হাওর বার্তা ডেস্কঃ খ্রিস্টান ধর্মের রোমান ক্যাথলিক শাখার প্রধান ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিসকে উত্তর কোরিয়া সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন দেশটির নেতা কিম জং উন। মঙ্গলবার (৯ অক্টোবর) দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র এ তথ্য জানিয়েছেন।
ইউরোপ সফরের অংশ হিসেবে আগামী সপ্তাহে ভ্যাটিকানে যাবেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জ্যায়ে-ইন। দক্ষিণের এই প্রেসিডেন্টের মাধ্যমে পোপ ফ্রান্সিসকে পিয়ংইয়ং সফরের আমন্ত্রণ জানাবেন কিম।
প্রয়াত পোপ জন পল দ্বিতীয়কে উত্তর কোরিয়া সফরের জন্য একবার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তবে এখন পর্যন্ত কোনো পোপ দেশটি সফরে যাননি।
বিশ্ব থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে ভ্যাটিকানের আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই। দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র কিম এউই-কিয়ম বলেছেন, পোপ ফ্রান্সিসের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় চেয়ারম্যান কিম জং উনের আমন্ত্রণ বার্তা পোপ ফ্রান্সিসকে অবগত করবেন মুন জ্যায়ে-ইন। উত্তর কোরিয়ার রাজধানী পিয়ংইয়ং সফরে গেলে পোপকে আন্তরিকভাবে স্বাগত জানাবেন কিম।
সম্প্রতি উত্তর কোরিয়া যে নমনীয় দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করেছে পোপ ফ্রান্সিসকে আমন্ত্রণ জানানো তারই একটি অংশ। চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সিঙ্গাপুরে নজিরবিহীন এক বৈঠক করেন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন। একই সময়ে আন্তঃকোরীয় নেতারা প্রায় তিনবার বৈঠকে বসেন।
উত্তর কোরিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রথমবারের মতো কিম জং উন এবং ডোনাল্ড ট্রাম্প ঐতিহাসিক ওই বৈঠক করেন। এর আগে, ২০০০ সালে কিম জং উনের বাবা কিম জং ইল পোপ জন পল দ্বিতীয়কে উত্তর কোরিয়া সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। সেই সময় খ্রিস্টান ধর্মের রোমান ক্যাথলিক শাখার প্রধান প্রয়াত এই ধর্মগুরু বলেছিলেন, তিনি যদি উত্তর কোরিয়া সফরে যান; তাহলে সেটি হবে অলৌকিক ঘটনা।
তৎকালীন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম দায়ে-জাং এক বৈঠকে পোপ জন পলকে পিয়ংইয়ং সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। তবে আলোর মুখ দেখেনি সেই আমন্ত্রণ।
মার্কিন বার্তাসংস্থা এসোসিয়েট প্রেস বলছে, সেই সময় ভ্যাটিকান জোর দিয়ে বলেছিল, উত্তর কোরিয়ায় যদি ক্যাথলিক ধর্মগুরুদের গ্রহণ করা হয়, তবেই পোপ সফরে যাবেন।
উত্তর কোরিয়ার সংবিধানে ধর্মীয় বিশ্বাসের অধিকারের স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে এবং রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত গির্জাও রয়েছে দেশটিতে। তবে মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, এটা কার্যত লোক দেখানো।
আর্ন্তজাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের গবেষক আর্নল্ড ফ্যাং বলেন, প্রকৃতপক্ষে, সেখানে ধর্মীয় স্বাধীনতা নেই। ২০১৪ সালে জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, উত্তর কোরিয়ায় সরকারি নিয়ন্ত্রণাধীন গির্জা ছাড়া অন্য কোথাও উপাসনা করলে কঠোর শাস্তি ও নির্যাতনের মুখোমুখি হতে হয় খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের।