ঢাকা ০৬:০৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যে সকল কারণে সাসপেন্ড হলেন সোনাগাজীর সেই ওসি মোয়াজ্জেম

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৩:৪১:১৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ মে ২০১৯
  • ২১৪ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ নুসরাত জাহান রাফি হত্যার ঘটনায় সোনাগাজী থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। ২০১৮ সালের সংশোধিত বিধিমালা (শৃঙ্খলা ও আপিল) অনুযায়ী বুধবার তার বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর। এখন বিভাগীয় মামলার মুখোমুখি হবেন তিনি। পুলিশ মহাপরিদর্শক স্বাক্ষরিত এক আদেশে বলা হয়, সাসপেন্ড থাকাকালীন মোয়াজ্জেম হোসেন পুলিশের রংপুর রেঞ্জের সঙ্গে সংযুক্ত থাকবেন। ওসি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে অদক্ষতা, পুলিশ বিভাগের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ, দায়িত্বে অবহেলা ও অসদাচরণের অভিযোগ আনা হয়েছে। এদিকে, নুসরাতের ঘটনায় ফেনীর পুলিশ সুপার এসএম জাহাঙ্গীর আলম সরকার ও দুই এসআইর বিরুদ্ধে শিগগির ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। পুলিশের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র থেকে গতকাল এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

সোনাগাজীর ঘটনায় পুলিশ সদর দপ্তর তদন্তের জন্য যে কমিটি গঠন করেছিল, সেই প্রতিবেদনে এসপি, ওসিসহ চারজনের বিরুদ্ধে শাস্তির সুপারিশ করা হয়। ওসিকে সাসপেন্ড করার মধ্য দিয়ে তাদের একজনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টি দৃশ্যমান হলো। এর আগে ঘটনার পর ওসিকে প্রত্যাহার করা হয়েছিল।

অভিযোগ রয়েছে, শুরু থেকেই এসপি, এডিএম এবং ওসিসহ স্থানীয় প্রশাসনের দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা ঘটনাটি ভিন্ন খাতে নেওয়ার চেষ্টা চালান। তারা বিষয়টি ধামাচাপা দিয়ে ‘আত্মহত্যা’র নাটক সাজাতে চেয়েছিলেন। স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে ওসি শুরুতেই জানিয়েছিলেন, নুসরাতের ঘটনা আত্মহত্যা হতে পারে। এসপিও শুরু থেকে তার ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে পুরোপুরি ব্যর্থ হন। এ ঘটনার তদন্তে পুলিশ সদর দপ্তরের ডিআইজি এসএম রুহুল আমিন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু সুফিয়াসহ পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। এরই মধ্যে ওই কমিটি তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।

দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন ঘটনার গুরুত্ব অনুধাবনে ব্যর্থ হয়েছে। অনেকে অনুমাননির্ভর বক্তব্য রেখেছে। এতে পুলিশ বাহিনীর ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ হয়। এ ঘটনায় সোনাগাজী থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম ও এসআই ইকবালকে বরখাস্তের সুপারিশ করা হয়। এ ছাড়া এসপি জাহাঙ্গীর আলম সরকার ও এসআই আবু ইউসুফকে নন অপারেশনাল ইউনিটে বদলিরও সুপারিশ করা হয়। তারা সবাই বিভাগীয় মামলার মুখোমুখি হবেন।

তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, যে কোনো মাদ্রাসায় প্রিন্সিপাল নিয়োগের ক্ষেত্রে ওই ব্যক্তির অতীত কর্মকাণ্ড খতিয়ে দেখতে হবে। মানবিক গুণসম্পন্ন ব্যক্তি ছাড়া কাউকে এসব পদে না বসানোর সুপারিশ করা হয়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

যে সকল কারণে সাসপেন্ড হলেন সোনাগাজীর সেই ওসি মোয়াজ্জেম

আপডেট টাইম : ০৩:৪১:১৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ মে ২০১৯

হাওর বার্তা ডেস্কঃ নুসরাত জাহান রাফি হত্যার ঘটনায় সোনাগাজী থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। ২০১৮ সালের সংশোধিত বিধিমালা (শৃঙ্খলা ও আপিল) অনুযায়ী বুধবার তার বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর। এখন বিভাগীয় মামলার মুখোমুখি হবেন তিনি। পুলিশ মহাপরিদর্শক স্বাক্ষরিত এক আদেশে বলা হয়, সাসপেন্ড থাকাকালীন মোয়াজ্জেম হোসেন পুলিশের রংপুর রেঞ্জের সঙ্গে সংযুক্ত থাকবেন। ওসি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে অদক্ষতা, পুলিশ বিভাগের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ, দায়িত্বে অবহেলা ও অসদাচরণের অভিযোগ আনা হয়েছে। এদিকে, নুসরাতের ঘটনায় ফেনীর পুলিশ সুপার এসএম জাহাঙ্গীর আলম সরকার ও দুই এসআইর বিরুদ্ধে শিগগির ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। পুলিশের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র থেকে গতকাল এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

সোনাগাজীর ঘটনায় পুলিশ সদর দপ্তর তদন্তের জন্য যে কমিটি গঠন করেছিল, সেই প্রতিবেদনে এসপি, ওসিসহ চারজনের বিরুদ্ধে শাস্তির সুপারিশ করা হয়। ওসিকে সাসপেন্ড করার মধ্য দিয়ে তাদের একজনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টি দৃশ্যমান হলো। এর আগে ঘটনার পর ওসিকে প্রত্যাহার করা হয়েছিল।

অভিযোগ রয়েছে, শুরু থেকেই এসপি, এডিএম এবং ওসিসহ স্থানীয় প্রশাসনের দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা ঘটনাটি ভিন্ন খাতে নেওয়ার চেষ্টা চালান। তারা বিষয়টি ধামাচাপা দিয়ে ‘আত্মহত্যা’র নাটক সাজাতে চেয়েছিলেন। স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে ওসি শুরুতেই জানিয়েছিলেন, নুসরাতের ঘটনা আত্মহত্যা হতে পারে। এসপিও শুরু থেকে তার ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে পুরোপুরি ব্যর্থ হন। এ ঘটনার তদন্তে পুলিশ সদর দপ্তরের ডিআইজি এসএম রুহুল আমিন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু সুফিয়াসহ পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। এরই মধ্যে ওই কমিটি তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।

দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন ঘটনার গুরুত্ব অনুধাবনে ব্যর্থ হয়েছে। অনেকে অনুমাননির্ভর বক্তব্য রেখেছে। এতে পুলিশ বাহিনীর ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ হয়। এ ঘটনায় সোনাগাজী থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম ও এসআই ইকবালকে বরখাস্তের সুপারিশ করা হয়। এ ছাড়া এসপি জাহাঙ্গীর আলম সরকার ও এসআই আবু ইউসুফকে নন অপারেশনাল ইউনিটে বদলিরও সুপারিশ করা হয়। তারা সবাই বিভাগীয় মামলার মুখোমুখি হবেন।

তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, যে কোনো মাদ্রাসায় প্রিন্সিপাল নিয়োগের ক্ষেত্রে ওই ব্যক্তির অতীত কর্মকাণ্ড খতিয়ে দেখতে হবে। মানবিক গুণসম্পন্ন ব্যক্তি ছাড়া কাউকে এসব পদে না বসানোর সুপারিশ করা হয়।