ঢাকা ০৪:২০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কয়লা গায়েবের ঘটনায় ১৯ খনি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৪:৫৪:৪২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ জুলাই ২০১৮
  • ৩৬৭ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়ায় কয়লা খনিতে ১ লাখ ৪৪ হাজার মেট্রিক টন কয়লা গায়েবের ঘটনায় বিদায়ী ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ ১৯ জনকে আসামি করে মঙ্গলবার (২৪ জুলাই) পার্বতীপুর থানায় মামলা করা হয়েছে। রাত ১২টায় বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) মোহাম্মদ আনিছুর রহমান বাদী হয়ে এই মামলা করেন। দুর্নীতি দমন প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) এবং ৪০৯ ধারায় পার্বতীপুর থানায় মামলাটি করা হয়েছে। মামলা নং-৩০।

পার্বতীপুর মডেল থানার ওসি হাবিবুল হক প্রধান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এছাড়া মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পার্বতীপুর মডেল থানার ওসি (তদন্ত) ফখরুল ইসলাম মামলার তদন্ত শুরু করেছেন।

মামলার আসামিরা হলেন- সাময়িক বরখাস্তকৃত বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির মহাব্যবস্থাপক (মাইন অপারেশন) নুর-উজ-জামান চৌধুরী, উপ-মহাব্যবস্থাপক (স্টোর) একেএম খালেদুল ইসলাম, সদ্য বিদায়ী ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী হাবিব উদ্দিন আহমেদ, সদ্য বিদায়ী কোম্পানি সচিব ও মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) আবুল কাশেম প্রধানীয়া, ব্যবস্থাপক (এক্সপ্লোরেশন) মোশাররফ হোসেন সরকার, ব্যবস্থাপক (জেনারেল সার্ভিসেস) মাসুদুর রহমান হাওলাদার, ব্যবস্থাপক (প্রোডাকশন ম্যানেজমেন্ট) অশোক কুমার হালদার, ব্যবস্থাপক (মেইনটেনেন্স অ্যান্ড অপারেশন) আরিফুর রহমান, ব্যবস্থাপক (ডিজাইন, কন্সট্রাকশন অ্যান্ড মেইনটেনেন্স) জাহিদুল ইসলাম, উপ-ব্যবস্থাপক (সেফটি ম্যানেজমেন্ট) একরামুল হক, উপ-ব্যবস্থাপক (কোল হ্যান্ডলিং ম্যানেজমেন্ট) মুহাম্মদ খলিলুর রহমান, উপ-ব্যবস্থাপক (মেইনটেনেন্স অ্যান্ড অপারেশন) মোর্শেদুজ্জামান, উপ-ব্যবস্থাপক (প্রোডাকশন ম্যানেজমেন্ট) হাবিবুর রহমান, উপ-ব্যবস্থাপক (মাইন ডেভেলপমেন্ট) জাহেদুর রহমান, সহকারী ব্যবস্থাপক (ভেল্টিলেশন ম্যানেজমেন্ট) সত্যেন্দ্রনাথ বর্মন, ব্যবস্থাপক (নিরাপত্তা) সৈয়দ ইমাম হাসান, উপ-মহাব্যবস্থাপক (মাইন প্লানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট) জোবায়ের আলী, প্রাক্তন মহাব্যবস্থাপক (অর্থ ও হিসাব) আব্দুল মান্নান পাটোয়ারী এবং মহাব্যবস্থাপক (অর্থ ও হিসাব) গোপাল চন্দ্র সাহা।

মামলায় জানানো হয়, খনি উন্নয়নের সময় (২০০১) থেকে ১৯ জুলাই ২০১৮ পর্যন্ত মোট ১ কোটি ১ লাখ ৬৬ হাজার ৪২ দশমিক ৩৩ মেট্রিক টন কয়লা উৎপাদন করা হয়। উৎপাদিত কয়লা থেকে পার্শ্ববর্তী তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রে ৬৬ লাখ ৮৭ হাজার ২৯ দশমিক ২৯ মেট্রিক টন কয়লা সরবরাহ, বেসরকারি ক্রেতাদের কাছে ডিও’র মাধ্যমে ৩৩ লাখ ১৯ হাজার ২৮০ দশমিক ৩৭ মেট্রিক টন কয়লা বিক্রি এবং কয়লা খনির বয়লারে ১২ হাজার ৮৮ দশমিক ২৭ মেট্রিক টন কয়লা ব্যবহার করা হয়।

কয়লার উৎপাদন, বিক্রি ও ব্যবহার হিসাব করলে ১৯ জুলাই কোল ইয়ার্ডে রেকর্ডভিত্তিক কয়লার মজুদ দাঁড়ায় ১ লাখ ৪৭ হাজার ৬৪৪ দশমিক ৪০ মেট্রিক টন। কিন্তু বাস্তবে মজুদ ছিল প্রায় ৩ হাজার মেট্রিক টন কয়লা। অর্থাৎ ১ লাখ ৪৪ হাজার ৬৪৪ দশমিক ৪০ মেট্রিক টন কয়লা ঘাটতি রয়েছে যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ২৩০ কোটি টাকা বলে জানানো হয়।

মামলায় বলা হয়, এই ঘটনায় চারজনের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। বাকি ১৫ জন আসামি অনেক আগে থেকেই তৎকালীন ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের যোগসাজসে সংঘটিত কয়লা চুরির ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বলে অনুমিত হয়।

মজুদকৃত কয়লার হিসাবের গড়মিলের বিষয়টি দুর্নীতি দমন প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) এবং ৪০৯ ধারা অনুযায়ী এজাহারভূক্ত করে তদন্ত সাপেক্ষে দোষিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ করা হয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

কয়লা গায়েবের ঘটনায় ১৯ খনি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা

আপডেট টাইম : ০৪:৫৪:৪২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ জুলাই ২০১৮

হাওর বার্তা ডেস্কঃ দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়ায় কয়লা খনিতে ১ লাখ ৪৪ হাজার মেট্রিক টন কয়লা গায়েবের ঘটনায় বিদায়ী ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ ১৯ জনকে আসামি করে মঙ্গলবার (২৪ জুলাই) পার্বতীপুর থানায় মামলা করা হয়েছে। রাত ১২টায় বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) মোহাম্মদ আনিছুর রহমান বাদী হয়ে এই মামলা করেন। দুর্নীতি দমন প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) এবং ৪০৯ ধারায় পার্বতীপুর থানায় মামলাটি করা হয়েছে। মামলা নং-৩০।

পার্বতীপুর মডেল থানার ওসি হাবিবুল হক প্রধান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এছাড়া মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পার্বতীপুর মডেল থানার ওসি (তদন্ত) ফখরুল ইসলাম মামলার তদন্ত শুরু করেছেন।

মামলার আসামিরা হলেন- সাময়িক বরখাস্তকৃত বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির মহাব্যবস্থাপক (মাইন অপারেশন) নুর-উজ-জামান চৌধুরী, উপ-মহাব্যবস্থাপক (স্টোর) একেএম খালেদুল ইসলাম, সদ্য বিদায়ী ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী হাবিব উদ্দিন আহমেদ, সদ্য বিদায়ী কোম্পানি সচিব ও মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) আবুল কাশেম প্রধানীয়া, ব্যবস্থাপক (এক্সপ্লোরেশন) মোশাররফ হোসেন সরকার, ব্যবস্থাপক (জেনারেল সার্ভিসেস) মাসুদুর রহমান হাওলাদার, ব্যবস্থাপক (প্রোডাকশন ম্যানেজমেন্ট) অশোক কুমার হালদার, ব্যবস্থাপক (মেইনটেনেন্স অ্যান্ড অপারেশন) আরিফুর রহমান, ব্যবস্থাপক (ডিজাইন, কন্সট্রাকশন অ্যান্ড মেইনটেনেন্স) জাহিদুল ইসলাম, উপ-ব্যবস্থাপক (সেফটি ম্যানেজমেন্ট) একরামুল হক, উপ-ব্যবস্থাপক (কোল হ্যান্ডলিং ম্যানেজমেন্ট) মুহাম্মদ খলিলুর রহমান, উপ-ব্যবস্থাপক (মেইনটেনেন্স অ্যান্ড অপারেশন) মোর্শেদুজ্জামান, উপ-ব্যবস্থাপক (প্রোডাকশন ম্যানেজমেন্ট) হাবিবুর রহমান, উপ-ব্যবস্থাপক (মাইন ডেভেলপমেন্ট) জাহেদুর রহমান, সহকারী ব্যবস্থাপক (ভেল্টিলেশন ম্যানেজমেন্ট) সত্যেন্দ্রনাথ বর্মন, ব্যবস্থাপক (নিরাপত্তা) সৈয়দ ইমাম হাসান, উপ-মহাব্যবস্থাপক (মাইন প্লানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট) জোবায়ের আলী, প্রাক্তন মহাব্যবস্থাপক (অর্থ ও হিসাব) আব্দুল মান্নান পাটোয়ারী এবং মহাব্যবস্থাপক (অর্থ ও হিসাব) গোপাল চন্দ্র সাহা।

মামলায় জানানো হয়, খনি উন্নয়নের সময় (২০০১) থেকে ১৯ জুলাই ২০১৮ পর্যন্ত মোট ১ কোটি ১ লাখ ৬৬ হাজার ৪২ দশমিক ৩৩ মেট্রিক টন কয়লা উৎপাদন করা হয়। উৎপাদিত কয়লা থেকে পার্শ্ববর্তী তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রে ৬৬ লাখ ৮৭ হাজার ২৯ দশমিক ২৯ মেট্রিক টন কয়লা সরবরাহ, বেসরকারি ক্রেতাদের কাছে ডিও’র মাধ্যমে ৩৩ লাখ ১৯ হাজার ২৮০ দশমিক ৩৭ মেট্রিক টন কয়লা বিক্রি এবং কয়লা খনির বয়লারে ১২ হাজার ৮৮ দশমিক ২৭ মেট্রিক টন কয়লা ব্যবহার করা হয়।

কয়লার উৎপাদন, বিক্রি ও ব্যবহার হিসাব করলে ১৯ জুলাই কোল ইয়ার্ডে রেকর্ডভিত্তিক কয়লার মজুদ দাঁড়ায় ১ লাখ ৪৭ হাজার ৬৪৪ দশমিক ৪০ মেট্রিক টন। কিন্তু বাস্তবে মজুদ ছিল প্রায় ৩ হাজার মেট্রিক টন কয়লা। অর্থাৎ ১ লাখ ৪৪ হাজার ৬৪৪ দশমিক ৪০ মেট্রিক টন কয়লা ঘাটতি রয়েছে যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ২৩০ কোটি টাকা বলে জানানো হয়।

মামলায় বলা হয়, এই ঘটনায় চারজনের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। বাকি ১৫ জন আসামি অনেক আগে থেকেই তৎকালীন ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের যোগসাজসে সংঘটিত কয়লা চুরির ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বলে অনুমিত হয়।

মজুদকৃত কয়লার হিসাবের গড়মিলের বিষয়টি দুর্নীতি দমন প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) এবং ৪০৯ ধারা অনুযায়ী এজাহারভূক্ত করে তদন্ত সাপেক্ষে দোষিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ করা হয়েছে।