ঢাকা ১০:৩৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম

মোদি ক্ষমতায় আসলে যোগীর রাজ্য ছাড়বেন এই মুসলিমরা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৫:৩৩:০৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ মে ২০১৯
  • ৩২৬ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ভারতের লোকসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণা হবে বৃহস্পতিবার। ইতোমধ্যে প্রকাশিত হওয়া প্রায় সবক’টি বুথ ফেরত জরিপে হিন্দুত্ববাদী বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটকে এগিয়ে রাখা হয়েছে।

এদিকে ফল ঘোষণার আগেই সরকার গঠনে তোড়জোড় শুরু করেছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিজেপি। তবে মোদির নেতৃত্বাধীন জোট ফের সরকার গঠন করলে কপাল পুড়বে উত্তরপ্রদেশের নয়াবাঁসের মুসলিমদের।

তারা ইতোমধ্যে জানিয়ে দিয়েছেন, মোদি ফের সরকার গঠন করলে যোগী আদিত্যনাথের রাজ্য ছেড়ে যাওয়া বিকল্প নেই তাদের।

সংবাদ প্রতিদিন জানায়, উত্তরপ্রদেশের নয়াবাঁসে আগে হিন্দু এবং মুসলমান সম্প্রদায়ের মানুষজন একসঙ্গে বাস করতেন। জন্ম কিংবা মৃত্যু- সবাই জীবনের যেকোনো মুহূর্তে একে অন্যকে পাশে পেতেন।

কিন্তু বর্তমানে সেই ছবি পুরোটাই বদলে গেছে। এখন আর পথ চলতে দেখা হলেও কেউ কারও সঙ্গে কথা বলতে পারেন না। বিপদে কেউ কারো পাশেও থাকেন না। ধর্মের বেড়াজালই যেন এখন মূল ইস্যু। কেন এমন চিত্র?

এই গ্রামেরই বাসিন্দা গুলফাম আলি। তিনি এলাকায় একটি ছোট্ট দোকান চালান। তিনি বলেন, “আগে জীবনের দুঃসময় এবং সুসময়ে হিন্দু-মুসলমান সকলে একসঙ্গে থাকতাম। যেকোনো অনুষ্ঠানে যেমন একসঙ্গে আনন্দ করেছি। তেমনই দুঃখের দিনেও পাশে পেয়েছি। কিন্তু বর্তমানে আমাদের জীবনধারা কেমন যেন বদলে গিয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদি ভারতের প্রধানমন্ত্রী হন। এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হন যোগী আদিত্যনাথ। দুই সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে বিভেদের অন্যতম ‘রূপকার’ তারা দুজনেই।”

বেশ আক্ষেপের সুরে ওই ব্যবসায়ীর অভিযোগ, হিন্দু-মুসলমানের মধ্যে বিভেদ তৈরি করাই মূল লক্ষ্য দুজনের।

এভাবে এই এলাকায় বাস করতে চান না বলেও মন্তব্য করেন গুলফাম আলি। কিন্তু বললেই তো আর বসতভিটা-ব্যবসা ছেড়ে চলে যাওয়া যায় না, তাই যেতে পারছেন না বলে জানান তিনি।

গ্রামের বেশিরভাগ বাসিন্দার বক্তব্য, আতঙ্কে দিন কাটছে তাদের। রোজা পালন করছেন সবাই। অনেকেই বলছেন, রোজা পালন করতেও নাকি বারবার বাধা পাচ্ছেন তারা।

মাদ্রাসায় মাইকের ব্যবহার বন্ধ করতে নাকি চাপ দেওয়া হচ্ছে তাদের। শান্তির জন্য অনেক মাদ্রাসা বাধ্য হয়ে মাইকের ব্যবহার বন্ধও করে দিয়েছে।

হিন্দু সম্প্রদায়ের বেশিরভাগ মানুষ মাদ্রাসায় ব্যবহৃত মাইক বাজানো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় যথেষ্ট খুশি হয়েছেন। রাজনীতিকদের মতে, এমন সুকৌশলে হিন্দুত্ববাদ সকলের মনে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে যে তাতেই তাদের এমন বিরোধিতা।

ধর্মীয় ভেদাভেদকে তাস হিসেবে ব্যবহার করেই দিল্লি দখলের লড়াইয়ের রাস্তায় হেঁটেছে উত্তরপ্রদেশের গেরুয়া শিবির। আদৌ এই কৌশলে সাফল্য মিলবে কিনা, তা জানা যাবে বৃহস্পতিবার।

তবে আবারও বিজেপি ক্ষমতায় আসলে নয়াবাঁস ছাড়ার কথা ইতোমধ্যেই ভেবে ফেলেছেন মুসলিম ধর্মাবলম্বী গ্রামবাসীরা।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

ক্যাটরিনার হাতে ২০ বার থাপ্পড় খেয়েছিলেন ইমরান খান

মোদি ক্ষমতায় আসলে যোগীর রাজ্য ছাড়বেন এই মুসলিমরা

আপডেট টাইম : ০৫:৩৩:০৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ মে ২০১৯

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ভারতের লোকসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণা হবে বৃহস্পতিবার। ইতোমধ্যে প্রকাশিত হওয়া প্রায় সবক’টি বুথ ফেরত জরিপে হিন্দুত্ববাদী বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটকে এগিয়ে রাখা হয়েছে।

এদিকে ফল ঘোষণার আগেই সরকার গঠনে তোড়জোড় শুরু করেছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিজেপি। তবে মোদির নেতৃত্বাধীন জোট ফের সরকার গঠন করলে কপাল পুড়বে উত্তরপ্রদেশের নয়াবাঁসের মুসলিমদের।

তারা ইতোমধ্যে জানিয়ে দিয়েছেন, মোদি ফের সরকার গঠন করলে যোগী আদিত্যনাথের রাজ্য ছেড়ে যাওয়া বিকল্প নেই তাদের।

সংবাদ প্রতিদিন জানায়, উত্তরপ্রদেশের নয়াবাঁসে আগে হিন্দু এবং মুসলমান সম্প্রদায়ের মানুষজন একসঙ্গে বাস করতেন। জন্ম কিংবা মৃত্যু- সবাই জীবনের যেকোনো মুহূর্তে একে অন্যকে পাশে পেতেন।

কিন্তু বর্তমানে সেই ছবি পুরোটাই বদলে গেছে। এখন আর পথ চলতে দেখা হলেও কেউ কারও সঙ্গে কথা বলতে পারেন না। বিপদে কেউ কারো পাশেও থাকেন না। ধর্মের বেড়াজালই যেন এখন মূল ইস্যু। কেন এমন চিত্র?

এই গ্রামেরই বাসিন্দা গুলফাম আলি। তিনি এলাকায় একটি ছোট্ট দোকান চালান। তিনি বলেন, “আগে জীবনের দুঃসময় এবং সুসময়ে হিন্দু-মুসলমান সকলে একসঙ্গে থাকতাম। যেকোনো অনুষ্ঠানে যেমন একসঙ্গে আনন্দ করেছি। তেমনই দুঃখের দিনেও পাশে পেয়েছি। কিন্তু বর্তমানে আমাদের জীবনধারা কেমন যেন বদলে গিয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদি ভারতের প্রধানমন্ত্রী হন। এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হন যোগী আদিত্যনাথ। দুই সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে বিভেদের অন্যতম ‘রূপকার’ তারা দুজনেই।”

বেশ আক্ষেপের সুরে ওই ব্যবসায়ীর অভিযোগ, হিন্দু-মুসলমানের মধ্যে বিভেদ তৈরি করাই মূল লক্ষ্য দুজনের।

এভাবে এই এলাকায় বাস করতে চান না বলেও মন্তব্য করেন গুলফাম আলি। কিন্তু বললেই তো আর বসতভিটা-ব্যবসা ছেড়ে চলে যাওয়া যায় না, তাই যেতে পারছেন না বলে জানান তিনি।

গ্রামের বেশিরভাগ বাসিন্দার বক্তব্য, আতঙ্কে দিন কাটছে তাদের। রোজা পালন করছেন সবাই। অনেকেই বলছেন, রোজা পালন করতেও নাকি বারবার বাধা পাচ্ছেন তারা।

মাদ্রাসায় মাইকের ব্যবহার বন্ধ করতে নাকি চাপ দেওয়া হচ্ছে তাদের। শান্তির জন্য অনেক মাদ্রাসা বাধ্য হয়ে মাইকের ব্যবহার বন্ধও করে দিয়েছে।

হিন্দু সম্প্রদায়ের বেশিরভাগ মানুষ মাদ্রাসায় ব্যবহৃত মাইক বাজানো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় যথেষ্ট খুশি হয়েছেন। রাজনীতিকদের মতে, এমন সুকৌশলে হিন্দুত্ববাদ সকলের মনে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে যে তাতেই তাদের এমন বিরোধিতা।

ধর্মীয় ভেদাভেদকে তাস হিসেবে ব্যবহার করেই দিল্লি দখলের লড়াইয়ের রাস্তায় হেঁটেছে উত্তরপ্রদেশের গেরুয়া শিবির। আদৌ এই কৌশলে সাফল্য মিলবে কিনা, তা জানা যাবে বৃহস্পতিবার।

তবে আবারও বিজেপি ক্ষমতায় আসলে নয়াবাঁস ছাড়ার কথা ইতোমধ্যেই ভেবে ফেলেছেন মুসলিম ধর্মাবলম্বী গ্রামবাসীরা।