৫৩ জন চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে গত আড়াই মাসে

হাওর বার্তা ডেস্কঃ গত বুধবার রাত থেকে গতকাল সকাল পর্যন্ত দেশে আরও চারজন চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে করোনায়। এ নিয়ে করোনায় আক্রান্ত হয়ে এবং
করোনার উপসর্গ নিয়ে মোট ৫৩ জন চিকিৎসকের মৃত্যু হলো। বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) তথ্য অনুযায়ী, দেশে করোনায় আক্রান্ত হয়ে ৪৭ জন এবং করোনার উপর্সগ নিয়ে ৬ জন চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে। গত ৮ মার্চ দেশে করোনায় সংক্রমিত প্রথম রোগী শনাক্ত হন। প্রথম মৃত্যুর ঘটনা ১৮ মার্চ। আর করোনায় দেশে কোনো চিকিৎসকের মৃত্যুর প্রথম ঘটনাটি গত ১৫ এপ্রিলের।

বুধবার সন্ধ্যা থেকেই একটার পর একটা মৃত্যুর খবর আসছিল। মৃত্যুর খবরগুলো এমন মানুষদের, যাঁরা নিজের জীবনকে তুচ্ছ করে করোনায় আক্রান্ত মানুষদের চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছিলেন। বুধবার রাতেই মারা যান তিন চিকিৎসক। মন খারাপ করা এমন খবর শুনতে হয়েছে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালেও।

বিএমএর তথ্য অনুযায়ী, গতকাল পর্যন্ত দেশের ১ হাজার ২৬৮ জন চিকিৎসক করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছেন ঢাকা জেলার চিকিৎসকেরা। এই জেলায় গতকাল পর্যন্ত ৫৩৮ জন চিকিৎসক আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ঢাকার তিনটি বড় সরকারি হাসপাতালেরই ৩৪৭ জন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৭১ জন, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১২০ জন ও স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতালে আছেন ৫৬ জন।

ঢাকায় এত চিকিৎসক আক্রান্ত হওয়ার কারণ জানতে চাইলে বিএমএর করোনা প্রতিরোধ ও সহায়তাসংক্রান্ত কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান ভূঁইয়া মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ঢাকায় হাসপাতাল-ক্লিনিক ও রোগী—দুটোই বেশি। তাই দেশের অন্য এলাকার চেয়ে ঢাকায় বেশি চিকিৎসক আক্রান্ত হয়েছেন। চিকিৎসকদের পাশাপাশি নার্সসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীর মধ্যেও করোনায় আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা বাড়ছে। গতকাল পর্যন্ত ১ হাজার ১৯৯ জন নার্স এবং ১ হাজার ৬২৮ জন অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মী আক্রান্ত হয়েছেন।

করোনা থেকে বাঁচার জন্য চিকিৎসক ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীর যথাযথ নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিশ্চিতের পাশাপাশি এ–সংক্রান্ত প্রশিক্ষণও জরুরি। কিন্তু এ দুটিতেই এখনো ঘাটতি আছে। সম্প্রতি ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) ও নাগরিক সংগঠন বাংলাদেশ হেলথ ওয়াচের গবেষণাতেও বিষয়টি উঠে এসেছে। গত ১৫ এপ্রিল থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত দেশের ৩৮টি জেলার ৪৭টি হাসপাতাল থেকে সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে টিআইবির গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মাত্র ২২ দশমিক ২ শতাংশ হাসপাতালের চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীসহ সবাই করোনা প্রতিরোধে প্রশিক্ষণ পেয়েছেন। আর ২ দশমিক ২ শতাংশ হাসপাতালের কেউই প্রশিক্ষণ পাননি। গবেষণার অন্তর্ভুক্ত ২৫ শতাংশ হাসপাতালের সব চিকিৎসক ও ৩৪ শতাংশ হাসপাতালের সব নার্স ব্যক্তিগত নিরাপত্তা সামগ্রী (পিপিই) পাননি বলে জানিয়েছেন।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর