২৫ গ্রামের বেশি মাদক হলে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ইয়াবা, কোকেন, হেরোইন পরিবহন, কেনাবেচা, ব্যবসা, সংরক্ষণ, উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ, হস্তান্তর, সরবরাহ ইত্যাদি অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ মৃত্যুদণ্ড ও যাবজ্জীবনের বিধান রেখে সংসদে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ বিল-২০১৮ পাস । স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বিলটি পাসের প্রস্তাব উত্থাপন করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়। পাস হওয়া বিলে মাদকদ্রব্যের অপরাধের ৩৪টি তফসিল বর্ণনা করে সর্বনিম্ন এক বছর থেকে সর্বোচ্চ মৃত্যুদণ্ড ও যাবজ্জীবনের বিধান রাখা হয়েছে।

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের ২৩তম অধিবেশনে শনিবারের অধিবেশনে বিলটি কন্ঠভোটে পাস হয়। বিলটি পাসের প্রস্তাব করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। এর আগে বিলের ওপর আনিত সংশোধনী, যাচাই-বাছাই কমিটিতে প্রেরণ ও জনমত যাচাইয়ের প্রস্তাব কন্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়। গত ২২ অক্টোবর সম্পূরক কর্মসূচিতে বিলটি উত্থাপন করা হয়।

আইনে মাদকদ্রব্যের নাম অপরাধের ৩৪টি ধরণ একটি তফসিলে বর্ণনা করা হয়েছে। এজন্য আইনে সর্বনিম্ন এক বছর থেকে ১৫ বছর পর্যন্ত শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। তফসিলের ৭ অনুচ্ছেদ থেকে ১৫ অনুচ্ছেদ পর্যন্ত নয়টি ক্ষেত্রে ‌‘ক’ শ্রেণীভুক্ত মাদকের বিভিন্ন পরিমাণ উল্লেখ করে তার সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড ও যাবজ্জীবনের বিধান রাখা হয়েছে।

প্রস্তাবিত আইনে কোকেন, কোকো মাদক চাষাবাদ, উৎপাদন বা প্রক্রিয়াজাতকরণের ক্ষেত্রে ২৫ গ্রামের বেশি হলে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন দেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে। আর ২৫ গ্রামের নিচে হলে কমপক্ষে দুই বছর ও সর্বোচ্চ ১০ বছরের কারাদণ্ডের বিধান আছে।

ইয়াবা বহনের ক্ষেত্রে ২০০ গ্রামের বেশি হলে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড অথবা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ড। তবে ১০০ গ্রাম বা মিলিলিটার হলে সর্বনিম্ন ৫ বছর এবং সর্বোচ্চ ১০ বছরের কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। মাদকাসক্ত ব্যক্তির ডোপ টেস্টে ইতিবাচক ফল পাওয়া গেলে কমপক্ষে ৬ মাস ও সর্বোচ্চ ৫ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হবে।

বিলে বলা হয়েছে, কেউ যদি সজ্ঞানে কোনো মাদকদ্রব্য অপরাধ সংঘটনের জন্য তার মালিকানাধীন অথবা দখলি কোনো বাড়িঘর, জায়গাজমি, যানবাহন, যন্ত্রপাতি অথবা সাজসরঞ্জাম কিংবা অর্থ সম্পদ ব্যবহারের অনুমতি দেন তাহলে তিনি সর্বোচ্চ ৫ বছরের কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ড ভোগ করবেন। এ ছাড়া লাইসেন্সপ্রাপ্ত না এমন কোনো ব্যক্তির কাছে অথবা তার জায়গায় যদি মাদকদ্রব্য উৎপাদনে ব্যবহারযোগ্য কোনো যন্ত্রপাতি, ওয়াশ অথবা অন্যান্য উপকরণ পাওয়া যায় তাহলে তিনি সর্বনিম্ন ২ বছরের কারাদণ্ড ও সর্বোচ্চ ১০ বছরের কারাদণ্ড।

বিলে বলা হয়েছে, আইনে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে অপরাধ তদন্তের ব্যাপারে থানার ভারপ্রাপ্ত থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসারের ক্ষমতা থাকবে। মহাপরিচালকের দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসার সেই ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবেন। মাদক অপরাধ বিচারের জন্য গঠিত মাদক দ্রব্য অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালে এর বিচার হবে। ট্রাইবুনালে মামলা স্থানান্তরের ৯০ দিনের মধ্যে মামলা নিস্পতির বিধান রাখা হয়েছে। এ ছাড়া ক্যামারায় ধারণকৃত ছবি, অডিও ফুটেজ মামলার সাক্ষ্য হিসেবে গৃহীত হবে।

বিলে আরো বলা হয়েছে, অনুমতি ব্যতীত কোনো ব্যক্তি অ্যালকোহল পান করতে পারবে না। আর চিকিৎসার প্রয়োজনে সিভিল সার্জন অথবা সরকারি মেডিক্যাল কলেজের কোনো সহযোগী অধ্যাপকের লিখিত ব্যবস্থাপত্র ব্যতীত কোনো মুসলমানকে অ্যালকোহল পান করার অনুমোদন দেওয়া যাবে না।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর