আবারো আলোচনায় সেই বাসন্তী। জীবন্ত সেই বাসন্তিকে মৃত বানিয়ে আদালতে মামলা করায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। ৭৪’র আলোচিত নারী বাসন্তী। ফেসবুকে বাসন্তীকে নিয়ে একটি ছবি পোস্ট করাকে কেন্দ্র করে তথ্য ও প্রযুক্তি আইনের ৫৭(ক) ধারার অপরাধ সংঘটিত করা হয়েছে মর্মে চট্টগ্রাম মহানগর আদালতে মামলা করা হয়।
এ ঘটনা জানাজানির পর বাসন্তীর পরিবারসহ চিলমারীতে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। জন্মগত বাক-প্রতিবন্ধী বাসন্তীকে ফের কোনো ইস্যু তৈরি হোক এটা তাদের কাম্য নয়।
জানা গেছে, বেশ কয়েকদিন আগে যমুনা অয়েল কোম্পানির এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং সিবিএ নেতা মোহাম্মদ ইয়াকুব আলী কুড়িগ্রামের চিলমারীতে বেড়াতে এসে ৭৪-এর আলোচিত বাসন্তীর কথা জানতে পারেন।
বাসন্তীকে এক নজর দেখতে তিনি চিলমারী উপজেলার রমনা ইউনিয়নের জোড়গাছ মাঝিপাড়ায় বাসন্তীর বাড়িতে যান। সেখানে বাসন্তীর সঙ্গে বেশ কয়েকেটি ছবি তোলেন।
পরে ২৯ আগস্ট রাতে বাসন্তীর ছবি ফেসবুকে স্ট্যাটাসসহ পোস্ট করেন তিনি। সেখানে বাসন্তীর সাহায্যে এগিয়ে আসার আহবানসহ প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানানো হয়।
ঠিক এর কয়েকদিন পর গত সোমবার জনৈক ইফতেখার কামাল খান নামে এক ব্যক্তি বাসন্তীকে মৃত দাবি করে তথ্য ও প্রযুক্তি আইনের ৫৭ (ক) ধারায় চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম ফরিদ আলমের আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন।
তিনি দাবি করেন, অনেক আগে মৃত বাসন্তীকে জীবিত দেখিয়ে মিথ্যা ছবি পোস্ট করে প্রধানমন্ত্রীর সাহায্য চাওয়া রাষ্ট্র ও সরকারকে উৎখাতের ষড়যন্ত্র বলে প্রতিভাত হয়। এতে অপরাধ সংঘটিত করেছেন তিনি। মামলার ঘটনাটি জানাজানি হলে চিলমারীতে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।
জানা গেছে, মামলার খবরে বাসন্তীর বড় ভাই আশুরাম ক্ষুব্ধ। তার বাক-প্রতিবন্ধী ছোট বোনকে নিয়ে অনেক আগে তামাশা হয়েছে। অভাবের সুযোগ নিয়ে ’৭৪ সালে সাজানো ছবি প্রকাশ করে বিভ্রান্ত করা হয়। বাসন্তীকে নিয়ে অনেকেই রাজনৈতিক ফায়দা লুটেছে। এখন বলা হচ্ছে সে মৃত। একেবারে ডাহা মিছা কথা। তাকে নিয়ে আর কোনো নতুন নাটকের জন্ম দিতে চান না তিনি।
বাসন্তীর চার ভাই-বোনের মধ্যে ১ ভাই ১ বোন মারা গেছে বলে জানা। বাসন্তী আর আশুরাম বেঁচে আছেন। এটাই বাস্তব সত্য।
মামলার বিবাদী মোহাম্মদ ইয়াকুব আলীর অভিযোগ, পূর্ব শত্রুতার জেরে তাকে হেয় করতে একটি মহল হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে। সরল বিশ্বাসে ও মানবিক দিক বিবেচনা করে তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বাসন্তীর জন্য সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিতে প্রধানমন্ত্রীসহ হৃদয়বান ব্যক্তিদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন মাত্র।
এ বিষয়ে রমনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুর-ই-এলাহী তুহিন সাংবাদিকদের বলেন, ৭৪-এর সেই বাসন্তী এখনো বেঁচে আছে। যারা বাসন্তীকে মৃত বলছে আসলে তারা মিথ্যাচার করছে।
তিনি বলেন, বাসন্তীর নামে একটি বয়স্ক ভাতার কার্ডও আছে, যার হিসাব নং-৮৪৬। তার জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর-৪৯১০৯৫৯৫৩৮৪৯০, জন্মতারিখ ১১/১০/১৯৪২। বাসন্তীর স্থায়ী পুনর্বাসনে সরকারের সহায়তা কামনা করেছেন তিনি।