হাওর বার্তা ডেস্কঃ আনুষ্ঠানিকভাবে এখনও বিদায় না বললেও সবাই ধরে নিয়েছেন মাশরাফি মুর্তজার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার একেবারে শেষ পর্যায়ে। তার অবসরের পর বাংলাদেশ দলের ওয়ানডে ফরম্যাটের হাল ধরার জন্য কে উপযুক্ত সেটা নিয়েই বোর্ডের মধ্যে আলোচনা চলছে।
ওয়ানডে দলের সহ-অধিনায়ক হওয়ার কারণে সাকিব আল হাসানকেই পরবর্তী অধিনায়ক মনে করছেন অনেকে। তবে বোর্ডের একটি বড় অংশ সাকিবকে অধিনায়ক হিসেবে চায় না। আবার দলের মধ্যে গ্রুপিংয়ের খবরও শোনা যাচ্ছে। তাই সাকিবের সঙ্গে অধিনায়ক হওয়ার দৌড়ে আছেন তামিম ইকবাল ও মুশফিকুর রহিমও।
একটি সূত্র জানিয়েছে, বাংলাদেশের পরবর্তী ওয়ানডে অধিনায়ক হিসেবে মাশরাফির পছন্দ তামিম ইকবাল। এছাড়া বোর্ডের কয়েকজন পরিচালকেরও তার ওপর সুনজর রয়েছে। ইনজুরির কারণে শ্রীলংকা সফরে মাশরাফি যেতে না পারায় তামিমকেই ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক হিসেবে পাঠানো হয়েছিল।
লংকা সফরটা বোর্ডের জন্য পরীক্ষামূলক ছিল। কিন্তু সেই পরীক্ষায় উতরাতে পারেননি তামিম। এ সফরের ব্যর্থতা অধিনায়ক হওয়ার দৌড়ে অনেকটাই পিছিয়ে দিয়েছে তামিমকে। এছাড়া এই বাঁ-হাতি ওপেনারের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সও ভালো নয়। এদিকে এর আগে মুশফিকের হাতে নেতৃত্ব দিয়ে বিসিবির ভালো অভিজ্ঞতা হয়নি। তখনই কথা উঠেছিল দলকে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা মুশফিকের নেই।
আপাতত পারফরম্যান্স এবং অভিজ্ঞতায় সবার চেয়ে এগিয়ে সাকিবই। এমনকি বাংলাদেশের বিদায়ী কোচ স্টিভ রোডসও মাশরাফির চেয়ে সাকিবকে টেকনিক্যালি এগিয়ে রেখেছেন।
বাংলাদেশের কোচ থাকাকালীন তিনি বলেছিলেন, ‘মাশরাফি দলকে দারুণভাবে উজ্জীবীত করতে পারে। তার দারুণ নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা রয়েছে। তবে টেকনিক্যালি অবশ্যই সাকিব এগিয়ে। খুব দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে পারে সে। চাপের মুখে সহজে ভেঙে পড়ে না।’
বিসিবির একটি সূত্র জানিয়েছে, চন্ডিকা হাথুরুসিংহে যদি আবার বাংলাদেশের কোচ হয়ে আসেন তাহলে সাকিবই হবেন ওয়ানডে দলের অধিনায়ক। যদিও সাকিব ও হাথুরুসিংহের সম্পর্ক কখনই ভালো ছিল না। তবে হাথুরুসিংহেরও অধিনায়ক হিসেবে সাকিবকেই পছন্দ ছিল।
নিয়ম অনুযায়ী সহ-অধিনায়কেরই অধিনায়ক হওয়ার কথা। কিন্তু বাংলাদেশে এর আগে অনেকবারই সেই নিয়মের ব্যতিক্রম দেখা গেছে।
অধিনায়ক নিয়ে বিকেএসপির সাবেক কোচ নাজমুল আবেদিন ফাহিম বলেন, ‘সিনিয়র বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার রয়েছেন দায়িত্ব নেয়ার মতো। তবে ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে নতুন অধিনায়ককে আরও বেশি দায়িত্বশীল হতে হবে। কখন কাকে খেলানো যাবে, কার পরিবর্তে নতুন খেলোয়াড়ের অপশন তৈরি করতে হবে-এসব নিয়ে অধিনায়ককে ভাবতে হবে। দলের উন্নতির জন্য এ মুহূর্তে ভালো নেতৃত্ব খুবই প্রয়োজন।’
বাংলাদেশের সবচেয়ে সফল ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি। ২০১৪ সালে নতুন করে তিনি অধিনায়ক হওয়ার পর থেকেই বদলে যেতে শুরু করে বাংলাদেশের ক্রিকেটের চিত্র।
বিসিবির এক পরিচালক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘এই মুহূর্তে কে অধিনায়ক হওয়ার যোগ্য সেটা হয়তো সবাই অনুমান করতে পারেন। কিন্তু নেতা হতে গেলে অনেক বিষয়ের ওপর চোখ রাখতে হয়। মাশরাফি না থাকলে বিসিবি সেগুলো বিবেচনা করেই নতুন কাউকে দায়িত্ব দেবে।’ ঘরের মাটিতে একটি ওয়ানডে সিরিজ আয়োজন করে মাশরাফিকে বিদায় জানানোর পরিকল্পনা করছে বিসিবি।