হাওর বার্তা ডেস্কঃ ভিয়েতনাম থেকে খাটো জাতের নারিকেল চারা আসছে বাংলাদেশে। ইতিমধ্যে বিভিন্ন জেলায় লাগানো শুরু হয়েছে চারা গুলো। আজকের কলাম কৃষি সম্প্রসারণ সূত্রে জানা যায়, ইতিমধ্যে ৪ লাখ ৫০ হাজার খাটো জাতের নারিকেল চারা আমদানি করা হয়েছে।
যার অধিকাংশ দক্ষিণাঞ্চলসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় রোপণ করা হয়েছে। তবে ৫ শতাংশ চারা এখনও মজুদ রয়েছে। কৃষি মন্ত্রণালয় ‘বছরব্যাপী ফল উৎপাদনের মাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়ন প্রকল্প’র আওতায় এ চারা বিতরণ করছে। প্রকল্পের মাধ্যমে সরকারের ১০ লাখ চারা আমদানির পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। বর্তমানে বাণিজ্যিকভাবে চাষের জন্য খাটো জাতের নারিকেল চারার প্রতি আগ্রহ বাড়ছে কৃষকের।
এক একর জমিতে ৭০টি নারিকেল চারা রোপণ করা যায়। তিন বছরের মধ্যে গাছে ফল আসায় এর প্রতি আগ্রহও দিন দিন বাড়ছে। দেশের বরিশাল, বরগুনা, পটুয়াখালী, পিরোজপুর, বাগেরহাট, খুলনা, দিনাজপুর, কুষ্টিয়া, মেহেরপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় খাটো জাতের নারিকেল গাছ লাগানো শুরু হয়েছে।
এছাড়া বান্দরবান, রাঙ্গামাটি জেলার পাহাড়ি এলাকায়ও এ জাতের গাছ লাগানো হয়েছে। সারা দেশে হর্টিকালচার সেন্টারের মাধ্যমে এ চারা বিতরণ করা হয়। রাজধানীতে আসাদগেট হর্টিকালচার সেন্টার থেকেও এ জাতের গাছ সংগ্রহ করছেন অনেকেই।
দেশে অতিমাত্রায় ডাব বিক্রি হওয়ায় নারিকেল গাছের ফল প্রাপ্তির সংখ্যা দিন দিন কমে আসছে। কৃষি স¤প্রসারণ বিভাগের সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী দেশের ৪ হাজার ৮৭ একর জমিতে ৬২ লাখ নারিকেল গাছ আছে যা চাহিদার তুলনায় কম। এ পরিস্থিতিতে ভিয়েতনাম থেকে ছোট জাতের নারিকেলের চারা আমদানি করা হয়েছে। এ জাতের ডাব খুবই সুস্বাদু। এছাড়া ফলনও লম্বা জাতের গাছের চেয়ে অনেক বেশি। প্রতি গাছে বছরে গড়ে ১৫০ থেকে ২০০টি ফল ধরে। গাছ রোপণের দুই থেকে আড়াই বছরের মধ্যে ফুল ফোটা শুরু হয়।
দেশীয় লম্বা জাতের নারিকেল গাছে ফুল আসতে ৭ থেকে ৮ বছর লেগে যায়। ভিয়েতনামের খাটো জাতের ডাবে পানির পরিমাণও অনেক বেশি। প্রতিটি ডাব থেকে ৩০০ এমএল পানি পাওয়া যাবে। সব ধরনের মাটিতেই এ গাছ লাগানো সম্ভব। তা ছাড়া এ জাতের গাছ লবণাক্ততা অনেক বেশি সহ্য করতে পারে।
গাছ খাটো হওয়ায় পরিচর্যাও সহজ। গাছে ওঠা দ‚রে থাক, মাটিতে বসেই নারিকেল পাড়া যায়। ভিয়েতনাম থেকে দুই ধরনের খাটো জাতের নারিকেল চারা আনা হয়েছে। এর একটি হল সিয়াম গ্রিন কোকোনাট। এটি ডাব হিসেবে ব্যবহারের ক্ষেত্রে খুবই জনপ্রিয়। তবে ফলের আকার কিছুটা ছোট। আরেকটি জাতের নাম সিয়াম কোকোনাট। এটিও অতি জনপ্রিয় জাত ও আকারে বড়। দেশে বিশেষ এ জাতটি আমদানি করা হয়েছে। বছরে দেশি একটি গাছে ৫০ থেকে ৬০টি নারিকেল ধরলেও আমদানি করা এ গাছে গড়ে ২০০টি নারিকেল ধরবে।