ঢাকা ১১:১৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম

পরীক্ষাকেন্দ্রে ছাত্রীর গায়ে আগুন, শিক্ষকসহ আটক ২

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৪:৫৫:২০ অপরাহ্ন, শনিবার, ৬ এপ্রিল ২০১৯
  • ২৮৭ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ফেনীর সোনাগাজীতে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ্যের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ করায় এক আলিম পরীক্ষার্থীর গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় শিক্ষকসহ দুইজনকে আটক করেছে পুলিশ। আজ শনিবার (০৬ এপ্রিল) সকালে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। নিহতের নাম নুসরাত জাহান রাফি (১৮)।

নুসরাতকে শ্লীলতাহানীর ঘটনায় গত কয়েকদিন নির্যাতিত শিক্ষার্থী ও অধ্যক্ষের পক্ষে বিপক্ষে একাধিক মানববন্ধন করেছে শিক্ষার্থীরা। নুসরাত আলিম পরীক্ষা দিতে গেলে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ্যের লোকজন অভিযোগ তুলে নিতে চাপ দেয়। এতে নুসরাত অস্বীকৃতি জানালে তার গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়।

আগুনে নুসরাতে শারীরের ৮০ শতাংশ ঝলসে যাওয়ায় দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ণ ইউনিটে স্থানান্তর করা হয়েছে। দগ্ধ নুসরাত সোনাগাজী পৌরসভার চরচান্দিয়া গ্রামের একে এম মুসার মেয়ে। এ ঘটনায় পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এক শিক্ষকসহ দুই জনকে আটক করেছে।

দগ্ধ নুসরাতের ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান জানান, গত ২৭ মার্চ উপজেলার ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ দৌলা তার নিজ কক্ষে ডেকে নিয়ে নুসরাত জাহান রাফিকে শ্লীলতাহানি করেন। পরে নুসরাত বিষয়টি পরিবারকে জানায়। এ ঘটনায় নুসরাতের মা শিরিন আক্তার বাদি হয়ে থানায় মামলা দায়ের করলে পরদিন ২৮ মার্চ অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ দৌলাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ ঘটনার পর থেকে নুসরাত জাহানের পরিবারকে মামলা তুলে নিতে বিভিন্ন ধরনের হুমকি-ধামকি দিয়ে আসছিলো অধ্যক্ষের লোকজন।

শনিবার সকালে আলিম পরীক্ষার আরবি প্রথমপত্র পরীক্ষা দিতে নুসরাতকে বাড়ি থেকে মাদ্রাসায় নিয়ে যান তার বড় ভাই। তাকে কেন্দ্রে প্রবেশ করিয়ে ভাই বাড়ি ফিরলে পরীক্ষা শুরুর পূর্বে মাদ্রাসায় কয়েক শিক্ষার্থী তাকে ফুঁসলিয়ে মাদ্রাসার ছাদে নিয়ে যায়। এ সময় ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে দেয়া শ্লীলতাহানির অভিযোগ তুলে নিতে হুমকি দেয়। এতে রাজি না হলে একপর্যায়ে দুর্বৃত্তরা নুসরাতের গায়ে কেরোসিন তেল ঠেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে নুররাত দগ্ধ হয়ে চিৎকার করলে অন্যরা ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে।

খবর পেয়ে পুলিশ ও অন্যরা নুসরাতকে উদ্ধার করে সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে ফেনী জেলা সদর হাসাপাতালে স্থানান্তর করে।

ফেনী জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. আবু তাহের ভূইয়া ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, দগ্ধ নুসরাতের শরীরের ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ পুড়ে গেছে। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে প্রেরণ করা হয়েছে।

সোনাগাজী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. কামাল হোসেন জানান, পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এক শিক্ষক ও এক শিক্ষার্থীকে আটক করেছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

ভুলে শিশুর ভালো চোখে অস্ত্রোপচার

পরীক্ষাকেন্দ্রে ছাত্রীর গায়ে আগুন, শিক্ষকসহ আটক ২

আপডেট টাইম : ০৪:৫৫:২০ অপরাহ্ন, শনিবার, ৬ এপ্রিল ২০১৯

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ফেনীর সোনাগাজীতে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ্যের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ করায় এক আলিম পরীক্ষার্থীর গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় শিক্ষকসহ দুইজনকে আটক করেছে পুলিশ। আজ শনিবার (০৬ এপ্রিল) সকালে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। নিহতের নাম নুসরাত জাহান রাফি (১৮)।

নুসরাতকে শ্লীলতাহানীর ঘটনায় গত কয়েকদিন নির্যাতিত শিক্ষার্থী ও অধ্যক্ষের পক্ষে বিপক্ষে একাধিক মানববন্ধন করেছে শিক্ষার্থীরা। নুসরাত আলিম পরীক্ষা দিতে গেলে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ্যের লোকজন অভিযোগ তুলে নিতে চাপ দেয়। এতে নুসরাত অস্বীকৃতি জানালে তার গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়।

আগুনে নুসরাতে শারীরের ৮০ শতাংশ ঝলসে যাওয়ায় দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ণ ইউনিটে স্থানান্তর করা হয়েছে। দগ্ধ নুসরাত সোনাগাজী পৌরসভার চরচান্দিয়া গ্রামের একে এম মুসার মেয়ে। এ ঘটনায় পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এক শিক্ষকসহ দুই জনকে আটক করেছে।

দগ্ধ নুসরাতের ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান জানান, গত ২৭ মার্চ উপজেলার ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ দৌলা তার নিজ কক্ষে ডেকে নিয়ে নুসরাত জাহান রাফিকে শ্লীলতাহানি করেন। পরে নুসরাত বিষয়টি পরিবারকে জানায়। এ ঘটনায় নুসরাতের মা শিরিন আক্তার বাদি হয়ে থানায় মামলা দায়ের করলে পরদিন ২৮ মার্চ অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ দৌলাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ ঘটনার পর থেকে নুসরাত জাহানের পরিবারকে মামলা তুলে নিতে বিভিন্ন ধরনের হুমকি-ধামকি দিয়ে আসছিলো অধ্যক্ষের লোকজন।

শনিবার সকালে আলিম পরীক্ষার আরবি প্রথমপত্র পরীক্ষা দিতে নুসরাতকে বাড়ি থেকে মাদ্রাসায় নিয়ে যান তার বড় ভাই। তাকে কেন্দ্রে প্রবেশ করিয়ে ভাই বাড়ি ফিরলে পরীক্ষা শুরুর পূর্বে মাদ্রাসায় কয়েক শিক্ষার্থী তাকে ফুঁসলিয়ে মাদ্রাসার ছাদে নিয়ে যায়। এ সময় ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে দেয়া শ্লীলতাহানির অভিযোগ তুলে নিতে হুমকি দেয়। এতে রাজি না হলে একপর্যায়ে দুর্বৃত্তরা নুসরাতের গায়ে কেরোসিন তেল ঠেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে নুররাত দগ্ধ হয়ে চিৎকার করলে অন্যরা ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে।

খবর পেয়ে পুলিশ ও অন্যরা নুসরাতকে উদ্ধার করে সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে ফেনী জেলা সদর হাসাপাতালে স্থানান্তর করে।

ফেনী জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. আবু তাহের ভূইয়া ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, দগ্ধ নুসরাতের শরীরের ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ পুড়ে গেছে। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে প্রেরণ করা হয়েছে।

সোনাগাজী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. কামাল হোসেন জানান, পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এক শিক্ষক ও এক শিক্ষার্থীকে আটক করেছে।