ঢাকা ০৭:৪৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বগুড়ার শিবগঞ্জে সৌর শক্তিনির্ভর সেচ প্রযুক্তি ব্যবহার করছেন কৃষকেরা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০১:১৩:০৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০১৯
  • ২২৭ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার কৃষিকাজে আধুনিক প্রযুক্তি খুলে দিয়েছে সম্ভাবনার নতুন দুয়ার। এ উপজেলার উত্তর পূর্ব বরেন্দ্র অঞ্চলের প্রায় ১২০০ শ’ কৃষক সূর্যের আলো ব্যবহার করে স্বল্পসময়ে এবং কম খরচে উৎপাদন করছেন ইরি-বোরো ধান ছাড়াও রবি মৌসুমে কপি,আলু, গম,ভূট্টা। এতে অনেক বেশি লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। সূর্যের আলো কাজে লাগিয়ে জমিতে সেচ দিচ্ছেন। এখন আর তারা বিদ্যুতের উপর নির্ভরশীল নন।

সেচ পাম্প চালাতে প্রয়োজন হয় না ডিজেলের। সূর্যের আলো কাজে লাগিয়ে তারা সৌর শক্তিনির্ভর সেচ প্রযুক্তি ব্যবহার করছেন। জমিতে সেচ দিচ্ছেন এ পদ্ধতি ব্যবহার করে। বর্তমানে সৌর বিদ্যুৎ চালিত সেচ পাম্প বদলে দিয়েছে উত্তর পূর্ব বরেন্দ্র অঞ্চলের কৃষির চিত্র। শিবগঞ্জ উপজেলায় দুইশত হেক্টর জমিতে সৌর শক্তিকে কাজে লাগিয়ে চাষ হচ্ছে ফসল। এ উপজেলায় ১৩টি সোলার প্যানেল রয়েছে।

একটি পাম্প থেকে প্রতিদিন সেচ সুবিধা পাচ্ছে প্রায় ৭০/৯০ বিঘা কৃষি জমি। সৌরশক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মাঠে পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। সোলার সিস্টেম একবার স্থাপন করে কোনো ধরনের খরচের ঝামেলা ছাড়াই টানা বিশ বছর সার্ভিস পাওয়া সম্ভব। এ সিস্টেমে ব্যাটারি ছাড়াই সরাসরি সূর্যের আলোয় সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নিরবিচ্ছিন্ন পানি সেচ দেওয়া যাচ্ছে।

শিবগঞ্জ সদর ইউনিয়নের এনায়েত পুর গ্রামের কৃষক মো. গোলাম মোস্তফা বলেন, সূর্যের আলো যত তীব্র হবে, পানিও তত বেশি উঠবে। আলো কমে গেলে মেশিন অটোমেটিক বন্ধ হয়ে যায়। এতে বাড়তি কোনো ঝামেলা নেই। প্রতি ইরি-বোরো মৌসুমে ডিজেল চালিত শ্যালো মেশিনে প্রতি বিঘা জমিতে সেচ বাবদ তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা আর রবি মৌসুমে বিঘা প্রতি একবার সেচ দিলে চারশত টাকা ব্যয় করতে হতো। এখন আর তা হচ্ছে না, ইরি বোরো মৌসুমে বিঘা প্রতি এক হাজার তিনশত টাকা, আর রবি মৌসুমে বিঘা প্রতি একবার একশত টাকা ব্যয় হয়।

উত্তর পূর্ব বরেন্দ্র অঞ্চলের সোলার স্থাপনকারি প্রতিষ্ঠান সালেক সোলারের ডেপুটি সিইও জনাব মো. বেলাল হোসেন বলেন, পুরো শিবগঞ্জ উপজেলার কৃষিকে সৌর সেচের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।

শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার আলমগীর কবির বলেন, প্রাকৃতিক বিদ্যুৎ ব্যবস্থা হিসেবে সোলার ইরিগেশন সিস্টেমের মাধ্যম সেচ দিলে বিদ্যুৎ বা জ্বালানির অনেক সাশ্রয় হবে। সৌরবিদ্যুৎ চালিত সেচের আওতা বাড়ানো গেলে ফসলের উৎপাদন বাড়বে। যেখানে বিদ্যুৎ পৌঁছনো সম্ভব নয়, সেখানেও এ পদ্ধতি ব্যবহার করে ফসল উৎপাদন সম্ভব। এতে নিশ্চিত হবে খাদ্য নিরাপত্তা, লাভবান হবে কৃষক।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

বগুড়ার শিবগঞ্জে সৌর শক্তিনির্ভর সেচ প্রযুক্তি ব্যবহার করছেন কৃষকেরা

আপডেট টাইম : ০১:১৩:০৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০১৯

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার কৃষিকাজে আধুনিক প্রযুক্তি খুলে দিয়েছে সম্ভাবনার নতুন দুয়ার। এ উপজেলার উত্তর পূর্ব বরেন্দ্র অঞ্চলের প্রায় ১২০০ শ’ কৃষক সূর্যের আলো ব্যবহার করে স্বল্পসময়ে এবং কম খরচে উৎপাদন করছেন ইরি-বোরো ধান ছাড়াও রবি মৌসুমে কপি,আলু, গম,ভূট্টা। এতে অনেক বেশি লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। সূর্যের আলো কাজে লাগিয়ে জমিতে সেচ দিচ্ছেন। এখন আর তারা বিদ্যুতের উপর নির্ভরশীল নন।

সেচ পাম্প চালাতে প্রয়োজন হয় না ডিজেলের। সূর্যের আলো কাজে লাগিয়ে তারা সৌর শক্তিনির্ভর সেচ প্রযুক্তি ব্যবহার করছেন। জমিতে সেচ দিচ্ছেন এ পদ্ধতি ব্যবহার করে। বর্তমানে সৌর বিদ্যুৎ চালিত সেচ পাম্প বদলে দিয়েছে উত্তর পূর্ব বরেন্দ্র অঞ্চলের কৃষির চিত্র। শিবগঞ্জ উপজেলায় দুইশত হেক্টর জমিতে সৌর শক্তিকে কাজে লাগিয়ে চাষ হচ্ছে ফসল। এ উপজেলায় ১৩টি সোলার প্যানেল রয়েছে।

একটি পাম্প থেকে প্রতিদিন সেচ সুবিধা পাচ্ছে প্রায় ৭০/৯০ বিঘা কৃষি জমি। সৌরশক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মাঠে পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। সোলার সিস্টেম একবার স্থাপন করে কোনো ধরনের খরচের ঝামেলা ছাড়াই টানা বিশ বছর সার্ভিস পাওয়া সম্ভব। এ সিস্টেমে ব্যাটারি ছাড়াই সরাসরি সূর্যের আলোয় সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নিরবিচ্ছিন্ন পানি সেচ দেওয়া যাচ্ছে।

শিবগঞ্জ সদর ইউনিয়নের এনায়েত পুর গ্রামের কৃষক মো. গোলাম মোস্তফা বলেন, সূর্যের আলো যত তীব্র হবে, পানিও তত বেশি উঠবে। আলো কমে গেলে মেশিন অটোমেটিক বন্ধ হয়ে যায়। এতে বাড়তি কোনো ঝামেলা নেই। প্রতি ইরি-বোরো মৌসুমে ডিজেল চালিত শ্যালো মেশিনে প্রতি বিঘা জমিতে সেচ বাবদ তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা আর রবি মৌসুমে বিঘা প্রতি একবার সেচ দিলে চারশত টাকা ব্যয় করতে হতো। এখন আর তা হচ্ছে না, ইরি বোরো মৌসুমে বিঘা প্রতি এক হাজার তিনশত টাকা, আর রবি মৌসুমে বিঘা প্রতি একবার একশত টাকা ব্যয় হয়।

উত্তর পূর্ব বরেন্দ্র অঞ্চলের সোলার স্থাপনকারি প্রতিষ্ঠান সালেক সোলারের ডেপুটি সিইও জনাব মো. বেলাল হোসেন বলেন, পুরো শিবগঞ্জ উপজেলার কৃষিকে সৌর সেচের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।

শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার আলমগীর কবির বলেন, প্রাকৃতিক বিদ্যুৎ ব্যবস্থা হিসেবে সোলার ইরিগেশন সিস্টেমের মাধ্যম সেচ দিলে বিদ্যুৎ বা জ্বালানির অনেক সাশ্রয় হবে। সৌরবিদ্যুৎ চালিত সেচের আওতা বাড়ানো গেলে ফসলের উৎপাদন বাড়বে। যেখানে বিদ্যুৎ পৌঁছনো সম্ভব নয়, সেখানেও এ পদ্ধতি ব্যবহার করে ফসল উৎপাদন সম্ভব। এতে নিশ্চিত হবে খাদ্য নিরাপত্তা, লাভবান হবে কৃষক।