ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াজুল হক খান মিল্কি হত্যা মামলায় ১৮ জনকে অভিযুক্ত করে অধিকতর তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছে পুলিশের ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট (সিআইডি)।
অধিকতর তদন্ত প্রতিবেদনে আগের চার্জশিটভুক্ত ১১ আসামির সঙ্গে আরও ৭ জনকে অন্তর্ভুক্ত করে মোট ১৮ জনের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। আর অভিযোগপত্রে ৯ জনকে মামলার দায় থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। চঞ্চলসহ চারজনকে পলাতক দেখিয়ে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন করা হয়েছে।
অভিযুক্ত ১৮ আসামি হলেন- সাখাওয়াত হোসেন চঞ্চল, মো. আমিনুল ইসলাম ওরফে হাবিব, মো. সোহেল মাহমুদ ওরফে সোহেল ভূঁইয়া, মো. চুন্নু মিয়া, মো. আরিফ ওরফে আরিফ হোসেন, মো. সাহিদুল ইসলাম, মো. ইব্রাহিম খলিলুল্লাহ, মো. জাহাঙ্গীর মণ্ডল, ফাহিমা ইসলাম লোপা, রফিকুল ইসলাম চৌধুরী, মো. শরীফ উদ্দিন চৌধুরী ওরফে পাপ্পু, তুহিন রহমান ফাহিম, সৈয়দ মুজতবা আলী প্রকাশ রুমী, মোহাম্মদ রাশেদ মাহমুদ ওরফে আলী হোসেন রাশেদ ওরফে মাহমুদ, সাইদুল ইসলাম ওরফে নুরুজ্জামান, মো. সুজন হাওলাদার, ডা. দেওয়ান মো. ফরিউদ্দৌলা ওরফে পাপ্পু ও মো. মামুন উর রশীদ।
এদের মধ্যে সাখাওয়াত হোসেন চঞ্চল, মো. আরিফ ওরফে আরিফ হোসেন, মো. ইব্রাহিম খলিলুল্লাহ ও রফিকুল ইসলাম চৌধুরীকে পলাতক দেখিয়ে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন করা হয়েছে।
অব্যাহতিদানের সুপারিশের ৯ আসামি হলেন- এস এম জাহিদ সিদ্দিক তারেক ওরফে কিলার তারেক, মো. মাহবুবুল হক হিরক, জাহিদুল ইসলাম টিপু, আবুল মোনায়েম মোহাম্মদ আমিনুল এহসান বাবু ওরফে টমেটো বাবু ওরফে ডিস বাবু, এনামুল হক, মাসুম উদ্দিন, আহকাম উল্লাহ, ওয়াহিদুল আলম প্রকাশ আরিফ ভূঁইয়া ও তানজিম মাহমুদ তানিম।
ঢাকার সিএমএম আদালতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সহকারী পুলিশ সুপার (সিআইডি) উত্তম কুমার বিশ্বাস ২৩ সেপ্টেম্বর এ অধিকতর তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য ৮ অক্টোবর দিন ধার্য রয়েছে।
এর আগে তদন্তকারী কর্মকর্তা মামলাটিকে ভিন্নদিকে প্রভাবিত করতে মূল আসামিদের নাম অভিযোগপত্রে উল্লেখ না করায় ২০১৪ সালের ৯ জুন মামলার বাদী ও নিহত মিল্কির ভাই রাশেদ হক খান মিল্কি মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য সিআইডিকে দেওয়ার আবেদন করেন। ঢাকা মহানগর হাকিম মোহাম্মদ তারেক মঈনুল ইসলাম ভূঁইয়া ২০১৪ সালের ১৭ জুন আবেদন মঞ্জুর করে সিআইডিকে তদন্তের জন্য নির্দেশ দেন।
মামলার অভিযোগপত্র থেকে জানা যায়, ২০১৩ সালের ২৯ জুলাই রাতে গুলশানে শপার্স ওয়ার্ল্ড নামে একটি বিপণিবিতানের সামনে ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াজুল হক খান মিল্কিকে গুলি করে হত্যা করা হয়।
ওই বিপণিবিতানের ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরায় ধারণ করা ভিডিওচিত্র দেখে মিল্কির এক সময়ের সহযোগী যুবলীগের আরেক নেতা জাহিদ সিদ্দিকী তারেকসহ ভাড়াটে খুনীরা তাকে হত্যা করে বলে নিশ্চিত হন পুলিশ কর্মকর্তারা। এ ঘটনায় মিল্কির ছোট ভাই রাশেদুল হক খান বাদী হয়ে গুলশান থানায় এজাহারনামীয় ১১ জন এবং অজ্ঞাত আরও ৪-৫ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।
২০১৪ সালের ১৫ এপ্রিল মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা র্যাব-১ এর সহকারী পরিচালক কাজেমুর রশিদ ঢাকা মহানগর হাকিম তারেক মঈনুল ইসলাম ভূঁইয়ার আদালতে ১১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
অভিযোগপত্রের ১১ আসামি হলেন- সাখাওয়াত হোসেন চঞ্চল, ফাহিমা ইসলাম লোপা, মো. জাহাঙ্গীর মণ্ডল, সাহিদুল ইসলাম, আমিনুল ইসলাম ওরফে হাবিব, মো. সোহেল মাহমুদ ওরফে সোহেল ভূঁইয়া, মো. চুন্নু মিয়া, আরিফ ওরফে আরিফ হোসেন, ইব্রাহিম খলিলুল্লাহ, রফিকুল ইসলাম চৌধুরী ও শরীফ উদ্দিন চৌধুরী ওরফে পাপ্পু।