হাওর বার্তা ডেস্কঃ চাল কুমড়া আমাদের দেশে জনপ্রিয় একটি সবজি। ঘরে চালে,সবজি মাচায় এবং জমিতেও চাষ হচ্ছে এই কুমড়া। চাল কুমড়া তরকারি হিসেবে খাওয়া ছাড়াও মোরব্বা, হালুয়া, পায়েস ও কুমড়া বড়া তৈরি করে খাওয়ার প্রচলন রয়েছে। চাল কুমড়ার অন্য নাম জালি কুমড়া বা ছাচি কুমড়া। তবে শহর এলাকায় জালি কুমড়া নামেই বেশি পরিচিত।
চাল কুমড়ার ইংরেজী নাম Wax Gourd বা Ash Gourd এবং বৈজ্ঞানিক নাম Benincasa hispida। কচি অবস্থায় সবুজ রঙের এবং এদের গাঁয়ে হালকা কাঁটা থাকে। পূর্ণতা যখন পেতে থাকে তখন কাঁটাও কমে এবং এর এক সময়ে সবুজ রঙের ওপর চুনের মতো সাদা রং ধারণ করে। এর কচি পাতা ও ডগা শাক হিসেবে খাওয়ার প্রচলন রয়েছে। চাল কুমড়া একটি পুষ্টিকর সবজি এতে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন, মিনারেল, শর্করা ও ফাইবার রয়েছে তাই চাল কুমড়ার উপকারিতা অনেক। যক্ষ্মা, কোষ্ঠকাঠিন্য ও গ্যাস্ট্রিকসহ বহু রোগের উপশম করে চাল কুমড়া।
চাল কুমড়া নানা পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ। প্রতি ১০০ গ্রাম চাল কুমড়ায় রয়েছে–খাদ্যশক্তি ১৩ কিলোক্যালরি, আমিষ ০.৪ গ্রাম, শর্করা ৩ গ্রাম, ফাইবার ২.৯ গ্রাম, চর্বি ০.২ গ্রাম, ভিটামিন সি ১০.১ মিলিগ্রাম, পটাশিয়াম ১৫০ মিলিগ্রাম, ম্যাগনেসিয়াম ১১ মিলিগ্রাম,ক্যালসিয়াম ২৬ মিলিগ্রাম, সোডিয়াম ২ মিলিগ্রাম, কোলেস্টেরল ০ মিলিগ্রাম, লৌহ ০.২ মিলিগ্রাম, জিংক ০.৭ মিলিগ্রাম, ফসফরাস ১৩ মিলিগ্রাম।
চাল কুমড়ার উপকারিতা
চাল কুমড়া এন্টি মাইক্রোবিয়াল এজেন্ট হিসাবে পেট এবং অন্ত্রের ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া দূর করতে সাহায্য করে। এটি গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল ইনফেকশন বা আলসার রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করে। এটি মসলাযুক্ত খাবার বা দীর্ঘদিনের জন্য উপবাসের কারণে পাকস্থলিতে তৈরি হওয়া এসিড দূর করতে সাহায্য করে।
চাল কুমড়া মানসিক রোগীদের জন্য পথ্য হিসেবে কাজ করে। কারণ এটি ব্রেইনের নার্ভ ঠাণ্ডা রাখে। এই জন্য চাল কুমড়াকে ব্রেইন ফুড বলা হয়। প্রতিদিন চাল কুমড়ার রস খেলে যক্ষ্মা রোগের উপসর্গ কেটে যায়। চাল কুমড়া রক্তপাত বন্ধ করতে সাহায্য করে, যাদের কাশির সঙ্গে রক্ত বের হয়, এমন ক্ষেত্রে চাল কুমড়ার রস খেলে রক্ত বের হওয়া থেমে যায়।
চাল কুমড়া শরীরের ওজন ও মেদ কমাতে অনেক উপকারি একটি সবজি। এটি রক্ত নালীতে রক্ত চলাচল সহজতর করে। চাল কুমড়া অধিক ক্যালরি যুক্ত খাবারের বিকল্প হিসেবেও খাওয়া যায়।
মুখের ত্বক এবং চুলের যত্নেও চাল কুমড়ার রস অনেক সাহায্য করে। চাল কুমড়ার রস নিয়মিত চুল ও ত্বকে মাখলে চুল চকচকে হয় এবং ত্বক সুন্দর হয়, বয়সের ছাপ প্রতিরোধ করতেও চাল কুমড়া সাহায্য করে।
এছাড়া চাল কুমড়ার বিচি গ্যাস্ট্রিক রোগের উপশম করে। কোষ্ঠকাঠিন্য, পেট ফাঁপা এবং প্রস্রাব কোন কারণে অনিয়মিত হয়ে গেলে তখন চাল কুমড়া খেলে অনেক উপকার পাওয়া যায়।