‘রূপচাঁদা ডেইলি স্টার সুপার শেফ ২০১৫’-এর দর্শক সাড়ায় আমি অভিভূত

বর্তমানে এনটিভি পর্দার দর্শকনন্দিত অনুষ্ঠান ‘রূপচাঁদা ডেইলি স্টার সুপার শেফ-২০১৫’। গত বছর সফলভাবে এই প্রতিযোগিতার প্রথম আসর সমাপ্ত হয়। তারই ধারাবাহিকতায় চলতি বছরের প্রথম থেকে আরও বড় পরিসরে এই প্রতিযোগিতার দ্বিতীয় আসর আয়োজনের ঘোষণা দেয়া হয়। প্রতিযোগিতাটিকে অন্যমাত্রা দেয়া ও দর্শকপ্রিয় করতে যিনি অনবদ্য ভূমিকা রেখেছেন তিনি হলেন শাহেদা ইয়াসমিন। দেশের স্বনামধন্য এই কুলিনারি এক্সপার্ট ‘রূপচাঁদা ডেইলি স্টার সুপার শেফ-২০১৫’-এর প্রধান বিচারকের দায়িত্ব পালন করছেন। বর্তমানে প্রতিযোগিতাটির শেষের দিকের অংশের প্রচার চলছে এনটিভিতে। আসছে রোববার সেরা শেফ নির্বাচিত হবে গ্র্যান্ড ফিনালের মধ্য দিয়ে। এ বছর আরও বড় পরিসরে প্রতিযোগিতাটি আয়োজন করতে শাহেদা ইয়াসমিনের মাধ্যমে দেশের বাইরের তারকা শেফরাও অতিথি বিচারক হিসেবে অংশ নেন। যার কারণে শুধু বাংলাদেশেই নয়, আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও প্রতিযোগিতাটি ভাল সাড়া ফেলেছে। শাহেদা ইয়াসমিনের রান্নার প্রতি ভালবাসা সেই ছোটবেলা থেকেই। মাত্র ৬ বছর বয়সে প্রথম রান্না করেন তিনি। মূলত দাদির কাছেই তার রান্নার হাতেখড়ি। পরে মায়ের কাছ থেকেও শিখেছেন। সে সময় থেকেই বিভিন্ন ধরনের রান্না করতে পছন্দ করেন শাহেদা ইয়াসমিন। ২০০৬ সালে নিউ ইয়র্কে ‘এশিয়ান কুকিং’- এর ওপর প্রশিক্ষণ নেন তিনি। এরপর ব্যাংকক থাই কুকিং একাডেমি থেকে মাস্টার শেফ থাই কুজিন-এর ওপর প্রশিক্ষণ শেষে দেশে ফেরেন শাহেদা ইয়াসমিন। ২০০৮ সালের এপ্রিলে নিজের বনানীর বাড়ির সঙ্গেই ‘জুয়েলস কিচেন’ নামে একটি কুলিনারি ওয়ার্কশপ প্রতিষ্ঠা করেন। এখান থেকে বছরে সর্বোচ্চ চারজনকে কুলিনারি প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। গত বছর রূপচাঁদা শাহেদা ইয়াসমিনের সঙ্গে যোগাযোগ করে ‘সুপার শেফ’ প্রতিযোগিতাটি করার জন্য। সে বছর এ প্রতিযোগিতার প্রথম আসর সমাপ্ত হয়। এবারও শাহেদা ইয়াসমিনের হাত ধরে প্রতিযোগিতাটির দ্বিতীয় আসর সফল সমাপ্তির পথে। এই যাত্রার অভিজ্ঞতাটা কেমন ছিল জানতে চাইলে শাহেদা ইয়াসমিন আত্মবিশ্বাসের হাসি হেসে বলেন, ‘রূপচাঁদা ডেইলি স্টার সুপার শেফ-২০১৫’-এর দর্শক সাড়ায় আমি অভিভূত। রূপচাঁদার কারণেই এটা সম্ভব হয়েছে। তাই তাদের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাতে চাই। এবার কিন্তু তারকা শেফদের নিয়ে এসেছি আমরা। বিশেষ করে আমার ব্যক্তিগতভাবে পরিচিত বেশ কয়জন তারকা শেফ রয়েছেন দেশের বাইরের। এবার অতিথি হিসেবে অংশ নিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ান মাস্টার শেফ সিজন-৫ বিজয়ী এমা ডিন, ফ্রেঞ্চ শেফ ও কুলিনারি এক্সপার্ট ফেড্রিক ইনসিসিনমি এবং বেলজীয় শেফ জেরার্ড ওয়ালেস। প্রতিযোগীদের আগ্রহ দেখেও অবাক হয়েছি এবার। দেশের প্রতিটি জেলা থেকে আমরা ঘুরে ঘুরে প্রতিযোগী বাছাই করেছি। অসাধারণ সব রাঁধুনি এখানে এসেছেন। তারা এত ট্যালেন্ট যে অবাক না হয়ে পারিনি। শাকিব নামে একটি ছেলে এসেছে প্রতিযোগিতায়। সে বাবুর্চি। ইংরেজি তেমন বুঝে না। কিন্তু কিভাবে যে সে নিজেকে এই প্রতিযোগিতার সঙ্গে খাপ খাইয়ে অসাধারণ দক্ষতা দেখালো সেটা বোঝাতে পারবো না। অবশেষে আমরা সেরা শেফদের নির্বাচন করেছি। আসছে রোববার গ্র্যান্ড ফিনালের মধ্য দিয়ে দেশের সেরা শেফকে পাবে দেশ। এদিকে এই প্রতিযোগিতার সফলতার পর আগামী নভেম্বরে এর তৃতীয় আসর শুরু হতে যাচ্ছে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে এই আসর আরও বড় হবে বলে জানালেন শাহেদা ইয়াসমিন। কুলিনারি এক্সপার্ট হিসেবে দেশ-বিদেশে প্রশংসা কুড়ালেও শাহেদা ইয়াসমিনের নিজের পছন্দের খাবার অনেক সাধারণ। এ বিষয়ে তিনি বলেন, আমার প্রিয় খাবার আলুভর্তা, ডাল আর ডিম আমলেট। সঙ্গে খাঁটি গাওয়া ঘি হলে তো কথাই নেই। এই খাবার আমি ৩০ দিন খেতে পারবো। আমাদের দেশে বিভিন্ন ধরনের প্রতিযোগিতা অনেক হচ্ছে। কিন্তু রান্নার প্রতিযোগিতা সেই তুলনায় বেশ কম। মূল বাধাটা কোথায় বলে মনে করেন? শাহেদা ইয়াসমিন বলেন, অন্যান্য প্রতিযোগিতা আয়োজনটা খুব একটা কঠিন না। কিন্তু রান্নার প্রতিযোগিতাটা অনেক বড় পরিসরে করতে হয়। প্রতিযোগী ছাড়াও অনেক মানুষের অংশগ্রহণ থাকে। তবে এরকম উদ্যোগ নেয়া উচিত। তাহলেই আসলে সম্ভাবনাময় রাঁধুনিরা বেরিয়ে আসতে পারবেন। যারা এ পেশায় আসতে চান তাদের উদ্দেশে আপনার পরামর্শ কি থাকবে? শাহেদা ইয়াসমিন বলেন, সবার আগে রান্নাকে ভালবাসতে হবে। ভালবাসা না থাকলে কোন কিছুতেই সর্বোচ্চ সাফল্য পাওয়া যায় না। আর সুপার শেফ হতে হলে দক্ষতা অবশ্যই থাকতে হবে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর