হাওর বার্তা ডেস্কঃ ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহানের গায়ে আগুন দেওয়ার সময় এ হত্যা মামলার অন্যতম আসামি জুবায়ের আহমেদ যে বোরকা পরেছিলেন, তা উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ শনিবার সোনাগাজী সরকারি কলেজের দক্ষিণ-পূর্ব পাশে ডাঙ্গিখাল থেকে তদন্তকারী পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) দল পরিত্যক্ত বোরকাটি উদ্ধার করে। এ হত্যার ঘটনায় পাঁচ দিনের রিমান্ডে থাকা জুবায়েরকে নিয়েই এ অভিযান চালায় পুলিশ।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইয়ের পরিদর্শক মো. শাহ আলম বোরকা উদ্ধারের তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। অগ্নিদগ্ধ নুসরাত জাহান রাফি ১০ এপ্রিল রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মারা যান। ৬ এপ্রিল সকালে আলিম পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসায় যান নুসরাত। কয়েকজন তাঁকে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে করা মামলা তুলে নিতে চাপ দেন। তিনি অস্বীকৃতি জানালে তাঁর গায়ে আগুন দেওয়া হয়।
এ ঘটনায় অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলা, পৌর কাউন্সিলর মাকসুদ আলমসহ আটজনের নাম উল্লেখ করে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা করেন রাফির বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান। এর আগে ওই ছাত্রীকে নিজ কক্ষে নিয়ে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। যৌন নিপীড়নের ঘটনায় নুসরাতের মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা করেন। ওই মামলা তুলে নিতে অস্বীকৃতি জানানোয় নুসরাতের গায়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
নুসরাতকে অগ্নিদগ্ধ করে হত্যার ঘটনা সারা দেশে তুমুল আলোড়ন সৃষ্টি করে। এ হত্যা মামলায় এজাহারভুক্ত আটজনকেই গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। নুসরাতকে বোরকা পরে পাঁচজন গায়ে আগুন ধরিয়ে দেন। এঁদের মধ্যে দুজন ছিলেন নারী।
গত রোববার মামলার অন্যতম প্রধান দুই আসামি নুর উদ্দিন ও শাহাদাত হোসেন ওরফে শামীমের আদালতে দেওয়া ১৬৪ ধারার জবানবন্দিতে এ হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশগ্রহণকারী হিসেবে জুবায়েরের নাম উল্লেখ করেন। শাহাদাত হোসেন আরও বলেন, নুসরাতকে পোড়ানোর আগে তাঁরই ওড়না নিয়ে ছিঁড়ে দুই ভাগ করে জুবায়ের হাত ও পা বেঁধে ফেলেছিলেন।
পুলিশ জানায়, আজ পিবিআইয়ের তদন্ত দল জুবায়েরকে নিয়ে সোনাগাজীতে নিয়ে আসে। দুপুর ১২টার দিকে সোনাগাজী সরকারি কলেজের দক্ষিণ-পূর্ব পাশে ডাঙ্গিখাল থেকে জুবায়েরের পরিহিত বোরকাটি উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ জানায়, জুবায়ের তাদের বলেছেন, নুসরাতের গায়ে আগুন দেওয়ার পরপরই তিনি বোরকাটি এখানে খুলে পালান।