হাওর বার্তা ডেস্কঃ বেশ কয়েকদিন ধরেই সকালটা বেশ খারাপ যাচ্ছে গোপাল চন্দ্রের। প্যাকেট প্যাকেট সিগারেট-বিড়ি ফুঁকেও পেট খালি হচ্ছে না। ফলে বারে বারে ছুট লাগাতে হচ্ছে বাথরুমে। ফলে অফিসে পৌঁছাতে হয়ে হচ্ছে দেরি। এইসব গোলমেলে ব্যাপার কী আর বসের সামনে টেকে! তাই ভাগ্যে জুটেছে ২ টো লাল কালি আর ওয়ার্নিং। এদিকে গোপালবুর পেট যে-কে-সেই! জয়ঢাকের আয়তন যেন ক্রমশ বাড়ছে। সেই সঙ্গে দুর্গন্ধযুক্ত বায়ু প্রবাহ তো রয়েছেই।
এমন সমস্যায় আপনিও যে ভোগেন নি, তা নয়। এসব ক্ষেত্রে কখনও কবঝার তো কখনও অ্যালোপ্যাথি ওষুধ খেয়ে মিলেছে আরাম। কিন্তু আপনাদের কি জানা আছে, পটি পরিষ্কারের পাশপাশি গ্যাস-অম্বলের জ্বালা কমাতে বেশ কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি দারুন উপকারে লাগে। তাই এবার থেকে পেট পরিষ্কার রাখতে ভুরি ভুরি ট্যাবলেট না খেয়ে একবার এইসব সহজ পদ্ধতিগুলিতে কাজে লাগিয়ে দেখুন না, উপকার যে পাবেন, তা হলফ করে বলতে পারি। কী সেই সব ঘরোয়া পদ্ধতি? চলুন জেনে নেওয়া যাক সে সম্পর্কে।
১. লেবু: এতে উপস্থিত লেমোনাস, হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটানোর পাশাপাশি পেট পরিষ্কার রাখতে দারুন কাজে আসে। তাই কখনও যদি দেখেন ১-২ দিন ধরে পটি ঠিক মতো হচ্ছে না তাহলে ঝটপট কয়েক গ্লাস লেবুর রস খেয়ে নেবেন। দেখবেন সঙ্গে সঙ্গে ফল পাবেন। প্রসঙ্গত, গরম জলে লেবুর রস মিশিয়ে খেলে বেশি উপকার পাবেন।
২. মৌরি: একথা তো সবাই জানেন যে পেট টান্ডা করতে মৌরির কোনও বিকল্প হয় না। কিন্তু একথা কি জানা ছিল যে বাওয়েল মুভমেন্ট ঠিক রাখতেও এটি সাহায্য করে। আসলে ডায়জেস্টিভ ট্র্যাকের যে পেশি রয়েছে তার সঞ্চালন যাতে ঠিক মতো হয়, সেদিকে খেয়াল রাখে মৌরি। ফলে বদ-হজম, পেট গোলানো, কনস্টিপেশন এবং ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রমের মতো নানাবিধ রোগ একেবারে সেরে যায়। এক্ষেত্রে এক কাপ মৌরি নিয়ে ভাল করে ভেজে ফেলতে হবে। তারপর ভাজা মৌরিগুলি গুঁড়ো করে নিয়ে একটা শিশিতে স্টোর করে রাখবেন। প্রতিদিন এই গুঁড়ো মৌরি হাফ চামত করে গরম জলে গুলে খেলে নিমেষে সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
৩. রেড়ির তেল: ক্ষুদ্রান্ত এবং বৃহদন্ত্রের কর্মক্ষমতা বাড়ানোর মধ্যে দিয়ে বাওয়েল মুভমেন্ট ঠিত রাখতে এই প্রাকৃতিক উপাদানটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই তো প্রতিদিন সকালে খালি পেটে ১-২ চামচ রেড়ির তেলে খেলেই দেখবেন পেট খালি করে পটি হয়ে যাবে।
৪. মধু: প্রতিদিন মধু খাওয়ার অভ্যাস করুন। তাহলেই দেখবেন কনস্টিপেশন এবং পটি পরিষ্কার না হাওয়ার মতো সমস্যা একেবারে কমে যাবে। আসলে এই প্রকৃতিক উপাদানটিতে এমন কিছু রয়েছে, যা জোলাপের মতো কাজ করে। ফলে মধু খাওয়া মাত্র পটি পরিষ্কার হতে শুরু করে দেয়। এক্ষেত্রে দিনে ৩ বার, এক গ্লাস গরম জলে ১ চামচ করে মধু এবং লেবুর রস মিশিয়ে খেতে হবে।
৫. আঙুর: এতে উপস্থিত অদ্রবণীয় ফাইবার, পটি পরিষ্কার হতে সাহায্য করে। তাই বাওয়েল মুভমেন্ট ঠিক না হলেই দিনে হাফ বাটি কাঁচা আঙুর অথবা আঙুরের রস খাওয়ার চেষ্টা করবেন। এমনটা করলেই দেখবেন সকালগুলো সুন্দর হয়ে উঠবে।
৬. পালং শাক: প্রতিদিন এই শাকটি খেলে দারুন উপকার পাওয়া যায়। তাই যদি কনস্টিপেশনের সমস্যা থাকে তাহলে হয় রান্না করে, নয়তো কাঁচা অবস্থাতেই পালং শাক খাওয়া শুরু করে দিন। দেখবেন অল্প দিনেই কষ্ট কমে যাবে।
প্রসঙ্গত, আরেক ভাবে পালং শাককে কাজে লাগানো যেতে পারে। এক গ্লাস জলের সঙ্গে ১ গ্লাস পালং শকের রস দিনে দুবার করে খেলে কনিস্টেপেশনের কোনও নাম গন্ধই থাকে না।