ঢাকা ১০:১৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১২ জানুয়ারী ২০২৫, ২৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

উৎসাহী বুড়ির বাঁধে মাছ ধরার মহাউৎসব

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:০৫:৫৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২০ অক্টোবর ২০১৯
  • ২৩৬ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ  উৎসাহী মাছ শিকারী মানুষ বছর জুড়ে অপেক্ষা করেন দিনটির জন্য। গতকাল শনিবার সকালে বাঁধের গেট খুল দেয়ায় এই মাছ ধরার উৎসবে যোগ দিয়েছেন আশেপাশের গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ। প্রতিবছরের মতো এবারও ঠাকুরগাঁও শুক নদীর তীরে বুড়ির বাঁধে চলছে মাছ ধরা উৎসব।
এ যেন পানি কাদায় মাখামাখি এক প্রাণের মেলা। সকালে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আকচা ও চিলারং ইউনিয়নের শুক নদীর উপর নির্মিত বুড়ির বাঁধ এলাকায় গেলে দেখা যায়, অসংখ্য মানুষ মাছ ধরতে ব্যস্ত। এদের মধ্যে নারী, পুরুষ ও শিশু রয়েছে। বাদ যাননি বৃদ্ধ-বৃদ্ধারাও। কারও হাতে পলো, কারও হাতে চাবিজাল, খেয়াজাল, টানাজাল বা ছেঁকাজাল। যাদের মাছ ধরার সরঞ্জাম নেই তারাও বসে নেই। খালি হাত দিয়েই কাঁদার মধ্যে মাছ খুঁজছেন। আর নদীর পাড়ে হাজারো মানুষ ভিড় জমিয়েছে মাছ ধরা দেখতে। অনেকে মাছ না ধরলেও বন্ধু-বান্ধব ও স্বজনদের উৎসাহ দিচ্ছেন।
১৯৮০ সালের দিকে শুষ্ক মৌসুমে এ অঞ্চলের কৃষি জমির সেচ সুবিধার জন্য সদর উপজেলার আকচা ও চিলারং ইউনিয়নের মাঝামাঝি এলাকায় শুক নদীর উপর এক কপাট নির্মাণ করা হয়। কপাটে আটকে থাকা সেই পানিতে প্রতিবছর মৎস্য অধিদফতরের উদ্যোগে বিভিন্ন জাতের মাছের পোনা ছাড়া হয়। আর শীতের শুরুতেই বাঁধের পানি ছেড়ে দেওয়ার পর মাছ ধরার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। এভাবেই প্রতিবছর চলে বুড়ির বাঁধে মাছ ধরার উৎসব।
সদর উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়ন থেকে মাছ ধরতে এসেছেন সাহাবুদ্দিন। তিনি বলেন, মাছ ধরা উৎসবের কথা শুনে গতকাল রাতে এখানে এসেছি। পুঁটি মাছ,গুড়া মাছ, রুই মাছ সহ বিভিন্ন প্রকারের মাছ জালে আটকা পড়তে দেখেছি।
আব্দুল কাদের নামের এক মাছ শিকারি বলেন, আমরা প্রতিবছর এই সময় বুড়ির বাঁধে মাছ ধরতে আসি। এখানে দেশি-বিদেশিসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ পাওয়া যায়।
শীবগঞ্জ এলাকা থেকে মাছ ধরতে আসা মনোয়ার মনু বলেন, সকাল থেকেই মাছ ধরছি। জাল নিয়ে আমরা ৪ জন এসেছি। মাছ খুব একটা ধরা পড়ছে না । কারণ অনেক মানুষ জাল ফেলেছে। তারপরও চেষ্টা করছি। যা পাবো বিক্রি করে দিবো।
ঠাকুরগাঁও আকচা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সুব্রত কুমার বর্মণ জানান, মাছ ধরার উৎসবকে কেন্দ্র করে প্রতিবছরের মতো এবারও মানুষের ঢল নেমেছে। এখানে কেউ মাছ ধরতে আসেন, কেউ বা আসেন মাছ ধরা দেখতে আবার কেউ আসেন কম দামে মাছ কিনতে। সেই যাই হোক এ সময় পুরো এলাকা উৎসবমুখর হয়ে উঠে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

উৎসাহী বুড়ির বাঁধে মাছ ধরার মহাউৎসব

আপডেট টাইম : ১০:০৫:৫৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২০ অক্টোবর ২০১৯

হাওর বার্তা ডেস্কঃ  উৎসাহী মাছ শিকারী মানুষ বছর জুড়ে অপেক্ষা করেন দিনটির জন্য। গতকাল শনিবার সকালে বাঁধের গেট খুল দেয়ায় এই মাছ ধরার উৎসবে যোগ দিয়েছেন আশেপাশের গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ। প্রতিবছরের মতো এবারও ঠাকুরগাঁও শুক নদীর তীরে বুড়ির বাঁধে চলছে মাছ ধরা উৎসব।
এ যেন পানি কাদায় মাখামাখি এক প্রাণের মেলা। সকালে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আকচা ও চিলারং ইউনিয়নের শুক নদীর উপর নির্মিত বুড়ির বাঁধ এলাকায় গেলে দেখা যায়, অসংখ্য মানুষ মাছ ধরতে ব্যস্ত। এদের মধ্যে নারী, পুরুষ ও শিশু রয়েছে। বাদ যাননি বৃদ্ধ-বৃদ্ধারাও। কারও হাতে পলো, কারও হাতে চাবিজাল, খেয়াজাল, টানাজাল বা ছেঁকাজাল। যাদের মাছ ধরার সরঞ্জাম নেই তারাও বসে নেই। খালি হাত দিয়েই কাঁদার মধ্যে মাছ খুঁজছেন। আর নদীর পাড়ে হাজারো মানুষ ভিড় জমিয়েছে মাছ ধরা দেখতে। অনেকে মাছ না ধরলেও বন্ধু-বান্ধব ও স্বজনদের উৎসাহ দিচ্ছেন।
১৯৮০ সালের দিকে শুষ্ক মৌসুমে এ অঞ্চলের কৃষি জমির সেচ সুবিধার জন্য সদর উপজেলার আকচা ও চিলারং ইউনিয়নের মাঝামাঝি এলাকায় শুক নদীর উপর এক কপাট নির্মাণ করা হয়। কপাটে আটকে থাকা সেই পানিতে প্রতিবছর মৎস্য অধিদফতরের উদ্যোগে বিভিন্ন জাতের মাছের পোনা ছাড়া হয়। আর শীতের শুরুতেই বাঁধের পানি ছেড়ে দেওয়ার পর মাছ ধরার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। এভাবেই প্রতিবছর চলে বুড়ির বাঁধে মাছ ধরার উৎসব।
সদর উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়ন থেকে মাছ ধরতে এসেছেন সাহাবুদ্দিন। তিনি বলেন, মাছ ধরা উৎসবের কথা শুনে গতকাল রাতে এখানে এসেছি। পুঁটি মাছ,গুড়া মাছ, রুই মাছ সহ বিভিন্ন প্রকারের মাছ জালে আটকা পড়তে দেখেছি।
আব্দুল কাদের নামের এক মাছ শিকারি বলেন, আমরা প্রতিবছর এই সময় বুড়ির বাঁধে মাছ ধরতে আসি। এখানে দেশি-বিদেশিসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ পাওয়া যায়।
শীবগঞ্জ এলাকা থেকে মাছ ধরতে আসা মনোয়ার মনু বলেন, সকাল থেকেই মাছ ধরছি। জাল নিয়ে আমরা ৪ জন এসেছি। মাছ খুব একটা ধরা পড়ছে না । কারণ অনেক মানুষ জাল ফেলেছে। তারপরও চেষ্টা করছি। যা পাবো বিক্রি করে দিবো।
ঠাকুরগাঁও আকচা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সুব্রত কুমার বর্মণ জানান, মাছ ধরার উৎসবকে কেন্দ্র করে প্রতিবছরের মতো এবারও মানুষের ঢল নেমেছে। এখানে কেউ মাছ ধরতে আসেন, কেউ বা আসেন মাছ ধরা দেখতে আবার কেউ আসেন কম দামে মাছ কিনতে। সেই যাই হোক এ সময় পুরো এলাকা উৎসবমুখর হয়ে উঠে।