ঢাকা ০৪:২২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ জানুয়ারী ২০২৫, ২৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জমিতে সবজির চাষ করে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী নারীরাও

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৫:০৫:৪০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ নভেম্বর ২০১৮
  • ৩৮৫ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার ছোট যমুনা নদী তীরবর্তী কুজাইল দক্ষিণপাড়া গ্রামের সফল নারী চাষি সানজিদা আক্তার তৃশা। নদীতীরের ১৫ শতাংশ পতিত জমিতে সবজির চাষ করে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হয়েছেন তিনি।

নিজের সংসারে বড় ধরনের ভূমিকা রাখা এই গৃহবধূকে দেখে উৎসাহিত হচ্ছেন আশপাশের অন্য নারীরাও। সানজিদা গ্রামের কৃষক মো. আবু হাসান চমকের স্ত্রী। তার সবুজে ঘেরা সবজিক্ষেতে রয়েছে পেঁয়াজ, রসুন, আলু, ধনিয়া, মরিচ ও মুলাসহ নানা সবজির গাছ।

সানজিদা বলেন, ‘জমিতে বীজ বপন, সার-সেচ দেয়া থেকে ফসল রক্ষণাবেক্ষণের সব কাজ নিজেই করি। নিজের ক্ষেতে বিষমুক্ত সবজি উৎপাদন করে নিজের পরিবারকে খাওয়াতে পারছি। বাড়তি সবজি স্থানীয় বাজারে বিক্রি করে বছরে ১৫-২০ হাজার টাকা আয়ও করছি। সেই অর্থে সন্তানদের পড়ালেখার খরচ যোগানোসহ চাহিদা পূরণ করতে পারছি।’

‘আমার দেখাদেখি আশপাশের অনেক নারীও এই সবজি চাষে স্বাবলম্বী হচ্ছেন। অন্যরা পরামর্শ নিতে এলে আমি সার্বিক সহযোগিতা ও উদ্বুদ্ধ করি। পৃষ্ঠপোষকতা পেলে সবজি চাষের পরিসর আরী বাড়াতে চাই।’

ওই গ্রামের হালিমা খাতুন বলেন, ‘আমার স্বামী দিনমজুরি করেন। সংসারে এক সময় অভাব-অনটন লেগেই থাকত। সানজিদার পরামর্শে বাড়ির উঠানে শিম, লাউ, পালংশাকসহ নানা সবজির চাষ করছি। এখন নিজের সংসারের প্রয়োজন মিটিয়েও অতিরিক্ত সবজি বিক্রি করে লাভবান হচ্ছি।’

শবনম আক্তার বলেন, ‘সানজিদার পরামর্শে আমিও বাড়ির উঠান ও পতিত জমিতে সবজির চাষ করছি। নিজেদের উৎপাদিত বিষমুক্ত এই সবজি দেশের জন্যও ভালো।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘নারীদের সবজিক্ষেত পরিদর্শন করেছি। আসলেই তাদের এই উদ্যোগ প্রশংসার দাবিদার। আশা করি, শুধু সানজিদা বা অন্যরাই নন, এক সময় উপজেলার সব নারীই বাড়ির উঠান ও পতিত জমিতে সাধ্যমতো বিষমুক্ত সবজি উৎপাদন করবেন। কৃষি সম্পর্কিত যে কোনো সহযোগিতা ও পরামর্শ দিতে আমি ও আমার সহকর্মীরা সব সময় প্রস্তুত আছি।’

উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. আহসান হাবিব রতন বলেন, ‘সানজিদা এই অঞ্চলের জন্য দৃষ্টান্ত। তার দেখাদেখি আশপাশের আরও অনেক নারী স্বাবলম্বী হওয়ার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। কেউ হাঁস-মুরগি, কেউ গরু-ছাগল পালন, আবার কেউ সবজির চাষ করছেন। আমি তাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করে আসছি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জমিতে সবজির চাষ করে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী নারীরাও

আপডেট টাইম : ০৫:০৫:৪০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ নভেম্বর ২০১৮

হাওর বার্তা ডেস্কঃ নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার ছোট যমুনা নদী তীরবর্তী কুজাইল দক্ষিণপাড়া গ্রামের সফল নারী চাষি সানজিদা আক্তার তৃশা। নদীতীরের ১৫ শতাংশ পতিত জমিতে সবজির চাষ করে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হয়েছেন তিনি।

নিজের সংসারে বড় ধরনের ভূমিকা রাখা এই গৃহবধূকে দেখে উৎসাহিত হচ্ছেন আশপাশের অন্য নারীরাও। সানজিদা গ্রামের কৃষক মো. আবু হাসান চমকের স্ত্রী। তার সবুজে ঘেরা সবজিক্ষেতে রয়েছে পেঁয়াজ, রসুন, আলু, ধনিয়া, মরিচ ও মুলাসহ নানা সবজির গাছ।

সানজিদা বলেন, ‘জমিতে বীজ বপন, সার-সেচ দেয়া থেকে ফসল রক্ষণাবেক্ষণের সব কাজ নিজেই করি। নিজের ক্ষেতে বিষমুক্ত সবজি উৎপাদন করে নিজের পরিবারকে খাওয়াতে পারছি। বাড়তি সবজি স্থানীয় বাজারে বিক্রি করে বছরে ১৫-২০ হাজার টাকা আয়ও করছি। সেই অর্থে সন্তানদের পড়ালেখার খরচ যোগানোসহ চাহিদা পূরণ করতে পারছি।’

‘আমার দেখাদেখি আশপাশের অনেক নারীও এই সবজি চাষে স্বাবলম্বী হচ্ছেন। অন্যরা পরামর্শ নিতে এলে আমি সার্বিক সহযোগিতা ও উদ্বুদ্ধ করি। পৃষ্ঠপোষকতা পেলে সবজি চাষের পরিসর আরী বাড়াতে চাই।’

ওই গ্রামের হালিমা খাতুন বলেন, ‘আমার স্বামী দিনমজুরি করেন। সংসারে এক সময় অভাব-অনটন লেগেই থাকত। সানজিদার পরামর্শে বাড়ির উঠানে শিম, লাউ, পালংশাকসহ নানা সবজির চাষ করছি। এখন নিজের সংসারের প্রয়োজন মিটিয়েও অতিরিক্ত সবজি বিক্রি করে লাভবান হচ্ছি।’

শবনম আক্তার বলেন, ‘সানজিদার পরামর্শে আমিও বাড়ির উঠান ও পতিত জমিতে সবজির চাষ করছি। নিজেদের উৎপাদিত বিষমুক্ত এই সবজি দেশের জন্যও ভালো।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘নারীদের সবজিক্ষেত পরিদর্শন করেছি। আসলেই তাদের এই উদ্যোগ প্রশংসার দাবিদার। আশা করি, শুধু সানজিদা বা অন্যরাই নন, এক সময় উপজেলার সব নারীই বাড়ির উঠান ও পতিত জমিতে সাধ্যমতো বিষমুক্ত সবজি উৎপাদন করবেন। কৃষি সম্পর্কিত যে কোনো সহযোগিতা ও পরামর্শ দিতে আমি ও আমার সহকর্মীরা সব সময় প্রস্তুত আছি।’

উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. আহসান হাবিব রতন বলেন, ‘সানজিদা এই অঞ্চলের জন্য দৃষ্টান্ত। তার দেখাদেখি আশপাশের আরও অনেক নারী স্বাবলম্বী হওয়ার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। কেউ হাঁস-মুরগি, কেউ গরু-ছাগল পালন, আবার কেউ সবজির চাষ করছেন। আমি তাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করে আসছি।