হাওর বার্তা ডেস্কঃ বাংলাদেশের প্রথম মহাকাশ যোগাযোগ উপগ্রহ বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর ট্রান্সমিশন শুরু হচ্ছে আজ মঙ্গলবার। বিকেলে সাফ ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ সরাসরি সম্প্রচারের মাধ্যমে প্রথমবারের মতো ট্রান্সমিশনে আসছে বঙ্গবন্ধু-১। বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইটের মাধ্যমে সাফ ফুটবলের খেলাগুলো সরাসরি সম্প্রচার করবে।
বাংলাদেশ কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেডের (বিসিএসসিএল) একটি সূত্র জানায়, পূর্ব নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী আজ থেকে শুরু হওয়া সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ চলবে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। এ সময়ে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর মাধ্যমে সবগুলো খেলা সম্প্রচার করবে বিটিভি। এ ছাড়াও বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর ফ্রিকোয়েন্সি ব্যবহার করে দেশের অন্তত ২০টি বেসরকারি স্যাটেলাইট টেলিভিশনের সম্প্রচার মান পরীক্ষা করা হবে। সূত্র আরো জানায়, সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের প্রডাকশনের দায়িত্বে আছে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল নাইন। মূলত তাদের কাছ থেকেই বিসিএসসিএল ফিড নিয়ে তা বিটিভি ও অন্যান্য বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলগুলোকে দেয়া হবে।
এ ব্যাপারে বিসিএসসিএল চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ গতকাল গণমাধ্যমকে বলেন, সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের খেলা দেখানোর মাধ্যমে আমরা বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইটের টেস্ট ট্রান্সমিশনে যাচ্ছি। এ ধরনের খেলাধুলা দেখানোর মাধ্যমে ট্রান্সমিশন করার উদ্দেশ্য হলো খেলার মাঠ থাকবে ফাস্ট মুভিং। সেটা আমাদের স্যাটেলাইট কতটা নিখুঁতভাবে ট্রান্সমিট করে সেটা দেখা। এ জন্যই স্পোর্টস ইভেন্ট বেছে নেয়া হয়েছে।
ড. শাহজাহান মাহমুদ জানান, টেস্ট ট্রান্সমিশন সফল হওয়ার পরে এই মাসের শেষ দিকে বা অক্টোবর মাসের মাঝামাঝি বাণিজ্যিকভাবে সম্প্রচারে যেতে পারে বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট। বিসিএসসিএল চেয়ারম্যান উল্লেখ করেন, আমরা তো এখনো কোনো ক্রেতার অভিজ্ঞতা জানি না। টেস্ট ট্রান্সমিশন সফল হলে তা আমরা ক্রেতাদের সামনে হাজির করতে পারব। তিনি আরো জানান, এখনো স্যাটেলাইটটির নির্মাতা প্রতিষ্ঠান থ্যালেস অ্যালিনিয়ার প্রকৌশলীরা দেখাশোনা করছেন। এ মাসের শেষ দিকে বাংলাদেশের প্রকৌশলীরা এর পুরো নিয়ন্ত্রণ (অপারেশন) নিতে পারেন।
যুক্তরাষ্ট্রের সময় গত ১১ মে বিকাল ৪টায় ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপিত হয়। স্যাটেলাইটটিকে নিরক্ষ রেখার ১১৯ দশমিক ১ ডিগ্রিতে স্থাপন করা হয়। স্যাটেলাইটটি সেখানে সেট হওয়ার পরে টেস্ট সিগন্যাল পাঠাতে শুরু করে। পরবর্তী সময়ে ইন অরবিট টেস্ট (আইওটি)-সহ সব ধরনের পরীক্ষা নিরীক্ষার পরে স্যাটেলাইটটিকে ট্রান্সমিশনের জন্য প্রস্তুত করা হয়।
সব মিলিয়ে স্যাটেলাইটটি উৎক্ষেপণ করতে খরচ হয়েছে দুই হাজার ৭৬৫ কোটি টাকা। আগামী সাত বছরের মধ্যে এ খরচ ওঠে আসবে বলে ধারণা উৎক্ষেপণকারী সংস্থা বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি)। এর মধ্যে সরকারের বেশ কয়েকটি মন্ত্রণালয় এ স্যাটেলাইট থেকে সংযোগ নেয়ার জন্য আগ্রহ দেখিয়েছে। তা ছাড়াও স্যাটেলাইট থেকে সেবা নিতে ৪৫টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে চিঠি দিয়েছে বিটিআরসি।