ঢাকা ০৬:৪১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ জানুয়ারী ২০২৫, ২৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নওগাঁয় রোপা আমন ধানে অজ্ঞাত রোগ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:৫৮:৫০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮
  • ৩৭০ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ নওগাঁয় রোপা আমন ধানে অজ্ঞাত একরোগে শত শত বিঘা জমির ধান নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় কৃষকরা ধানের এ রোগের নাম দিয়েছে হলদে বেরাম। ধানের পাতা হলুদ হয়ে আস্থে আস্থে নিচের দিকে পচে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। উদ্বিগ্ন কৃষক ফসল রক্ষায় বিভিন্ন বালাই নাশক ব্যবহার করছেন। কৃষকরা বলছেন তাতেও কোন কাজ হচ্ছে না। কৃষি বিভাগ বলছে আক্রান্ত ধানের নমুুুনা সংগ্রহ করে রোগ নির্নয়ের চেষ্টা চলছে।

ধানের হলুদ পাতা দুর থেকে দেখলে মনে হবে ধান পেকে গেছে। হলুদ পাতায় বিবর্ন ধানে অজ্ঞাত এক মরক লেগে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে নওগাঁর মাঠ গুলোতে। গত দুমাস আগে লাগানো হয় রোপা আমন ধান। ধানের বাড়ন্ত পাতা গুলো হলুদ হয়ে আস্তে আস্থে নিচে নেমে পচে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। অজ্ঞাত এ রোগ কে স্থানীয় কৃষকরা নাম দেয় হলদে বেরাম। ধানের এমন রোগ ভয়াবহ আকারে দেখা দিয়েছে জেলার রানীনগর, মহাদেবপুর, আত্রাই নওগাঁ সদর সহ বেশ কয়েকটি উপজেলায়।

কৃষকরা বলছেন বিভিন্ন বালাই নাশক দেওয়ার পর কোন কাজ হচ্ছে না। রানীনগর উপজেলার আবাদ পুকুর বেল ঘরিয়া এলাকার কৃষক দীপেন সাহা বলেন, তার ৪বিঘা জমিতে এখন শুধু হলুদ বর্ণের ধান পাতা দেখা যাচ্ছে। তিনি এক গোছা ধান গাছ তুলে দেখান সেখানে কোন জীবিত শেকর নেই। একই অবস্থা পাশের নরেন চন্দ্রের জমিতে। তিনি বলেন ২ বিঘা জমিতে এখন পর্যন্ত প্রায় ৩ হাজার টাকার ঔষূদ দিয়ে ফসল আশা করা যাচ্ছে না। এদিকে কৃষি বিভাগের লোকজন কে কাছে না পাওয়ার অভিযোগ করছে অনেক কৃষক।

ধানের এমন রোগ কে পুজি করে জেলায় সক্রিয় হয়ে উঠেছে প্রান্তিক পর্যায়ের কীটনাশক ব্যবসায়ীরা। দোকানীরা বলছেন কীটনাশককে কাজ না হওয়ায় তোপের মুখে পড়তে হচ্ছে তাদের। নওগাঁর হাপানিয়া বাজার এলাকার কীটনাশক ব্যবসায়ী হাসান আরী বলেন, কৃষকরা দু:চিন্তা নিয়ে এসে ঔষূধ চাচ্ছেন, কিন্ত ঐষুধে বেশির ভাগ কাজ হচ্ছে না। এতে বাকিতে ওেয়া ঐষুধের টাকাও দিতে চাচ্ছে না আবার ক্ষতির শিকার হচ্ছেন কৃষক। রানীনগরের একাধিক মাঠ ঘুরে দেখা গেছে অনেক কৃষক আক্রান্ত ধান মেরে ফেলে নতুন করে আবার লাগানোর চেষ্টা করছেন।

আক্রান্ত ধানের নমুনা সংগ্রহ করে রোগ নির্নয়ের জন্য কৃষি গবেষনা কেন্দ্রে প্রেরন করেছে জেলা কৃষি বিভাগ। জেলা কৃষি বিভাগের কর্মকর্তা বলছেন জমিতে প্রয়োজনী উপদানের অভাব থেকেও এমন হতে পারে, সে লক্ষে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর অতিরিক্ত উপ পরিচালক শষ্য ড. মো: আব্দুল আজিজ বলেন, ইতিমধ্যে অনেক জায়গায় আক্রান্ত ধানে প্রয়োজনীয় উপাদান দেয়ার পর কিছু উন্নতি আমরা দেখেছি। আশা করা হচ্ছে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে অবস্থার পরিবর্ত হবে।

কৃষি বিভাগের তথ্য মতে চলতি বছর নওগাঁ দু লাখ ২ হাজার হেক্টর জমিতে রোপা আমনের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৫ হাজার হেক্টর জমির ধানে রোগ আক্রান্ত দেখানো হয়েছে। গেল ক বছর ধরে নুতন নতুন রোগ বালাইয়ের মুখো মুখী হচ্ছে নওগাঁ কৃষকরা। এতে ফসল উৎপাদনে হোচট খাচ্ছেন তারা। কৃষি বিশেজ্ঞরা বলছেন পরিবেশ বিপর্যয়ের ফলে দেখা মিলছে এসব রোগ বালাই। এ ক্ষেত্রে পরিবেশ সচেনতার তাগিদদিচ্ছেন তারা।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

নওগাঁয় রোপা আমন ধানে অজ্ঞাত রোগ

আপডেট টাইম : ১১:৫৮:৫০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮

হাওর বার্তা ডেস্কঃ নওগাঁয় রোপা আমন ধানে অজ্ঞাত একরোগে শত শত বিঘা জমির ধান নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় কৃষকরা ধানের এ রোগের নাম দিয়েছে হলদে বেরাম। ধানের পাতা হলুদ হয়ে আস্থে আস্থে নিচের দিকে পচে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। উদ্বিগ্ন কৃষক ফসল রক্ষায় বিভিন্ন বালাই নাশক ব্যবহার করছেন। কৃষকরা বলছেন তাতেও কোন কাজ হচ্ছে না। কৃষি বিভাগ বলছে আক্রান্ত ধানের নমুুুনা সংগ্রহ করে রোগ নির্নয়ের চেষ্টা চলছে।

ধানের হলুদ পাতা দুর থেকে দেখলে মনে হবে ধান পেকে গেছে। হলুদ পাতায় বিবর্ন ধানে অজ্ঞাত এক মরক লেগে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে নওগাঁর মাঠ গুলোতে। গত দুমাস আগে লাগানো হয় রোপা আমন ধান। ধানের বাড়ন্ত পাতা গুলো হলুদ হয়ে আস্তে আস্থে নিচে নেমে পচে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। অজ্ঞাত এ রোগ কে স্থানীয় কৃষকরা নাম দেয় হলদে বেরাম। ধানের এমন রোগ ভয়াবহ আকারে দেখা দিয়েছে জেলার রানীনগর, মহাদেবপুর, আত্রাই নওগাঁ সদর সহ বেশ কয়েকটি উপজেলায়।

কৃষকরা বলছেন বিভিন্ন বালাই নাশক দেওয়ার পর কোন কাজ হচ্ছে না। রানীনগর উপজেলার আবাদ পুকুর বেল ঘরিয়া এলাকার কৃষক দীপেন সাহা বলেন, তার ৪বিঘা জমিতে এখন শুধু হলুদ বর্ণের ধান পাতা দেখা যাচ্ছে। তিনি এক গোছা ধান গাছ তুলে দেখান সেখানে কোন জীবিত শেকর নেই। একই অবস্থা পাশের নরেন চন্দ্রের জমিতে। তিনি বলেন ২ বিঘা জমিতে এখন পর্যন্ত প্রায় ৩ হাজার টাকার ঔষূদ দিয়ে ফসল আশা করা যাচ্ছে না। এদিকে কৃষি বিভাগের লোকজন কে কাছে না পাওয়ার অভিযোগ করছে অনেক কৃষক।

ধানের এমন রোগ কে পুজি করে জেলায় সক্রিয় হয়ে উঠেছে প্রান্তিক পর্যায়ের কীটনাশক ব্যবসায়ীরা। দোকানীরা বলছেন কীটনাশককে কাজ না হওয়ায় তোপের মুখে পড়তে হচ্ছে তাদের। নওগাঁর হাপানিয়া বাজার এলাকার কীটনাশক ব্যবসায়ী হাসান আরী বলেন, কৃষকরা দু:চিন্তা নিয়ে এসে ঔষূধ চাচ্ছেন, কিন্ত ঐষুধে বেশির ভাগ কাজ হচ্ছে না। এতে বাকিতে ওেয়া ঐষুধের টাকাও দিতে চাচ্ছে না আবার ক্ষতির শিকার হচ্ছেন কৃষক। রানীনগরের একাধিক মাঠ ঘুরে দেখা গেছে অনেক কৃষক আক্রান্ত ধান মেরে ফেলে নতুন করে আবার লাগানোর চেষ্টা করছেন।

আক্রান্ত ধানের নমুনা সংগ্রহ করে রোগ নির্নয়ের জন্য কৃষি গবেষনা কেন্দ্রে প্রেরন করেছে জেলা কৃষি বিভাগ। জেলা কৃষি বিভাগের কর্মকর্তা বলছেন জমিতে প্রয়োজনী উপদানের অভাব থেকেও এমন হতে পারে, সে লক্ষে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর অতিরিক্ত উপ পরিচালক শষ্য ড. মো: আব্দুল আজিজ বলেন, ইতিমধ্যে অনেক জায়গায় আক্রান্ত ধানে প্রয়োজনীয় উপাদান দেয়ার পর কিছু উন্নতি আমরা দেখেছি। আশা করা হচ্ছে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে অবস্থার পরিবর্ত হবে।

কৃষি বিভাগের তথ্য মতে চলতি বছর নওগাঁ দু লাখ ২ হাজার হেক্টর জমিতে রোপা আমনের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৫ হাজার হেক্টর জমির ধানে রোগ আক্রান্ত দেখানো হয়েছে। গেল ক বছর ধরে নুতন নতুন রোগ বালাইয়ের মুখো মুখী হচ্ছে নওগাঁ কৃষকরা। এতে ফসল উৎপাদনে হোচট খাচ্ছেন তারা। কৃষি বিশেজ্ঞরা বলছেন পরিবেশ বিপর্যয়ের ফলে দেখা মিলছে এসব রোগ বালাই। এ ক্ষেত্রে পরিবেশ সচেনতার তাগিদদিচ্ছেন তারা।