ঢাকা ০৯:৩৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এমপি লিটন আসলে কোথায়

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:২২:৫৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ অক্টোবর ২০১৫
  • ৬৭৮ বার

গাইবান্ধা-১ আসনের এমপি মঞ্জুরুল ইসলাম লিটনের ছোড়া গুলিতে ৯ বছরের শিশু সৌরভ আহত হওয়ার ঘটনায় মামলাও হলেও এখন পর্যন্ত ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছেন মামলার প্রধান আসামি এমপি লিটন। ফলে আতঙ্ক ও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে শিশুটির পরিবার এবং গ্রেফতারের দাবিতে আন্দেলনকারীরা। পুলিশের দাবি, এমপিকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তার ওপর গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। সন্ধান পেলেই যে কোনও মুহূর্তে তাকে গ্রেফতার করা হবে। এমপি লিটন গ্রেফতার না হওয়ায় এলাকাবাসী ও স্থানীয় আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তাদের মতে, আগের অপকর্মগুলোর মতো এবারো হয়তো পার পেয়ে যাবেন তিনি। আর তা হলে সরকার ও দলের ভাবমূর্তির ক্ষতি হবে বলে মন্তব্য করেছেন আলীগ নেতাকর্মীরা।
এদিকে সুন্দরগঞ্জের বামনডাঙ্গায় লিটনের বিলাসবহুল বাড়িটি এখন জনশূন্য। প্রধান ফটকে ঝুলছে তালা। বাড়ির উঠনে অলস পড়ে আছে তার সেই গাড়িটি। গত সোমবার রাতে এমপিকে গ্রেপ্তার করতে পুলিশ অভিযান চালিয়েছিল তার বামনডাঙ্গার বাসায়। কিন্তু শূন্যহাতে ফিরতে হয়েছে তাদের। সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসমাইল হোসেনের সাফ কথা, এমপিকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
গত ২ অক্টোবর শিশু সৌরভের দুপায়ে তিনটি গুলি করেন এমপি লিটন। পরে শিশুটিকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। ওই ঘটনার পর তিনদিন ধরে এমপিকে বাড়িতে শুয়ে বসে থাকতে দেখা গেছে। এরপর তার লাইসেন্স করা আগ্নেয়াস্ত্র আত্মীয়ের মাধ্যমে থানায় পাঠিয়ে দেন। তিনদিন পর মামলা দায়েরের দিনও তিনি বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। এরপরেই তিনি উধাও হয়ে যান।
এমপির প্রতিবেশীরা জানান, তার এক ছেলে ঢাকায় পড়ালেখা করে। বামনডাঙ্গার বাড়িতে স্ত্রীসহ থাকতেন এমপি লিটন। দুদিন আগে বাড়িতে তালা দিয়ে স্বামী-স্ত্রী কোথায় যেন চলে গেছেন। স্থানীয়রা জানান, রংপুরের মিঠাপুকুরে এমপির আত্মীয় স্বজন রয়েছে। সেখানেও গিয়ে থাকতে পারেন তারা। কিংবা ঢাকাতেও থাকতে পারেন।
এমপির স্বজনদের দাবি, তিনি দেশের বাইরে পালিয়ে যাননি। দেশের ভেতরেই আছেন। তবে গাঢাকা দিয়ে। দলীয় লোকজন বলছেন, তার কুকর্মের দায় দল নেবে না। দলীয় প্রধান তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথাও বলেছেন। এরপর থেকেই তিনি গাঢাকা দিয়েছেন।
এদিকে, ঘটনার দিন থেকেই আত্মগোপনে রয়েছেন এমপির পিএস। তার মোবাইল ফোনটিও বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। কয়েক দফা তার মোবাইল ফোনে কথা বলার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। মঙ্গলবার সুন্দরগঞ্জের কোথায়ও এমপিকে দেখা যায়নি। তিনি কোথায় আছেন সে সম্পর্কে কেউ কোনো তথ্য দিতে পারেননি। এর মধ্যেই তার গ্রেপ্তার দাবিতে নানা সংগঠন দিনভর কর্মসূচি পালন করেছে।
সকালে গাইবান্ধা শহরের ডিবি রোডে এমপির গ্রেপ্তার দাবি করে মানববন্ধন করেছে কয়েকটি মানবাধিকার সংগঠন। একই দাবিতে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট মুখে কালো কাপড় বেঁধে শহীদ মিনারে কর্মসূচি পালন করেছে।
জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেছেন, যেখানেই থাকুক না কেন এমপির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

এমপি লিটন আসলে কোথায়

আপডেট টাইম : ১১:২২:৫৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ অক্টোবর ২০১৫

গাইবান্ধা-১ আসনের এমপি মঞ্জুরুল ইসলাম লিটনের ছোড়া গুলিতে ৯ বছরের শিশু সৌরভ আহত হওয়ার ঘটনায় মামলাও হলেও এখন পর্যন্ত ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছেন মামলার প্রধান আসামি এমপি লিটন। ফলে আতঙ্ক ও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে শিশুটির পরিবার এবং গ্রেফতারের দাবিতে আন্দেলনকারীরা। পুলিশের দাবি, এমপিকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তার ওপর গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। সন্ধান পেলেই যে কোনও মুহূর্তে তাকে গ্রেফতার করা হবে। এমপি লিটন গ্রেফতার না হওয়ায় এলাকাবাসী ও স্থানীয় আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তাদের মতে, আগের অপকর্মগুলোর মতো এবারো হয়তো পার পেয়ে যাবেন তিনি। আর তা হলে সরকার ও দলের ভাবমূর্তির ক্ষতি হবে বলে মন্তব্য করেছেন আলীগ নেতাকর্মীরা।
এদিকে সুন্দরগঞ্জের বামনডাঙ্গায় লিটনের বিলাসবহুল বাড়িটি এখন জনশূন্য। প্রধান ফটকে ঝুলছে তালা। বাড়ির উঠনে অলস পড়ে আছে তার সেই গাড়িটি। গত সোমবার রাতে এমপিকে গ্রেপ্তার করতে পুলিশ অভিযান চালিয়েছিল তার বামনডাঙ্গার বাসায়। কিন্তু শূন্যহাতে ফিরতে হয়েছে তাদের। সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসমাইল হোসেনের সাফ কথা, এমপিকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
গত ২ অক্টোবর শিশু সৌরভের দুপায়ে তিনটি গুলি করেন এমপি লিটন। পরে শিশুটিকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। ওই ঘটনার পর তিনদিন ধরে এমপিকে বাড়িতে শুয়ে বসে থাকতে দেখা গেছে। এরপর তার লাইসেন্স করা আগ্নেয়াস্ত্র আত্মীয়ের মাধ্যমে থানায় পাঠিয়ে দেন। তিনদিন পর মামলা দায়েরের দিনও তিনি বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। এরপরেই তিনি উধাও হয়ে যান।
এমপির প্রতিবেশীরা জানান, তার এক ছেলে ঢাকায় পড়ালেখা করে। বামনডাঙ্গার বাড়িতে স্ত্রীসহ থাকতেন এমপি লিটন। দুদিন আগে বাড়িতে তালা দিয়ে স্বামী-স্ত্রী কোথায় যেন চলে গেছেন। স্থানীয়রা জানান, রংপুরের মিঠাপুকুরে এমপির আত্মীয় স্বজন রয়েছে। সেখানেও গিয়ে থাকতে পারেন তারা। কিংবা ঢাকাতেও থাকতে পারেন।
এমপির স্বজনদের দাবি, তিনি দেশের বাইরে পালিয়ে যাননি। দেশের ভেতরেই আছেন। তবে গাঢাকা দিয়ে। দলীয় লোকজন বলছেন, তার কুকর্মের দায় দল নেবে না। দলীয় প্রধান তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথাও বলেছেন। এরপর থেকেই তিনি গাঢাকা দিয়েছেন।
এদিকে, ঘটনার দিন থেকেই আত্মগোপনে রয়েছেন এমপির পিএস। তার মোবাইল ফোনটিও বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। কয়েক দফা তার মোবাইল ফোনে কথা বলার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। মঙ্গলবার সুন্দরগঞ্জের কোথায়ও এমপিকে দেখা যায়নি। তিনি কোথায় আছেন সে সম্পর্কে কেউ কোনো তথ্য দিতে পারেননি। এর মধ্যেই তার গ্রেপ্তার দাবিতে নানা সংগঠন দিনভর কর্মসূচি পালন করেছে।
সকালে গাইবান্ধা শহরের ডিবি রোডে এমপির গ্রেপ্তার দাবি করে মানববন্ধন করেছে কয়েকটি মানবাধিকার সংগঠন। একই দাবিতে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট মুখে কালো কাপড় বেঁধে শহীদ মিনারে কর্মসূচি পালন করেছে।
জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেছেন, যেখানেই থাকুক না কেন এমপির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।