হাওর বার্তা ডেস্কঃ সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) বাণিজ্য নগরী দুবাইয়ে ২৩ বছর ধরে বিভিন্ন দেশের ঐতিহাসিক ও ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা দ্বারা নির্মাণ করা হয় ‘গ্লোবাল ভিলেজ’। গ্লোবাল ভিলেজ বা বিশ্বগ্রাম বৈশ্বিক যোগাযোগ ব্যবস্থার সমৃদ্ধির জন্য হলেও মূলত, তা ব্যবসার একটি মাধ্যম। এখানে পণ্যের পরিচিতি এবং বিকিকিনি দুটিই ভালো চলে।
তবে সবকিছু ছাপিয়ে মেলা ঘুরে বিশ্ব ভ্রমণের স্বাদ গ্রহণই মুখ্য দর্শনার্থীদের কাছে। নামের সঙ্গে মিল রেখে গ্লোবাল ভিলেজে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহারও চমকপ্রদ। প্রতিদিন হাজারো দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখরিত হয় গ্লোবাল ভিলেজ বা বিশ্বগ্রাম। প্রতিদিন বিকাল ৪টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত চলে এই মেলা।
গ্লোবাল ভিলেজের ব্যবসায়িক এই মেলায় রয়েছে বিশ্বের নানা দেশের আলাদা প্যাভিলিয়ন। প্রতিটি প্যাভিলিয়নে উপস্থাপন করা হয়েছে নিজ নিজ দেশের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য। বিশ্বগ্রাম আমাদের দেশের বাণিজ্য মেলার মতো হলেও রয়েছে বিস্তর পার্থক্য। শীতের মৌসুমে ছয় মাসের জন্য বসে এই আন্তর্জাতিক মানের মেলা। বিভিন্ন দেশের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীদের জন্য বিশ্বগ্রাম খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বড় অঙ্কের টাকার বিনিময়ে প্যাভিলিয়ন কিনে নিজ দেশের উল্লেখযোগ্য স্থাপনা বসানোর পাশাপাশি দেশীয় পণ্য দিয়ে ছয় মাসের দোকান সাজানো হয়। প্রতিটি প্যাভিলিয়নে বসানো হয় হরেক রকমের দোকান। প্যাভিলিয়নভিত্তিক আলাদা মঞ্চে নির্দিষ্ট সময়ে বিনোদনের ব্যবস্থা করা হয়।
মেলার মাঝ মাঠে দর্শনার্থীদের বিনোদনের জন্য রয়েছে বিশাল মঞ্চ। এই মঞ্চ বিশ্বের নামকরা সব শিল্পীদের পরিবেশনায় মুখরিত থাকে। গান, নৃত্য, মঞ্চ নাটকের পাশাপাশি শিশুদের জন্য পরিবেশিত হয় আকর্ষণীয় সার্কাস। আরও পরিবেশিত হয় মেলায় প্যাভিলিয়ন নিয়ে অংশ নেওয়া দেশগুলোর রাজধানীর নামের গান, সঙ্গে থাকে সেই শহরের আলোকচিত্র।
দর্শনার্থীরা এক টিকিটে বিশ্ব ভ্রমণের সুযোগ পান। গ্লোবাল ভিলেজে প্রবেশের মাধ্যমে বিশ্ব ভ্রমণের স্বাদ পাওয়া যায়। এখানে রয়েছে সৌদি আরবের ঐতিহাসিক মিডেন সালেহ, মিসরের পিরামিড, যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ ফিলিস্তিন, ইয়েমেন, সিরিয়া, ইরাকসহ বিশ্বের বহু ঐতিহাসিক স্থাপনা। চীন, জাপান, ভারত পাকিস্তানসহ এশিয়ার ইতিহাস ঐতিহ্যের নিদর্শন। আরও রয়েছে যুক্তরাজ্যের বিগ বেন বা ক্লক টাওয়ার, আমেরিকার স্ট্যাচু অব লিবার্টি, ফ্রান্সের আইফেল টাওয়ারের কৃত্রিম স্থাপনা।
গ্লোবাল ভিলেজ দুবাইয়ে ২০১২ সাল পর্যন্ত ছিল বিনামূল্যে প্যাভিলিয়ন বরাদ্দ প্রথা। তখন নিয়মিত ছিল বাংলাদেশের প্যাভিলিয়ন। বিনামূল্যে প্যাভিলিয়ন পদ্ধতি বাতিল হওয়ার পাঁচ বছর পর ২০১৭-২০১৮ সেশনে আবারও ছিল প্যাভিলিয়ন। বাংলাদেশের নাম ছিল নেপাল ও শ্রীলঙ্কার সঙ্গে একই প্যাভিলিয়নে। প্যাভিলিয়ন থাকলেও ছিল না তেমন স্টল।
বাংলাদেশি প্রবাসীরা জানান, ২০১৮-২০১৯-এর ২৩তম সেশনের মেলায় একদমই নেই বাংলাদেশ। তবে বিভিন্ন দেশের প্যাভিলিয়নে বাংলাদেশি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের কিছু স্টল রয়েছে। আরব আমিরাত প্রবাসী প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীদের সমন্বয়ে গ্লোবাল ভিলেজের মতো গুরুত্বপূর্ণ এই মেলায় আগামীতে নিজস্ব প্যাভিলিয়নে দেশীয় পণ্য ও সংস্কৃতি তুলে ধরা হবে হবে বলে প্রত্যাশা তাদের।