ মসলা খুবই জনপ্রিয়। দেশভেদে এর নামের বৈচিত্র্য রয়েছে। পাতা পেঁয়াজের প্রধান উৎপাদনকারী দেশগুলো হল- জাপান, তাইওয়ান, শ্রীলংকা, ভারত, কোরিয়া, চীন, ইউরোপ, আমেরিকা ও রাশিয়া।

জাপানে এ ফসলটি বাল্ব পেঁয়াজের পরে দ্বিতীয় স্থান দখল করে আছে। এটি বাংলাদেশে চাষ উপযোগী। পাতা পেঁয়াজ বাসাবাড়ির ছাদসহ বিভিন্ন স্থানে এমনকি টবেও চাষ করা যায়। এটি বাল্ব পেঁয়াজের পরিবর্তে ব্যবহার করা যায় এবং সাধারণ বাল্ব পেঁয়াজের সঙ্গে সংকরায়নের মাধ্যমে রোগমুক্ত উন্নত জাত উদ্ভাবন করা সম্ভব।

শৈলেন্দ্র নাথ মজুমদার আরও জানান, মে-জুন বা অক্টোবর-নভেম্বরের মধ্যে বীজতলায় বীজ বপন করা হয়। সারি পদ্ধতিতে চাষ করলে প্রতি হেক্টর জমির জন্য ৪-৫ কেজি বীজের প্রয়োজন হয়। তবে ছিটিয়ে বপন করলে হেক্টরপ্রতি ৮-১০ কেজি বীজের দরকার হয়। বীজ ২৪ ঘণ্টা পানিতে ভিজিয়ে পরে ১২ ঘণ্টা শুকনা পাতলা কাপড়ে বেঁধে রেখে দিলে বীজের অঙ্কুর বের হয়। বীজতলায় পচা গোবর সার দিয়ে ঝুরঝুরে করে তৈরি করতে হয়। বীজতলায় আগাছা নিড়ানোসহ অন্যান্য পরিচর্যা করতে হয়। চারার বয়স ৪০-৪৫ দিন হলে মূল জমিতে লাগানোর উপযোগী হয়।

চারা তোলার পর ওপর থেকে প্রায় এক-তৃতীয়াংশ ছেঁটে ফেলে দিয়ে লাগাতে হয়। চারা রোপণের দুই মাস পরেই প্রথমে পাতা সংগ্রহ করা যায়। মে-জুন মাসে বীজ বপন করলে নভেম্বর পর্যন্ত গাছ থেকে গড়ে ২-৩ বার পাতা খাওয়ার জন্য সংগ্রহ করা সম্ভব। প্রথম সংগ্রহের ২০-২৫ দিন পরপর পাতা সংগ্রহ করা যায়। গাছটি তুলে মূল এবং হলুদ পাতা কেটে পানিতে ধুয়ে আঁটি বেঁধে বাজারে বিক্রি করা যায়।

মসলা গবেষণা উপকেন্দ্র, ফরিদপুরের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. আলাউদ্দিন খান জানান, মে থেকে নভেম্বর মাসে যখনই বীজ বপন করা হোক না কেন, মূল জমিতে রোপণের পর ডিসেম্বর মাসে পাতা পেঁয়াজের ফুল আসা শুরু করে। সব আম্বেলের বীজ একসঙ্গে পরিপক্ব হয় না। তাই কয়েক দিন পরপর পরিপক্ব আম্বেল সংগ্রহ করতে হবে। একটি আম্বেলের মধ্যে শতকরা ১০-১৫টি ফল ফেটে কালো বীজ দেখা গেলে আম্বেলটি সংগ্রহ করতে হবে। মাঠে সব আম্বেল সংগ্রহ করতে ৪-৫ দিন সময় লাগতে পারে।

সামান্য দেরিতে বীজ সংগ্রহ করলে আম্বেল থেকে সমস্ত বীজ ঝরে মাটিতে পড়ে যাবে। পাতা পেঁয়াজের বীজ সাধারণত ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহ থেকে এপ্রিল পর্যন্ত সংগ্রহ করা হয়ে থাকে। বীজ আম্বেল সংগ্রহ করার পর রোদে শুকিয়ে হালকা লাঠি দিয়ে পিটিয়ে বীজ বের করতে হবে। পরে বীজ রোদে ভালোভাবে শুকিয়ে ছিদ্রবিহীন পলিথিন বা টিনের পাত্রে সংরক্ষণ করা উত্তম। হেক্টরপ্রতি ৭০০-৯০০ কেজি বীজ উৎপাদন করা সম্ভব।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

দেশ ও জাতি গঠনে “দৈনিক আমার দেশ” পত্রিকার কাছে নেত্রকোণার জনগণের প্রত্যাশা শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত

ঘাটতি মেটাতে পারে বারি পাতা পেঁয়াজ

আপডেট টাইম : ০৮:০৯:৫৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০১৯

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বিদেশি জার্মপ্লাজম সংগ্রহ করে বাংলাদেশে চাষ উপযোগী ‘বারি পাতা পেঁয়াজ-১’ নামে একটি উন্নত জাত উদ্ভাবন করেছে বিএআরআইয়ের মসলা গবেষণা কেন্দ্র, বগুড়া। ২০১৪ সালে এটি উদ্ভাবন করা হয়।

দেশে পেঁয়াজ উৎপাদনের ঘা টতি পূরণ করতে কৃষক পর্যায়ে এ জাতের চাষাবাদে কৃষকদের আগ্রহ বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ। চাহিদা মেটাতে বসতভিটাসহ মাঠপর্যায়ে সারা বছর এই পেঁয়াজ চাষ করা সম্ভব।

আঞ্চলিক মসলা গবেষণা কেন্দ্র, গাজীপুরের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও প্রকল্প পরিচালক ড. শৈলেন্দ্র নাথ মজুমদার জানান, পাতা পেঁয়াজ একটি গুরুত্বপূর্ণ মসলাজাতীয় ফসল। এশিয়ার বিভিন্ন দেশে এ মসলা খুবই জনপ্রিয়। দেশভেদে এর নামের বৈচিত্র্য রয়েছে। পাতা পেঁয়াজের প্রধান উৎপাদনকারী দেশগুলো হল- জাপান, তাইওয়ান, শ্রীলংকা, ভারত, কোরিয়া, চীন, ইউরোপ, আমেরিকা ও রাশিয়া।

জাপানে এ ফসলটি বাল্ব পেঁয়াজের পরে দ্বিতীয় স্থান দখল করে আছে। এটি বাংলাদেশে চাষ উপযোগী। পাতা পেঁয়াজ বাসাবাড়ির ছাদসহ বিভিন্ন স্থানে এমনকি টবেও চাষ করা যায়। এটি বাল্ব পেঁয়াজের পরিবর্তে ব্যবহার করা যায় এবং সাধারণ বাল্ব পেঁয়াজের সঙ্গে সংকরায়নের মাধ্যমে রোগমুক্ত উন্নত জাত উদ্ভাবন করা সম্ভব।

শৈলেন্দ্র নাথ মজুমদার আরও জানান, মে-জুন বা অক্টোবর-নভেম্বরের মধ্যে বীজতলায় বীজ বপন করা হয়। সারি পদ্ধতিতে চাষ করলে প্রতি হেক্টর জমির জন্য ৪-৫ কেজি বীজের প্রয়োজন হয়। তবে ছিটিয়ে বপন করলে হেক্টরপ্রতি ৮-১০ কেজি বীজের দরকার হয়। বীজ ২৪ ঘণ্টা পানিতে ভিজিয়ে পরে ১২ ঘণ্টা শুকনা পাতলা কাপড়ে বেঁধে রেখে দিলে বীজের অঙ্কুর বের হয়। বীজতলায় পচা গোবর সার দিয়ে ঝুরঝুরে করে তৈরি করতে হয়। বীজতলায় আগাছা নিড়ানোসহ অন্যান্য পরিচর্যা করতে হয়। চারার বয়স ৪০-৪৫ দিন হলে মূল জমিতে লাগানোর উপযোগী হয়।

চারা তোলার পর ওপর থেকে প্রায় এক-তৃতীয়াংশ ছেঁটে ফেলে দিয়ে লাগাতে হয়। চারা রোপণের দুই মাস পরেই প্রথমে পাতা সংগ্রহ করা যায়। মে-জুন মাসে বীজ বপন করলে নভেম্বর পর্যন্ত গাছ থেকে গড়ে ২-৩ বার পাতা খাওয়ার জন্য সংগ্রহ করা সম্ভব। প্রথম সংগ্রহের ২০-২৫ দিন পরপর পাতা সংগ্রহ করা যায়। গাছটি তুলে মূল এবং হলুদ পাতা কেটে পানিতে ধুয়ে আঁটি বেঁধে বাজারে বিক্রি করা যায়।

মসলা গবেষণা উপকেন্দ্র, ফরিদপুরের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. আলাউদ্দিন খান জানান, মে থেকে নভেম্বর মাসে যখনই বীজ বপন করা হোক না কেন, মূল জমিতে রোপণের পর ডিসেম্বর মাসে পাতা পেঁয়াজের ফুল আসা শুরু করে। সব আম্বেলের বীজ একসঙ্গে পরিপক্ব হয় না। তাই কয়েক দিন পরপর পরিপক্ব আম্বেল সংগ্রহ করতে হবে। একটি আম্বেলের মধ্যে শতকরা ১০-১৫টি ফল ফেটে কালো বীজ দেখা গেলে আম্বেলটি সংগ্রহ করতে হবে। মাঠে সব আম্বেল সংগ্রহ করতে ৪-৫ দিন সময় লাগতে পারে।

সামান্য দেরিতে বীজ সংগ্রহ করলে আম্বেল থেকে সমস্ত বীজ ঝরে মাটিতে পড়ে যাবে। পাতা পেঁয়াজের বীজ সাধারণত ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহ থেকে এপ্রিল পর্যন্ত সংগ্রহ করা হয়ে থাকে। বীজ আম্বেল সংগ্রহ করার পর রোদে শুকিয়ে হালকা লাঠি দিয়ে পিটিয়ে বীজ বের করতে হবে। পরে বীজ রোদে ভালোভাবে শুকিয়ে ছিদ্রবিহীন পলিথিন বা টিনের পাত্রে সংরক্ষণ করা উত্তম। হেক্টরপ্রতি ৭০০-৯০০ কেজি বীজ উৎপাদন করা সম্ভব।