ঢাকা ০১:১১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২৫, ৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রিফাত হত্যা মামলার আসামি রিফাত-রিশান কোথায়

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৪:৪২:৫৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩ জুলাই ২০১৯
  • ২৭৪ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ রিফাত হত্যা মামলার প্রধান আসামি সাব্বির আহমেদ নয়ন ওরফে নয়ন বন্ড পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ার পরপরই প্রশ্ন উঠেছে এই মামলার অন্যতম দুই আসামি রিফাত ফরাজী ও রিশান ফরাজীর বিষয়ে।

পুলিশ বলছে যেখানে নয়ন বন্ডের সঙ্গে পুলিশের বন্দুকযুদ্ধ হয়েছে সেখানে আরও ৫ থেকে ৬জন ব্যক্তি উপস্থিত ছিল, যারা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। তবে কি সেখান থেকেই রিফাত ফরাজী ও রিশান ফরাজী পালিয়ে গেছে, নাকি পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে-এমন প্রশ্ন এখন বরগুনাবাসীর মধ্যে আলোচনার বিষয়।

ঘটনার মূল হোতা নয়ন বন্ডের পাশাপাশি এলাকায় নানা অপকর্মে আলোচিত দুলাল ফরাজীর দুই ছেলে রিফাত ও রিশান। স্থানীয়রা বলছেন, আপন দুই ভাইয়ের এমন বখে যাওয়ার পেছনে তাদের অভিভাবকের আস্কারাই দায়ী। মানুষদের হেনস্তা করে টাকা পয়সা কেড়ে ছিনিয়ে নেয়াই ছিল তার ছেলে রিফাত ও রিশানের রুটিন কাজ।  ফরাজীরা দুই ভাই বরগুনা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা দেলোয়ার হোসেনের আত্মীয়। স্থানীয় সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর ছেলের বিরুদ্ধে নয়নকে মদদ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

এঘটনায় এখন পর্যন্ত রিফাত হত্যা মামলায় এজাহারভুক্ত ৪ জন ও হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার সন্দেহে ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা হলেন-বরগুনা পৌর শহরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের অরুণ চন্দ্র সরকারের ছেলে চন্দন, কলেজ রোড এলাকার আয়নাল হকের ছেলে হাসান, ওলি, টিকটক হৃদয়। এছাড়াও হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে বরগুনা সদর উপজেলার পোটকাখালি গ্রামের হাবিবুর রহমানের ছেলে মো. নাজমুল হাসান (১৮), বরগুনা পৌরসভার ধানসিঁড়ি সড়কের নয়া মিয়ার ছেলে তানভীর (২২), সদর উপজেলার নলী মাইঠা গ্রামের আ. লতিফ খানের ছেলে মো. সাগর (১৯) এবং হাজারবিঘা গ্রামের কায়সার মিয়ার ছেলে কামরুল হাসান সাইমুন (২১) ও শ্রাবণ নামের একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

এদিকে এখনো ধরা ছোঁয়ার বাইরে রয়েছে মামলার অন্যতম আসামি রিফাত ফরাজী ও রিশান ফরাজী। তবে পুলিশ বলছে-তারা জাল ছড়িয়ে রেখেছে। নয়ন বন্ড লুকিয়ে থাকতে পারেনি। বাকি আসামিরাও নজরদারির মধ্যে আছে খুব শিগগিরই তাদেরকেও গ্রেপ্তার করা হবে।

বরগুনার পাবলিক পলিসি ফোরামের আহ্বায়ক মো. হাসানুর রহমান ঝন্টু বলেন, পুলিশের কথা শুনে কখনো মনে হয় পুলিশের কাছে রয়েছে রিফাত ফরাজী ও রিশান ফরাজী। আবার কখনো মনে হয় সত্যি বুজি তারা পালিয়েছে। তবে এই দুই আসামির সঠিক অবস্থান পুলিশই নিশ্চিত করে বলতে পারবেন। আমাদের জেলা পুলিশের উপর আস্থা আছে। তারা নিশ্চয় শিগগিরই আমাদের সুসংবাদ শোনাবেন।

এ বিষয়ে বরগুনার পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন জানান, সকল আসামিই আমাদের নজরদারির মধ্যে আছে শিগগিরই সকল আসামিকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হবো। নজরদারির মধ্যে থাকলেও বেশ কিছু টেকনিক্যাল কারণে আমরা চাইলেই গ্রেপ্তার করতে পারি না। আমরা এমন একটা পরিবেশ তৈরি করে তাদের ধরতে চাই যাতে পালানোর আর কোন পথ না থাকে। তবে আপনারা নিশ্চিত থাকতে পারেন রিফাত হত্যা মামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কাউকেই বিন্দুমাত্র ছাড় দেওয়া হবে না।

প্রসঙ্গত, প্রসঙ্গত, গত ২৬ জুন (বুধবার) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে রামদা দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে রিফাত শরীফকে। তার স্ত্রী আয়শা আক্তার মিন্নি হামলাকারীদের বাধা দিয়েও স্বামীকে রক্ষা করতে পারেননি। রিফাতকে কুপিয়ে অস্ত্র উঁচিয়ে এলাকা ত্যাগ করে হামলাকারীরা। তারা চেহারা লুকানোরও কোনও চেষ্টা করেনি। গুরুতর আহত রিফাতকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে ওই দিন বিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

রিফাত হত্যা মামলার আসামি রিফাত-রিশান কোথায়

আপডেট টাইম : ০৪:৪২:৫৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩ জুলাই ২০১৯

হাওর বার্তা ডেস্কঃ রিফাত হত্যা মামলার প্রধান আসামি সাব্বির আহমেদ নয়ন ওরফে নয়ন বন্ড পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ার পরপরই প্রশ্ন উঠেছে এই মামলার অন্যতম দুই আসামি রিফাত ফরাজী ও রিশান ফরাজীর বিষয়ে।

পুলিশ বলছে যেখানে নয়ন বন্ডের সঙ্গে পুলিশের বন্দুকযুদ্ধ হয়েছে সেখানে আরও ৫ থেকে ৬জন ব্যক্তি উপস্থিত ছিল, যারা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। তবে কি সেখান থেকেই রিফাত ফরাজী ও রিশান ফরাজী পালিয়ে গেছে, নাকি পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে-এমন প্রশ্ন এখন বরগুনাবাসীর মধ্যে আলোচনার বিষয়।

ঘটনার মূল হোতা নয়ন বন্ডের পাশাপাশি এলাকায় নানা অপকর্মে আলোচিত দুলাল ফরাজীর দুই ছেলে রিফাত ও রিশান। স্থানীয়রা বলছেন, আপন দুই ভাইয়ের এমন বখে যাওয়ার পেছনে তাদের অভিভাবকের আস্কারাই দায়ী। মানুষদের হেনস্তা করে টাকা পয়সা কেড়ে ছিনিয়ে নেয়াই ছিল তার ছেলে রিফাত ও রিশানের রুটিন কাজ।  ফরাজীরা দুই ভাই বরগুনা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা দেলোয়ার হোসেনের আত্মীয়। স্থানীয় সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর ছেলের বিরুদ্ধে নয়নকে মদদ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

এঘটনায় এখন পর্যন্ত রিফাত হত্যা মামলায় এজাহারভুক্ত ৪ জন ও হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার সন্দেহে ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা হলেন-বরগুনা পৌর শহরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের অরুণ চন্দ্র সরকারের ছেলে চন্দন, কলেজ রোড এলাকার আয়নাল হকের ছেলে হাসান, ওলি, টিকটক হৃদয়। এছাড়াও হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে বরগুনা সদর উপজেলার পোটকাখালি গ্রামের হাবিবুর রহমানের ছেলে মো. নাজমুল হাসান (১৮), বরগুনা পৌরসভার ধানসিঁড়ি সড়কের নয়া মিয়ার ছেলে তানভীর (২২), সদর উপজেলার নলী মাইঠা গ্রামের আ. লতিফ খানের ছেলে মো. সাগর (১৯) এবং হাজারবিঘা গ্রামের কায়সার মিয়ার ছেলে কামরুল হাসান সাইমুন (২১) ও শ্রাবণ নামের একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

এদিকে এখনো ধরা ছোঁয়ার বাইরে রয়েছে মামলার অন্যতম আসামি রিফাত ফরাজী ও রিশান ফরাজী। তবে পুলিশ বলছে-তারা জাল ছড়িয়ে রেখেছে। নয়ন বন্ড লুকিয়ে থাকতে পারেনি। বাকি আসামিরাও নজরদারির মধ্যে আছে খুব শিগগিরই তাদেরকেও গ্রেপ্তার করা হবে।

বরগুনার পাবলিক পলিসি ফোরামের আহ্বায়ক মো. হাসানুর রহমান ঝন্টু বলেন, পুলিশের কথা শুনে কখনো মনে হয় পুলিশের কাছে রয়েছে রিফাত ফরাজী ও রিশান ফরাজী। আবার কখনো মনে হয় সত্যি বুজি তারা পালিয়েছে। তবে এই দুই আসামির সঠিক অবস্থান পুলিশই নিশ্চিত করে বলতে পারবেন। আমাদের জেলা পুলিশের উপর আস্থা আছে। তারা নিশ্চয় শিগগিরই আমাদের সুসংবাদ শোনাবেন।

এ বিষয়ে বরগুনার পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন জানান, সকল আসামিই আমাদের নজরদারির মধ্যে আছে শিগগিরই সকল আসামিকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হবো। নজরদারির মধ্যে থাকলেও বেশ কিছু টেকনিক্যাল কারণে আমরা চাইলেই গ্রেপ্তার করতে পারি না। আমরা এমন একটা পরিবেশ তৈরি করে তাদের ধরতে চাই যাতে পালানোর আর কোন পথ না থাকে। তবে আপনারা নিশ্চিত থাকতে পারেন রিফাত হত্যা মামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কাউকেই বিন্দুমাত্র ছাড় দেওয়া হবে না।

প্রসঙ্গত, প্রসঙ্গত, গত ২৬ জুন (বুধবার) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে রামদা দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে রিফাত শরীফকে। তার স্ত্রী আয়শা আক্তার মিন্নি হামলাকারীদের বাধা দিয়েও স্বামীকে রক্ষা করতে পারেননি। রিফাতকে কুপিয়ে অস্ত্র উঁচিয়ে এলাকা ত্যাগ করে হামলাকারীরা। তারা চেহারা লুকানোরও কোনও চেষ্টা করেনি। গুরুতর আহত রিফাতকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে ওই দিন বিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।