নড়াইলে কৃষকের ফসলে দেখা দিয়েছে নেক ব্লাস্ট রোগ

হাওর বার্তা ডেস্কঃ নড়াইলে কৃষকের ফসলে দেখা দিয়েছে নেক ব্লাস্ট রোগ। সেই রোগে পুড়ে যাচ্ছে কৃষকের ফসল। কৃষি বিভাগের পরামর্শে বালাই নাশক প্রয়োগ করেও কোনো প্রকার প্রতিকার পাচ্ছে না তারা। তারপরও হাল না ছেড়ে দিনভর কৃষকরা ব্যস্ত থাকছে ফসলি ক্ষেত রক্ষায় কাজে। বরো ধানের ক্ষেতে নেক ব্লাস্ট রোগ ছড়িয়ে পড়ায় মাঠের পর মাঠ ধান ক্ষেতের পাতা পুড়ছে। পচন ধরছে গাছের গোড়ায়। মরছে সবে উঁকি দেয়া কচি ধানের শীষ। কৃষকরা তাই দিশেহারা। ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে নড়াইল সদর উপজেলায় পড়েছে হুমকিতে।

নড়াইলের কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, এবার চলতি মৌসুমে নড়াইলের সদর উপজেলায় ২১ হাজার ৫৩৫ হেক্টর, লোহাগড়া ৮ হাজার ১৭০ হেক্টর,কালিয়া উপজেলায় ১৬ হাজার ২৩৫ হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়েছে। জেলায় এ বছর বোরো চাষে ১ লাখ ৯৪ হাজার ৪৭৫ মেট্রিক টন শস্য উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ মৌসুমে বোরো চাষ করতে কৃষকরা বীজ রোপন থেকে শুরু করে ধানের শীষ আসা পর্যন্ত ভালো ফলনের আশায় বেশ পরিচর্যা করে আসছিল।

কিন্তু হঠাৎ গত ১৫-২০ দিন থেকে বোরো ক্ষেতে কার্ন্টে পোকা, ন্যাদা পোকা আক্রমণ শুরু করে। এরপর হঠাৎ করেই রাতারাতি পুড়ে যেতে শুরু করে ধানের পাতা। অতিসম্প্রতি ধানের গোড়ায় পচন ধরে ধানেরশীষ মরে যাচ্ছে। কোনো ক্ষেতে এসব রোগ দেখা দিলে তার পরেরদিন পাশের ক্ষেতটিতেও রোগটি ছড়িয়ে পড়ছে। হঠাৎ ফসলে এরকম চিত্র দেখা দেয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়ছে সাধারণ কৃষক। এদের মধ্যে যেসব কৃষক চড়া সুদ ঋণ নিয়ে চাষাবাদ করেছে। তারা ঋণের টাকা কিভাবে পরিশোধ করবে তা নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, নড়াইল সদর উপজেলার বন গ্রাম, কোড় গ্রাম, মুলিয়া বাহির গ্রাম, মুশুড়ীসহ বিভিন্ন স্থানে নেক ব্লাস্টে পুড়ে গেছে মাঠের পর মাঠ ধান ক্ষেত। নড়াইল জেলার সদর কোড়গ্রামের কৃষক মৃত্যুঞ্জয় বলেন, ‘গত ১৫-২০ দিন থেকে হঠাৎ ফসলি জমিতে পাতা পুড়তে শুরু করে। এরপর গোড়ায় পচন ধরে মরতে থাকে। স্থানীয় কৃষি বিভাগের পরামর্শে বালাই নাশক প্রয়োগ করেও কোনো প্রতিকার পাইনি। এ রোগ দেখা দেয়ায় অধিকাংশ ধানের শীষ দানাশূন্য হয়ে পড়েছে। মহাজনের নিকট থেকে ‘ঋণ’ নিয়ে এবার চাষাবাদ করেছি।

এ অবস্থায় কীভাবে ঋণ শোধ করবো জানি না।’ নড়াইলের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক (কৃষিবিধ) চিন্ময় রায়, নড়াইল জেলা অনলাইন মিডিয়া ক্লাবের সভাপতি উজ্জ্বল রায়কে জানান, ‘গত মাসের শেষ দুই সপ্তাহের টানা বর্ষণে ধানগাছে ছেটানো বালাই নাশক ধুয়ে গেছে। আর একারণেই ব্লাস্ট রোগ দেখা দিয়েছে। তবে এ রোগ দেখা দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে কৃষি বিভাগের মাঠকর্মীসহ সংশ্লিষ্টরা কৃষকের পাশে দাঁড়িয়েছে। কৃষকের ফসল রক্ষার্থে সার্বক্ষণিক পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর