ঢাকা ১১:৩৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এবার বেতন বাড়ছে রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রীর

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:০৯:৪০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ অক্টোবর ২০১৫
  • ৩৯২ বার

অচিরেই বাংলাদেশ সরকারের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের বেতন বাড়ছে। প্রায় দ্বিগুণ হারে বেতনের অর্থ বাড়ার সঙ্গে বাড়ছে তাদের বিভিন্ন ভাতাও।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এ সংক্রান্ত আইন সংশোধনের প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করেছে। এর আগে সেপ্টেম্বর মাসে সরকারি কর্মচারীদের বেতন বাড়িয়ে প্রায় দ্বিগুণ করা হয়েছে।

শনিবার মন্ত্রিপরিষদ সচিবের বরাত দিয়ে স্থানীয় দৈনিক কালের কণ্ঠ এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে।

সরকারি কর্মচারীদের বেতন মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের পর গেজেট হলেই চলে। তবে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীসহ অন্য মন্ত্রীর মতো গুরুত্বপূর্ণ পদের বেতন বাড়াতে হলে আইন সংশোধন করতে হয়।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এখন সংশ্লিষ্ট আইনগুলো সংশোধন করে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীসহ অন্য মন্ত্রীদের বেতন বাড়ানোর প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করেছে। এ-সংক্রান্ত একটি সারসংক্ষেপ মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এরই মধ্যে অনুমোদন করেছেন।

মন্ত্রিপরিষদসচিব মোশাররাফ হোসাইন ভূঁইঞা বলেন, ‘নতুন পে স্কেলের পর মন্ত্রীদেরও বেতন-ভাতা বৃদ্ধি পায়। এটাই রেওয়াজ। তারই ধারাবাহিকতায় মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্টদের বেতন-ভাতা বাড়ানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।’

রাষ্ট্রপতির বেতন বাড়ানোর জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ‘দ্য প্রেসিডেন্ট’স (রেম্যুনারেশন অ্যান্ড প্রিভিলেজেস) অ্যাক্ট ১৯৭৫’, প্রধানমন্ত্রীর বেতন বাড়ানোর জন্য ‘দ্য প্রাইম মিনিস্টার’স (রেম্যুনারেশন অ্যান্ড প্রিভিলেজেস) অ্যাক্ট, ১৯৭৫’ আর মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের বেতন বাড়ানোর জন্য ‘দ্য মিনিস্টার’স, মিনিস্টার’স অব দ্য স্টেট অ্যান্ড ডেপুটি মিনিস্টার’স (রেম্যুনারেশন অ্যান্ড প্রিভিলেজেস) অ্যাক্ট, ১৯৭৩’ সংশোধনের প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করেছে।

সরকারি কর্মচারীদের নতুন বেতন কাঠামোর গেজেট প্রকাশের পর একই দিনে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী, জাতীয় সংসদের স্পিকার, ডেপুটি স্পিকারের বেতন এবং সংসদ সদস্যদের সম্মানী বাড়ানোর প্রস্তাব মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের জন্য উত্থাপন করা হবে। এর আগে ২০০৯ সালে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের বেতন বাড়ানো হয়েছিল।

কার কত বাড়ছে:
রাষ্ট্রপতির বর্তমান মূল বেতন ৬২,২০০ টাকা। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সারসংক্ষেপ অনুযায়ী, তার মূল বেতন ৮৩ শতাংশ বাড়িয়ে ১ লাখ ১২,০০০ টাকা করা হচ্ছে। এর সঙ্গে যোগ হবে অন্যান্য ভাতা।

প্রধানমন্ত্রীর বর্তমান মূল বেতন ৫৮,৬০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১,৫২০০ টাকা হচ্ছে। মন্ত্রীদের বর্তমান মূল বেতন ৫৩,১০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৯৭,২০০ টাকা, প্রতিমন্ত্রীদের মূল বেতন ৪৭,৮০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮৭,৫০০ টাকা এবং উপমন্ত্রীদের মূল বেতন ৪৫,১৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮৬,৫০০ টাকা নির্ধারণ করা হচ্ছে। এ ছাড়া তাদের বাড়ি রক্ষণাবেক্ষণ, দৈনন্দিন ভাতা, যাতায়াত ভাতাসহ অন্যান্য ভাতাও বাড়ানো হচ্ছে।

এর মধ্যে বর্তমানে সচিবদের দৈনন্দিন ভাতা (ডিএ) মন্ত্রীদের চেয়ে বেশি। এর আগে এটি সংশোধন করে মন্ত্রীদের ডিএ বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছিল মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। প্রধানমন্ত্রী তাতে আপত্তি করায় তখন তা হয়নি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান মন্ত্রিসভায় ৩১ জন মন্ত্রী, ১৮ জন প্রতিমন্ত্রী ও দু’জন উপমন্ত্রী রয়েছেন। আর মন্ত্রী পদমর্যাদায় প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা রয়েছেন পাঁচজন।

প্রক্রিয়া চলছে আরো:
মন্ত্রিসভার সদস্য, জাতীয় সংসদের স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের বেতনের সঙ্গে জাতীয় সংসদের ৩৫০ জন সদস্যের (এমপি) সম্মানী বাড়ানোর প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। সংসদ সদস্যদের সম্মানী বাড়ানোর কাজ করছে সংসদ সচিবালয়।

এ ছাড়া বিভিন্ন সাংবিধানিক সংস্থাও নিজেদের চেয়ারম্যান, সদস্যসহ সংশ্লিষ্টদের নির্দিষ্ট হারে বেতন বাড়ানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে বলে সরকারের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যান ও সদস্যদের বেতন বাড়ানোর জন্য এ-সংক্রান্ত আইনটি সংশোধনের প্রক্রিয়া শুরু করেছে পিএসসি সচিবালয়। বিচারকদের বেতন বাড়ানোর প্রক্রিয়াও চলমান রয়েছে বলে সম্প্রতি জানিয়েছেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মাহবুব আহমেদ।

পে স্কেল পুনর্নির্ধারণ (ফিক্সেশন):
গত মাসে সরকারি কর্মচারীদের বেতন কাঠামো অনুমোদনের সময় সচিবদের বেতন বাড়ানো হয়েছে সর্বনিম্ন ৯৫ শতাংশ। ওই সময় ২০ নম্বর গ্রেডভুক্ত কর্মচারীদের বেতন বাড়ানো হয়েছে সর্বোচ্চ ১০১.২৩ শতাংশ।

বর্ধিত বেতন গত জুলাই থেকে কার্যকর করা হলেও কর্মচারীরা এখনো পুনর্নির্ধারিত হারে বেতন পাচ্ছেন না। বর্তমানে তাদের বেতন ফিক্সেশনের কাজ করছে অর্থ মন্ত্রণালয়। আগামী নভেম্বর থেকে তারা বকেয়া বেতনসহ বর্ধিত হারের বেতন উত্তোলন করতে পারবেন বলে জানিয়েছেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।

কর্মকর্তারা জানান, নতুন বেতন কাঠামোর গেজেট জারির সব প্রক্রিয়া প্রায় সম্পন্ন হয়ে আছে। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত পেরু থেকে আগামী ১৬ অক্টোবর দেশে ফেরার পর রাষ্ট্রপতির অনুমোদনক্রমে এ মাসের শেষেই এর গেজেট জারি হতে পারে। আর গেজেট জারির পর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতায় কোনো বৈষম্য দেখা দিলে তা পর্যালোচনা করতে বৈঠক করবে অর্থমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন বেতন বৈষম্য দূরীকরণ সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি।

চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্তরাও বেতন পাবেন নতুন স্কেলে:
বিধিবিধান পরিবর্তনের নির্দেশ অনুযায়ী চুক্তিভিত্তিক নিয়োজিত কর্মকর্তারাও নতুন পে স্কেলের সুবিধা পাবেন। এমনকি পে স্কেল বাস্তবায়নকালে যাদের পিআরএল বাতিল করে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হবে তারাও এ সুবিধা পাবেন।

অর্থ মন্ত্রণালয় বলেছে, যেসব কর্মকর্তা নতুন বেতন স্কেল কার্যকরের সময় জনস্বার্থে পিআরএল বাতিলের শর্তে সরকারি পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োজিত থাকবেন, তাদের বিশেষ বিবেচনায় নতুন পেনশন ও আনুতোষিক গ্রহণের সুযোগ দিতে হবে।

গত সপ্তাহে অর্থ মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত বিধিবিধান পরিবর্তনের জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করেছে। একই সঙ্গে অর্থ মন্ত্রণালয় এ-সংক্রান্ত নির্দেশনা অবহিত হওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে একবার এবং বাস্তবায়ন সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত প্রতি মাসের ৪ তারিখের মধ্যে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণ অধিশাখায় পাঠানোর জন্য নির্দেশ দিয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

এবার বেতন বাড়ছে রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রীর

আপডেট টাইম : ১১:০৯:৪০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ অক্টোবর ২০১৫

অচিরেই বাংলাদেশ সরকারের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের বেতন বাড়ছে। প্রায় দ্বিগুণ হারে বেতনের অর্থ বাড়ার সঙ্গে বাড়ছে তাদের বিভিন্ন ভাতাও।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এ সংক্রান্ত আইন সংশোধনের প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করেছে। এর আগে সেপ্টেম্বর মাসে সরকারি কর্মচারীদের বেতন বাড়িয়ে প্রায় দ্বিগুণ করা হয়েছে।

শনিবার মন্ত্রিপরিষদ সচিবের বরাত দিয়ে স্থানীয় দৈনিক কালের কণ্ঠ এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে।

সরকারি কর্মচারীদের বেতন মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের পর গেজেট হলেই চলে। তবে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীসহ অন্য মন্ত্রীর মতো গুরুত্বপূর্ণ পদের বেতন বাড়াতে হলে আইন সংশোধন করতে হয়।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এখন সংশ্লিষ্ট আইনগুলো সংশোধন করে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীসহ অন্য মন্ত্রীদের বেতন বাড়ানোর প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করেছে। এ-সংক্রান্ত একটি সারসংক্ষেপ মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এরই মধ্যে অনুমোদন করেছেন।

মন্ত্রিপরিষদসচিব মোশাররাফ হোসাইন ভূঁইঞা বলেন, ‘নতুন পে স্কেলের পর মন্ত্রীদেরও বেতন-ভাতা বৃদ্ধি পায়। এটাই রেওয়াজ। তারই ধারাবাহিকতায় মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্টদের বেতন-ভাতা বাড়ানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।’

রাষ্ট্রপতির বেতন বাড়ানোর জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ‘দ্য প্রেসিডেন্ট’স (রেম্যুনারেশন অ্যান্ড প্রিভিলেজেস) অ্যাক্ট ১৯৭৫’, প্রধানমন্ত্রীর বেতন বাড়ানোর জন্য ‘দ্য প্রাইম মিনিস্টার’স (রেম্যুনারেশন অ্যান্ড প্রিভিলেজেস) অ্যাক্ট, ১৯৭৫’ আর মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের বেতন বাড়ানোর জন্য ‘দ্য মিনিস্টার’স, মিনিস্টার’স অব দ্য স্টেট অ্যান্ড ডেপুটি মিনিস্টার’স (রেম্যুনারেশন অ্যান্ড প্রিভিলেজেস) অ্যাক্ট, ১৯৭৩’ সংশোধনের প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করেছে।

সরকারি কর্মচারীদের নতুন বেতন কাঠামোর গেজেট প্রকাশের পর একই দিনে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী, জাতীয় সংসদের স্পিকার, ডেপুটি স্পিকারের বেতন এবং সংসদ সদস্যদের সম্মানী বাড়ানোর প্রস্তাব মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের জন্য উত্থাপন করা হবে। এর আগে ২০০৯ সালে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের বেতন বাড়ানো হয়েছিল।

কার কত বাড়ছে:
রাষ্ট্রপতির বর্তমান মূল বেতন ৬২,২০০ টাকা। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সারসংক্ষেপ অনুযায়ী, তার মূল বেতন ৮৩ শতাংশ বাড়িয়ে ১ লাখ ১২,০০০ টাকা করা হচ্ছে। এর সঙ্গে যোগ হবে অন্যান্য ভাতা।

প্রধানমন্ত্রীর বর্তমান মূল বেতন ৫৮,৬০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১,৫২০০ টাকা হচ্ছে। মন্ত্রীদের বর্তমান মূল বেতন ৫৩,১০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৯৭,২০০ টাকা, প্রতিমন্ত্রীদের মূল বেতন ৪৭,৮০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮৭,৫০০ টাকা এবং উপমন্ত্রীদের মূল বেতন ৪৫,১৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮৬,৫০০ টাকা নির্ধারণ করা হচ্ছে। এ ছাড়া তাদের বাড়ি রক্ষণাবেক্ষণ, দৈনন্দিন ভাতা, যাতায়াত ভাতাসহ অন্যান্য ভাতাও বাড়ানো হচ্ছে।

এর মধ্যে বর্তমানে সচিবদের দৈনন্দিন ভাতা (ডিএ) মন্ত্রীদের চেয়ে বেশি। এর আগে এটি সংশোধন করে মন্ত্রীদের ডিএ বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছিল মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। প্রধানমন্ত্রী তাতে আপত্তি করায় তখন তা হয়নি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান মন্ত্রিসভায় ৩১ জন মন্ত্রী, ১৮ জন প্রতিমন্ত্রী ও দু’জন উপমন্ত্রী রয়েছেন। আর মন্ত্রী পদমর্যাদায় প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা রয়েছেন পাঁচজন।

প্রক্রিয়া চলছে আরো:
মন্ত্রিসভার সদস্য, জাতীয় সংসদের স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের বেতনের সঙ্গে জাতীয় সংসদের ৩৫০ জন সদস্যের (এমপি) সম্মানী বাড়ানোর প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। সংসদ সদস্যদের সম্মানী বাড়ানোর কাজ করছে সংসদ সচিবালয়।

এ ছাড়া বিভিন্ন সাংবিধানিক সংস্থাও নিজেদের চেয়ারম্যান, সদস্যসহ সংশ্লিষ্টদের নির্দিষ্ট হারে বেতন বাড়ানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে বলে সরকারের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যান ও সদস্যদের বেতন বাড়ানোর জন্য এ-সংক্রান্ত আইনটি সংশোধনের প্রক্রিয়া শুরু করেছে পিএসসি সচিবালয়। বিচারকদের বেতন বাড়ানোর প্রক্রিয়াও চলমান রয়েছে বলে সম্প্রতি জানিয়েছেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মাহবুব আহমেদ।

পে স্কেল পুনর্নির্ধারণ (ফিক্সেশন):
গত মাসে সরকারি কর্মচারীদের বেতন কাঠামো অনুমোদনের সময় সচিবদের বেতন বাড়ানো হয়েছে সর্বনিম্ন ৯৫ শতাংশ। ওই সময় ২০ নম্বর গ্রেডভুক্ত কর্মচারীদের বেতন বাড়ানো হয়েছে সর্বোচ্চ ১০১.২৩ শতাংশ।

বর্ধিত বেতন গত জুলাই থেকে কার্যকর করা হলেও কর্মচারীরা এখনো পুনর্নির্ধারিত হারে বেতন পাচ্ছেন না। বর্তমানে তাদের বেতন ফিক্সেশনের কাজ করছে অর্থ মন্ত্রণালয়। আগামী নভেম্বর থেকে তারা বকেয়া বেতনসহ বর্ধিত হারের বেতন উত্তোলন করতে পারবেন বলে জানিয়েছেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।

কর্মকর্তারা জানান, নতুন বেতন কাঠামোর গেজেট জারির সব প্রক্রিয়া প্রায় সম্পন্ন হয়ে আছে। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত পেরু থেকে আগামী ১৬ অক্টোবর দেশে ফেরার পর রাষ্ট্রপতির অনুমোদনক্রমে এ মাসের শেষেই এর গেজেট জারি হতে পারে। আর গেজেট জারির পর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতায় কোনো বৈষম্য দেখা দিলে তা পর্যালোচনা করতে বৈঠক করবে অর্থমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন বেতন বৈষম্য দূরীকরণ সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি।

চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্তরাও বেতন পাবেন নতুন স্কেলে:
বিধিবিধান পরিবর্তনের নির্দেশ অনুযায়ী চুক্তিভিত্তিক নিয়োজিত কর্মকর্তারাও নতুন পে স্কেলের সুবিধা পাবেন। এমনকি পে স্কেল বাস্তবায়নকালে যাদের পিআরএল বাতিল করে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হবে তারাও এ সুবিধা পাবেন।

অর্থ মন্ত্রণালয় বলেছে, যেসব কর্মকর্তা নতুন বেতন স্কেল কার্যকরের সময় জনস্বার্থে পিআরএল বাতিলের শর্তে সরকারি পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োজিত থাকবেন, তাদের বিশেষ বিবেচনায় নতুন পেনশন ও আনুতোষিক গ্রহণের সুযোগ দিতে হবে।

গত সপ্তাহে অর্থ মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত বিধিবিধান পরিবর্তনের জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করেছে। একই সঙ্গে অর্থ মন্ত্রণালয় এ-সংক্রান্ত নির্দেশনা অবহিত হওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে একবার এবং বাস্তবায়ন সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত প্রতি মাসের ৪ তারিখের মধ্যে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণ অধিশাখায় পাঠানোর জন্য নির্দেশ দিয়েছে।