নারায়ণগঞ্জে সাত খুন মামলার প্রধান আসামী নূর হোসেনকে দেশে ফিরিয়ে আনার পর থেকেই তাকে রিমান্ডের দাবিতে মানববন্ধন করেছে মামলার বাদী পক্ষ। এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতা শামীম ওসমান বলেন, এই মামলাটির চার্জশিট হয়ে গেছে। আমি মনে করি জনগণের প্রশান্তির জন্য যদি আদালত মনে করেন মামলাটির অধিকতর তদন্তের প্রয়োজন আছে এবং কোন সংক্ষুব্ধ গ্রুপ যদি প্রশ্ন করে সে ক্ষেত্রে সিএফডিসি ল’ অনুযায়ি আদালতের নির্দেশে নূর হোসেনকে একবার কেন দশবার রিমান্ডে নেয়া যায়। তিনি বলেন, মামলটির চার্জশিট হওয়ার প্রেক্ষিতে অ্যাডভোকেট চন্দন দা’র বাদীপক্ষ খুব সন্তুষ্ট এবং সেই বক্তব্য তারা খোলাখুলি জনগণের সামনে বলেছেন। আরেকটি পক্ষ এখনো সংক্ষুব্ধ তারা এ ব্যাপারে এখনো সন্তুষ্ট নয়। যেহেতু এরা সন্তুষ্ট নয় তাই তারা নিম্ন আদালতে আপিল করেছিলেন। আপিলের প্রেক্ষিতে নিম্ন আদালত, জজ কোর্ট উভয়ই একই ভাবে বলেছেন যে চার্জশিট যথাযথভাবেই প্রণয়ন করা হয়েছে। সেক্ষেত্রে নূর হোসেনকে জিজ্ঞাসা করা হবে কি হবে না এটা সম্পূর্ণ নির্ভর করবে আদালতের ওপর। বেসরকারি টিভি চ্যানেল ‘ইনডিপেন্ডেন্টে’ প্রচারিত ‘আজকের বাংলাদেশ’ অনুষ্ঠানে শামীম ওসমান এসব কথা বলেন। খালেদ মুহিউদ্দীনের সঞ্চালনায় ‘নূর হোসেন’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন আজকের খবরের সম্পাদক প্রণব সাহা। শামীম ওসমান বলেন, ‘মামলাটিতে প্রধান আসামী বলতে কোন আসামী নাই। আসামী সবাই। আসামী কখনো প্রধান হয় না। এখানে ১৬৪ ধারায় লেখা আছে প্রধানত যিনি ঘটনাটা ঘটিয়েছেন তার নাম মেজর আরিফ। মেজর আরিফ ১৬৪ ধারায় বলেছেন আমরা নূর হোসেনকে দেড়মাস আগে সোর্স হিসাবে নিয়োগ করেছিলাম। নূর হোসেন জানাবেন নজরুল কোথায় আছে এবং পরবর্তীতে আমরা ট্রাক স্টেশনে গিয়ে জায়গাটা খালি করতে বলি। ১৬৪ ধারায় মেজর আরিফের স্বীকারোক্তির পর চার্জশিট হয়। এ ক্ষেত্রে আদালতের নির্দেশে একবার কেন দশবার রিমান্ডে নেয়া যায়।’ তিনি আরও বলেন, ‘পারিবারিকভাবে নজরুল আমার ছেলের মত ছিল এবং ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নজরুলকে সমর্থন দিয়ে পাশ করিয়েছিলাম হোসেনের বিরুদ্ধে।’ নূর হোসেন শামীম ওসমানের লোক কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে শামীম ওসমান বলেন, নূর হোসেন আওয়ামী লীগের স্থানীয় পর্যায়ের একজন সহ-সভাপতি। সে একজন কাউন্সিলর, একজন ইউনিয়ন চেয়ারম্যান। নূর হোসেন আমার নয় আমাদের লোক। নজরুল ও নূর হোসেন তার ডান হাত বাম হাত হওয়ার মত এমন পর্যায়ে তারা যেতে পারেনি বলে উল্লেক করে তিনি বলেন, আমার আরও অনেক বড় বড় হাত আছে। নূর হেসেনকে একটা ইউনিয়ন ভিত্তিক গুন্ডা ধরা যেতে পারে। কিন্তু তাকে ওসামা বিন লাদেন বানিয়ে দেয়া হচ্ছে। শুধু আমার সাথেই নয় আইভি রহমানসহ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় অনেক বড় বড় নেতা কর্মীদের সাথেও নূর হোসেনের ছবি দেখবেন। কারণ সে একজন জনপ্রতিনিধি ছিল। তিনি আরো বলেন, ‘আমিই প্রথম ব্যক্তি যে অপহরণ ঘটনার ১ ঘণ্টার মধ্যে টেলিভিশন ক্যামেরার সামনে বলেছিলাম যে এই ঘটনাটিতে হয়তো আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর দুই একজন কর্মকর্তা জড়িত রয়েছে। হয়তো উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ তা জানেন না।’ শামীম ওসমান বলেন, ‘বিষয়টি আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহোদয়কে, র্যাবের ডিজি-এডিজিকে জানিয়েছিলাম। যে যে জায়গায় জানালে নজরুলকে নিরাপদে রাখা যায় সে সব জায়গাগুলোতে আমি যোগাযোগ করেছি এবং সেটা নজরুলের পরিবারের সামনে বসেই। এমনকি নজরুলের শ্যালক ও পরিবারের অন্য সদস্যের সামনে নূর হোসেনকেও আমি ডেকে নিয়েছিলাম।’ ভারতে পালিয়ে যাবার আগে নূর হোসেনের সাথে টেলিফোনে যোগাযোগের ব্যাপারে শামীম ওসমান বলেন, ‘বেশিরভাগ গণমাধ্যমে টেলিফোন কথনের খ-িত অংশ প্রচার করা হয়েছে যার ফলে আমার সম্পর্কে ভুল ধারণার সৃষ্টি হয়েছে।’
সংবাদ শিরোনাম
নূর হোসেন প্রসঙ্গে অবশেষে মুখ খুললেন শামীম ওসমান
- Reporter Name
- আপডেট টাইম : ১০:২৯:৪৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ নভেম্বর ২০১৫
- ২০৮ বার
Tag :
জনপ্রিয় সংবাদ