ঢাকা ১০:১০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

খেলাপি ঋণ পরিশোধে বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন নির্দেশনা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৬:৪০:১৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪
  • ১৬ বার

ব্যাংক খাত সংস্কারের জন্য ইতোমধ্যে সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। তারই অংশ হিসেবেই আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী খেলাপি ঋণের নীতিমালায় কিছুটা পরিবর্তন এনে নির্দেশনা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বুধবার (২৭ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। ২০২৫ সালের ১ এপ্রিল থেকে নতুন এ নির্দেশনা কার্যকর হবে।

প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, ঋণের কিস্তি পরিশোধের নির্ধারিত সময়ে পরিশোধ না করলেই সেই ঋণ খেলাপি হবে। মেয়াদোত্তীর্ণের সময়সীমা ৩ থেকে ৬ মাসের মধ্যে হলে নিম্নমান, ৬ থেকে ১২ মাসের মধ্যে সন্দেহজনক ও ১২ মাসের অধিক হলে মন্দ ঋণ হবে নিয়মিত ঋণের জন্য ১ শতাংশ এবং খেলাপির বিপরীতে সর্বোচ্চ ১০০ শতাংশ প্রভিশন সংরক্ষণ করতে বলা হয়েছে। তবে এককালীন পরিশোধ করে পুনঃতফসিলের মাধ্যমে ঋণ নিয়মিত বিষয়ে প্রজ্ঞাপনে কোনো ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, বিশ্বব্যাপী ব্যাংকিং চর্চার প্রচলিত রীতি ব্যাসেল-৩ নীতিমালার আলোকে ঋণ শ্রেণিকরণ অনুযায়ী সব ধরনের ঋণের ক্ষেত্রে ঋণ পরিশোধ কিংবা সমন্বয়ের জন্য নির্ধারিত দিনের পরবর্তী দিন থেকে ঋণ মেয়াদোত্তীর্ণ হিসেবে গণ্য হবে।

খেলাপিকৃত ঋণের ক্ষেত্রে নিম্নমান হলে প্রভিশনের ভিত্তির ওপর ২০ শতাংশ, সন্দেহজনক হলে প্রভিশনের ভিত্তির ওপর ৫০ শতাংশ ও মন্দ বা ক্ষতিজনক হলে প্রভিশনের ভিত্তির ওপর ১০০ শতাংশ স্পেসিফিক প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হবে।

প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, যদি কোনো ঋণ বা অগ্রিম সাব-স্টান্ডার্ড এবং সন্দেহজনক মানে খেলাপি করা হয়, তাহলে ওই ঋণের ওপর অর্জিত সুদ আয় হিসাবে জমা করার পরিবর্তে সুদের সাসপেন্স হিসাবে জমা করতে হবে। কোনো ঋণ অগ্রিম ক্ষতিজনক খেলাপি হলে একই হিসাবে সুদের চার্জ করা বন্ধ হয়ে যাবে। কোনো বিশেষ কারণে কোনো ক্ষতিজনক মানে ঋণ অ্যাকাউন্টে কোনো সুদ চার্জ করা হলে সাসপেন্স অ্যাকাউন্টে তা সংরক্ষণ করা হবে। এ ক্ষেত্রে আয় হিসাবে জমা করা যাবে না। যদি খেলাপি ঋণ বা এর কিছু অংশ পুনরুদ্ধার হলে তা ঋণ সমন্বয় হিসাবে দেখানো যাবে।

তবে বিদ্যমান পরিস্থিতিতে ব্যাংকের ঋণ পরিশোধে বিশেষ সুবিধা চান উদ্যোক্তারা। ডলারের বিনিময় হার বৃদ্ধির কারণে এ খাতে বাড়তি ঋণের যে দায় তৈরি হয়েছে, তা নিয়মিত ব্যাংক ঋণের বাইরে রেখে ১৬ বছরে কিস্তিতে পরিশোধের সুযোগ দেওয়ার দাবি করেছেন উদ্যোক্তারা। কেন্দ্রীয় ব্যাংক আট বছরের সময় দিয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত সেপ্টেম্বর শেষে দেশের ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের পরিমাণ ২ লাখ ৮৪ হাজার ৯৭৭ কোটি ৩১ লাখ টাকা। এ সময় ব্যাংকগুলোর মোট বিতরণ করা ঋণ ১৬ লাখ ৮২ হাজার কোটি টাকা।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

খেলাপি ঋণ পরিশোধে বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন নির্দেশনা

আপডেট টাইম : ০৬:৪০:১৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪

ব্যাংক খাত সংস্কারের জন্য ইতোমধ্যে সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। তারই অংশ হিসেবেই আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী খেলাপি ঋণের নীতিমালায় কিছুটা পরিবর্তন এনে নির্দেশনা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বুধবার (২৭ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। ২০২৫ সালের ১ এপ্রিল থেকে নতুন এ নির্দেশনা কার্যকর হবে।

প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, ঋণের কিস্তি পরিশোধের নির্ধারিত সময়ে পরিশোধ না করলেই সেই ঋণ খেলাপি হবে। মেয়াদোত্তীর্ণের সময়সীমা ৩ থেকে ৬ মাসের মধ্যে হলে নিম্নমান, ৬ থেকে ১২ মাসের মধ্যে সন্দেহজনক ও ১২ মাসের অধিক হলে মন্দ ঋণ হবে নিয়মিত ঋণের জন্য ১ শতাংশ এবং খেলাপির বিপরীতে সর্বোচ্চ ১০০ শতাংশ প্রভিশন সংরক্ষণ করতে বলা হয়েছে। তবে এককালীন পরিশোধ করে পুনঃতফসিলের মাধ্যমে ঋণ নিয়মিত বিষয়ে প্রজ্ঞাপনে কোনো ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, বিশ্বব্যাপী ব্যাংকিং চর্চার প্রচলিত রীতি ব্যাসেল-৩ নীতিমালার আলোকে ঋণ শ্রেণিকরণ অনুযায়ী সব ধরনের ঋণের ক্ষেত্রে ঋণ পরিশোধ কিংবা সমন্বয়ের জন্য নির্ধারিত দিনের পরবর্তী দিন থেকে ঋণ মেয়াদোত্তীর্ণ হিসেবে গণ্য হবে।

খেলাপিকৃত ঋণের ক্ষেত্রে নিম্নমান হলে প্রভিশনের ভিত্তির ওপর ২০ শতাংশ, সন্দেহজনক হলে প্রভিশনের ভিত্তির ওপর ৫০ শতাংশ ও মন্দ বা ক্ষতিজনক হলে প্রভিশনের ভিত্তির ওপর ১০০ শতাংশ স্পেসিফিক প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হবে।

প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, যদি কোনো ঋণ বা অগ্রিম সাব-স্টান্ডার্ড এবং সন্দেহজনক মানে খেলাপি করা হয়, তাহলে ওই ঋণের ওপর অর্জিত সুদ আয় হিসাবে জমা করার পরিবর্তে সুদের সাসপেন্স হিসাবে জমা করতে হবে। কোনো ঋণ অগ্রিম ক্ষতিজনক খেলাপি হলে একই হিসাবে সুদের চার্জ করা বন্ধ হয়ে যাবে। কোনো বিশেষ কারণে কোনো ক্ষতিজনক মানে ঋণ অ্যাকাউন্টে কোনো সুদ চার্জ করা হলে সাসপেন্স অ্যাকাউন্টে তা সংরক্ষণ করা হবে। এ ক্ষেত্রে আয় হিসাবে জমা করা যাবে না। যদি খেলাপি ঋণ বা এর কিছু অংশ পুনরুদ্ধার হলে তা ঋণ সমন্বয় হিসাবে দেখানো যাবে।

তবে বিদ্যমান পরিস্থিতিতে ব্যাংকের ঋণ পরিশোধে বিশেষ সুবিধা চান উদ্যোক্তারা। ডলারের বিনিময় হার বৃদ্ধির কারণে এ খাতে বাড়তি ঋণের যে দায় তৈরি হয়েছে, তা নিয়মিত ব্যাংক ঋণের বাইরে রেখে ১৬ বছরে কিস্তিতে পরিশোধের সুযোগ দেওয়ার দাবি করেছেন উদ্যোক্তারা। কেন্দ্রীয় ব্যাংক আট বছরের সময় দিয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত সেপ্টেম্বর শেষে দেশের ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের পরিমাণ ২ লাখ ৮৪ হাজার ৯৭৭ কোটি ৩১ লাখ টাকা। এ সময় ব্যাংকগুলোর মোট বিতরণ করা ঋণ ১৬ লাখ ৮২ হাজার কোটি টাকা।