ঢাকা ১২:২৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মার্কিন আধিপত্য রুখতে কঠোর হচ্ছে চীন-রাশিয়া

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:৪৭:৫৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ নভেম্বর ২০১৮
  • ২৬২ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ মার্কিন আধিপত্যকামী নীতিকে কঠোরভাবে মোকাবেলা করবে বলে ঘোষণা দিয়েছে চীন ও রাশিয়া। চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াং ও রুশ প্রধানমন্ত্রী দিমিত্রি মেদভেদেভ এক বৈঠকে এ কথা বলেন।

তারা বলেন, মার্কিন একপেশে নীতি বিশ্বের জন্য মারাত্মক বিপদ। তাই মস্কো ও বেইজিং বিশ্বে নিরাপত্তা ও শান্তি বজায় রাখার জন্য বিশ্ব-বাণিজ্য সংস্থাসহ বহু-মেরু-কেন্দ্রীক বিশ্ব-ব্যবস্থাকে সুরক্ষা দেবে।

চীন ও রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রীরা জ্বালানি, বিনিয়োগ, বিমান-শিল্প, পর্যটন, গণমাধ্যম, খেলাধুলা ও যুব সমাজ বিষয়ে সহযোগিতার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন।

এ ছাড়াও তারা দ্বিপাক্ষিক ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিস্তারের ওপর জোর দিয়েছেন এবং দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য-বিনিময় বাড়িয়ে দশ হাজার কোটি ডলারে উন্নীত করার কথা বলেছেন।

মার্কিন একপেশে নীতির মোকাবেলায় চীন ও রাশিয়ার ঐক্যবদ্ধ ও কঠোর কর্মসূচি থেকে এটা স্পষ্ট যে তারা ওয়াশিংটনকে একপেশে নীতি থেকে পিছু হটাতে বাধ্য করতে চায়। অন্যদিকে একপেশে নীতি বজায় রেখে ওয়াশিংটন সারা বিশ্বের জন্য পুলিশ বা মোড়লের ভূমিকা রাখতে চায়।

চীন ও রাশিয়া মার্কিন একপেশে নীতির বিরুদ্ধে আগেও সক্রিয় ছিল। তবে ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর মার্কিন একপেশে নীতির হঠকারিতা অনেক বেশি বেড়ে যাওয়ায় মার্কিন বিরোধী এ দুই প্রধান শক্তি মার্কিন আধিপত্যকামিতার মোকাবেলায় অনেক বেশি ঘনিষ্ঠ হয়েছে। এমনকি ওয়াশিংটনের ইউরোপীয় মিত্ররাও মার্কিন একপেশে নীতির বিরোধী হয়ে উঠছে।

ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর মার্কিন সরকার অনেক আন্তর্জাতিক চুক্তি থেকে বেরিয়ে গেছে। যেমন, আবহাওয়া বিষয়ক প্যারিস চুক্তি, অভিবাসন বিষয়ক চুক্তি ও ইরানের পরমাণু বিষয়ক চুক্তিসহ আরও কয়েকটি আন্তর্জাতিক চুক্তি। অন্যদের স্বার্থ গোল্লায় যাক্ বা কম গুরুত্ব পাক, মার্কিন স্বার্থই বড় কথা-এই নীতিই অন্য দেশ ও শক্তিগুলোর ওপর চাপিয়ে দিতে চায় হোয়াইট হাউজ।

অন্য দেশগুলোর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বা অর্থনৈতিক চুক্তিকে আন্তর্জাতিক চুক্তিগুলোর বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করতে চায় ট্রাম্পের মার্কিন সরকার যাতে যখন-খুশি তখনই এসব চুক্তি বাতিল করা যায়। ট্রাম্পের দৃষ্টিতে আন্তর্জাতিক চুক্তিগুলো মার্কিন স্বার্থ রক্ষা করছে না।

চীনসহ কয়েকটি দেশের রফতানি পণ্যের ওপর অপ্রচলিত মাত্রায় ব্যাপক শুল্ক আরোপ করেছে ট্রাম্প সরকার। ফলে এসব দেশ মার্কিন বিরোধী নতুন রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক জোট গড়ে তুলছে। মার্কিন নিষেধাজ্ঞার শিকার দেশগুলোও মার্কিন বিরোধী এসব মেরুকরণে যোগ দিচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মার্কিন সরকারের একতরফা নিষেধাজ্ঞাগুলো আন্তর্জাতিক আইনের বিরোধী। মার্কিন এই নীতি চলতে থাকায় বিশ্ব-অঙ্গনে ক্রমেই কোণঠাসা হয়ে পড়ছে ওয়াশিংটন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

মার্কিন আধিপত্য রুখতে কঠোর হচ্ছে চীন-রাশিয়া

আপডেট টাইম : ১২:৪৭:৫৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ নভেম্বর ২০১৮

হাওর বার্তা ডেস্কঃ মার্কিন আধিপত্যকামী নীতিকে কঠোরভাবে মোকাবেলা করবে বলে ঘোষণা দিয়েছে চীন ও রাশিয়া। চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াং ও রুশ প্রধানমন্ত্রী দিমিত্রি মেদভেদেভ এক বৈঠকে এ কথা বলেন।

তারা বলেন, মার্কিন একপেশে নীতি বিশ্বের জন্য মারাত্মক বিপদ। তাই মস্কো ও বেইজিং বিশ্বে নিরাপত্তা ও শান্তি বজায় রাখার জন্য বিশ্ব-বাণিজ্য সংস্থাসহ বহু-মেরু-কেন্দ্রীক বিশ্ব-ব্যবস্থাকে সুরক্ষা দেবে।

চীন ও রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রীরা জ্বালানি, বিনিয়োগ, বিমান-শিল্প, পর্যটন, গণমাধ্যম, খেলাধুলা ও যুব সমাজ বিষয়ে সহযোগিতার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন।

এ ছাড়াও তারা দ্বিপাক্ষিক ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিস্তারের ওপর জোর দিয়েছেন এবং দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য-বিনিময় বাড়িয়ে দশ হাজার কোটি ডলারে উন্নীত করার কথা বলেছেন।

মার্কিন একপেশে নীতির মোকাবেলায় চীন ও রাশিয়ার ঐক্যবদ্ধ ও কঠোর কর্মসূচি থেকে এটা স্পষ্ট যে তারা ওয়াশিংটনকে একপেশে নীতি থেকে পিছু হটাতে বাধ্য করতে চায়। অন্যদিকে একপেশে নীতি বজায় রেখে ওয়াশিংটন সারা বিশ্বের জন্য পুলিশ বা মোড়লের ভূমিকা রাখতে চায়।

চীন ও রাশিয়া মার্কিন একপেশে নীতির বিরুদ্ধে আগেও সক্রিয় ছিল। তবে ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর মার্কিন একপেশে নীতির হঠকারিতা অনেক বেশি বেড়ে যাওয়ায় মার্কিন বিরোধী এ দুই প্রধান শক্তি মার্কিন আধিপত্যকামিতার মোকাবেলায় অনেক বেশি ঘনিষ্ঠ হয়েছে। এমনকি ওয়াশিংটনের ইউরোপীয় মিত্ররাও মার্কিন একপেশে নীতির বিরোধী হয়ে উঠছে।

ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর মার্কিন সরকার অনেক আন্তর্জাতিক চুক্তি থেকে বেরিয়ে গেছে। যেমন, আবহাওয়া বিষয়ক প্যারিস চুক্তি, অভিবাসন বিষয়ক চুক্তি ও ইরানের পরমাণু বিষয়ক চুক্তিসহ আরও কয়েকটি আন্তর্জাতিক চুক্তি। অন্যদের স্বার্থ গোল্লায় যাক্ বা কম গুরুত্ব পাক, মার্কিন স্বার্থই বড় কথা-এই নীতিই অন্য দেশ ও শক্তিগুলোর ওপর চাপিয়ে দিতে চায় হোয়াইট হাউজ।

অন্য দেশগুলোর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বা অর্থনৈতিক চুক্তিকে আন্তর্জাতিক চুক্তিগুলোর বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করতে চায় ট্রাম্পের মার্কিন সরকার যাতে যখন-খুশি তখনই এসব চুক্তি বাতিল করা যায়। ট্রাম্পের দৃষ্টিতে আন্তর্জাতিক চুক্তিগুলো মার্কিন স্বার্থ রক্ষা করছে না।

চীনসহ কয়েকটি দেশের রফতানি পণ্যের ওপর অপ্রচলিত মাত্রায় ব্যাপক শুল্ক আরোপ করেছে ট্রাম্প সরকার। ফলে এসব দেশ মার্কিন বিরোধী নতুন রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক জোট গড়ে তুলছে। মার্কিন নিষেধাজ্ঞার শিকার দেশগুলোও মার্কিন বিরোধী এসব মেরুকরণে যোগ দিচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মার্কিন সরকারের একতরফা নিষেধাজ্ঞাগুলো আন্তর্জাতিক আইনের বিরোধী। মার্কিন এই নীতি চলতে থাকায় বিশ্ব-অঙ্গনে ক্রমেই কোণঠাসা হয়ে পড়ছে ওয়াশিংটন।