হাওর বার্তা ডেস্কঃ টাঙ্গাইলে ১১৮টি গ্রাম আদালতের মাধ্যমে ন্যায় বিচার পাচ্ছে মানুষ। দ্রুত অভিযোগ নিষ্পত্তি ও বিনা খরচে প্রতিকার পাওয়ায় গ্রাম আদালতে নির্ভরতা বাড়ছে বিচার প্রার্থীদের।
আইনজীবিরা জানান, ছোট ছোট সমস্যাগুলো গ্রাম আদালতে নিষ্পত্তি হওয়ায় বিচার প্রার্থীদের ভোগান্তি কমেছে। আদালতের ওপর চাপও কমেছে।
টাঙ্গাইলের ১১৮টি ইউপির সবগুলোতে গ্রাম আদালত চালু আছে। এ কারণে প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষও এ আদালতের আইনি সুবিধা পাচ্ছে। বিচার প্রার্থীদের পছন্দের ইউপি সদস্যদের নিয়ে গঠন করা হয় বিচারক প্যানেল, সভাপতি হিসেবে থাকেন চেয়ারম্যান। তারা অভিযোগ নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে বিরোধ নিষ্পত্তি করেন। নিজ নিজ ইউপিতে বিচারকাজ হওয়ায় যাতায়তের খরচও নেই। তাই খুশি মনেই গ্রাম আদালতে আসেন বিচার প্রার্থীরা।
সদর উপজেলার দাইন্যা ইউপির পাচকাহনিয়া গ্রামের মো. আনিসুর রহমান বলেন, সাত মাসে আগে আমার প্রতিবেশী জামাল হোসেনের সঙ্গে ৮০ হাজার টাকা নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি হয়। গত সপ্তাহে গ্রাম আদালত এ সমস্যার সমাধান করেছে। এতে আমাদের কোনো ভোগান্তি পোহাতে হয়নি।
দাইন্যা ইউপি সচিব মো. আরিফুর রহমান বলেন, ইউপি চেয়ানম্যানের সভাপতিত্বে পাঁচ সদস্যের একটি বোর্ড গ্রাম আদালত পরিচালনা করে। সভাপতির কাছে আসা অভিযোগের ভিত্তিতে পরবর্তী নোটিশের মাধ্যমে বাদী-বিবাদীকে হাজির করে সমাধান দেয়া হয়।
দাইন্যা ইউপি চেয়ারম্যান মো. লাভলু মিয়া লাভু বলেন, মানুষ খুব সহজেই গ্রাম আদালতে সমাধান পায়। এখানে আইনজীবী লাগে না। কোনো আর্থিক লেনদেনও নেই। এ কারণে গ্রাম আদালতের প্রতি মানুষের আস্থা বেড়েছে। আমরা খুব সহজেই মানুষের অভিযোগ নিষ্পত্তি করতে পারি।
টাঙ্গাইলের মানবাধিকার কর্মী অ্যাডভোকেট আবদুল করিম মিয়া বলেন, গ্রাম আদালত পুরোপুরি কার্যকর হলে দেশের আদালতগুলোতে মামলার জটিলতা কমবে।
আরেক আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. আবদুর রশিদ বলেন, দেশে ১৯৭৬ সালে গ্রাম আদালত চালু হয়। বর্তমান প্রেক্ষাপটে গ্রাম আদালতের খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সারা দেশেই গ্রাম আদালতকে আরো বেগবান করতে হবে।
স্থানীয় সরকারের উপ-পরিচালক শরীফ নজরুল ইসলাম বলেন, টাঙ্গাইলে ১২টি উপজেলার ১১৮টি ইউপিতে গ্রাম আদালত রয়েছে। প্রতিমাসে গ্রাম আদালতের প্রতিবেদন আমাদের কাছে আসে। আমরা এসব রিপোর্ট মূল্যায়ন করি।