হাওর বার্তা ডেস্কঃ ক্যান্সার নামক এই মরণব্যাধিটি সকলের কাছেই রহস্যের মতো। অনেকেই জানেন না এবং একেবারেই বুঝতে পারেন না কেন দেহে এই ক্যান্সারের কোষের জন্ম হয়।পরিবারে ইতিহাস থাকলেই যে ক্যান্সার হবে এমন কোন কথা নেই। আমাদের দৈনন্দিন কাজের খারাপ প্রভাবের কারণেও কিন্তু দেহে জন্মায় ক্যান্সারের কোষ। আর এ থেকে মুক্তি পাওয়ার চাবিকাঠি কিন্তু আমাদের হাতেই। আপনি হয়তো জানেনও না আপনার ছোট্ট কিছু সাবধানতা এবং সতর্কতা দেহে ক্যান্সারের কোষ গঠনে বাঁধা প্রদানে কার্যকরী ভূমিকা পালন করতে পারে। তাই দৈনন্দিন জীবনে কিছু সাবধানতা অবলম্বন করুন।
এতে করে ক্যান্সারের মরণ থাবা থেকে বেঁচে যাবেন আপনি এবং আপনার পরিবার।
(১) মাংস মেরিনেট করে খাবেন-
কয়লার আগুনে পোড়ানো, উচ্চতাপমাত্রায় তেলে ভাজা এবং রান্না করা মাংসে অনেক ধরণের কেমিক্যাল উৎপন্ন হয়। যা ক্যান্সারের কোষ গঠনে সহায়তা করে। অ্যামেরিকান ইন্সটিটিউট ফর ক্যান্সার রিসার্চের গবেষকগণের মতে, মেরিনেট করার ফলে মাংসের উপরে যে লেয়ার তৈরি হয় তা সরাসরি আগুনের তাপে মাংস রান্না হতে বাঁধা দেয় এবং ক্ষতিকর কেমিক্যাল উৎপন্ন হতে পারে না। তাই রান্নার আগে অবশ্যই মাংস মেরিনেট করে নিন।
(২) ফলমূল ফ্রিজে রাখবেন না-
একটি গবেষণায় দেখা যায়, ফলমূল স্বাভাবিক তাপমাত্রায় রাখলে তার পুষ্টিগুণ অটুট থাকে এবং ক্যান্সার কোষ গঠনে বাঁধা দানের ক্ষমতা সম্পন্ন নিউট্রিয়েন্টের পরিমাণ বেশী থাকে। যেমন টমেটো ও মরিচ যদি বাইরে রেখে দেন ফ্রিজে রাখার পরিবর্তে তাহলে এতে দ্বিগুণ পরিমাণে ব্যাক্টেকারোটেন এবং ২০ গুন বেশী পরিমাণে লাইকোপেন থাকে যা ক্যান্সারের কোষ গঠনে বাঁধা দানে বিশেষ কার্যকরী।
(৩) একটানা বসে থাকবেন না-
জার্মানির রিজেন্সবার্গ ইউনিভার্সিটির গবেষকগণ সম্প্রতি তাদের গবেষণায় এই ব্যাপারটি নিশ্চিত করেছেন যে, যারা একটানা অনেক্ষন বসে থাকেন তাদের ক্যান্সারে আক্রান্তের সম্ভাবনা প্রতি ২ ঘণ্টায় প্রায় ১০% বেড়ে যায়। গবেষকদের মতে আধাঘণ্টা পরপরই উঠে কিছুক্ষন হাঁটাহাঁটি করে নেয়া ভালো। যদি তাও সম্ভব না হয় তাহলে অবশ্যই প্রতি ২ ঘণ্টায় একটু বড় ধরণের ব্রেক নেয়া জরুরী।
(৪) বাড়তি লবন খাবেন না-
অতিরিক্ত লবন খাওয়ার সাথে ইউকে এর প্রায় ১৪% পাকস্থলীর ক্যান্সার হওয়ার যোগাযোগ দেখা গিয়েছে। প্রতিদিন আমাদের ৬ গ্রামের কম পরিমাণে লবন অর্থাৎ ২.৪ গ্রাম সোডিয়াম খাওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। এর চাইতে বেশী খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।
(৫) সবজি মাইক্রোওয়েভে দেবেন না-
যদি আপনি স্বাস্থ্যকর খাবারের আশায় তেলে না ভেজে ওভেনে বেক করে সবজি খেতে চান তাহলে তা একেবারেই ভুলে যান। কারণ একটি স্প্যানিশ গবেষণায় দেখা যায়, ওভেনে দেয়ার ফলে ব্রকলির ক্যান্সার প্রতিরোধ ক্ষমতা প্রায় ৯৭% কমে যায়। একই বিষয় প্রযোজ্য অন্যান্য সবজির ক্ষেত্রেও। যদি স্বাস্থ্যকর খেতে চান তাহলে ওভেনে না দিয়ে সেদ্ধ করে খান।
(৬) সুগন্ধি মোমবাতি জ্বালাবেন না-
গবেষকগণের মতে সুগন্ধি কেমিক্যালযুক্ত মোমবাতির কারসিনোজেনিক প্রভাব রয়েছে। বিশেষ করে বদ্ধ ঘরে এই ধরণের কেমিক্যাল সমৃদ্ধ মম পোড়ানোর ধোঁয়া এবং গন্ধ খুবই ক্ষতিকর। ঘরে আলো বাতাস চলাচল হতে দিন এবং সুগন্ধি মোম কেনা বন্ধ করুন।
(৭) একেবারে অন্ধকার ঘরে ঘুমান-
বেশ কয়েকটি গবেষণায় দেখা যায় আর্টিফিশিয়াল আলোর দীর্ঘমেয়াদি ব্যবহারের কারণে বিশেষ করে রাতের বেলার লাইটের কারণে স্তন ও প্রোস্টেট ক্যান্সারের সম্ভাবনা বেশী বেড়ে যায়। এর কারণ হিসেবে গবেষকগণ আলোতে দেহের হরমোনের উপর প্রভাব পড়াকেই দায়ী করেন যা ঘুমের সময় আমাদের দেহে ঘটে থাকে। তাই আর্টিফিশিয়াল আলো যতো কম ব্যবহার করা যায় ততোই ভালো।