হাওর বার্তা ডেস্কঃ পাগলা মসজিদ ইসলামি কমপ্লেক্স নামে খ্যাত কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদে সিন্দুক খোলা হয়েছে। মিলেছে রেকর্ড পরিমাণ অর্থ। প্রতি চার মাস পর পর মসজিদের দানবাক্স খোলা হয়ে থাকলেও এবারের সময়ের ব্যবধানটা একটু ভিন্ন। গত ১৩ই মে গভীর রাতে ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্স থেকে টাকা চুরির চেষ্টা করা হয়। চোরকে হাতে নাতে ধরতে না পারলে চুরিকৃত অর্থ ফেলে পালায় চোর। চুরিকৃত অর্থ বাজেয়াপ্ত করার পর কিশোরগঞ্জ কালেক্টরেটের জ্যেষ্ঠ নির্বাহী হাকিম আবু তাহের মোহাম্মদ সাঈদের তত্ত্বাবধানে সকল অর্থ গণনা করা হয়। গণনা শেষে সেখানে ৮ লাখ ৪ হাজার ৯৮১ টাকা ও কিছু স্বর্ণালংকার পাওয়া যায়।
সকাল ০৯ টা হতে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত দীর্ঘ ০৯ ঘন্টা গণনাকার্য সম্পাদনের পর মসজিদের পাঁচটি দানবাক্স হতে চুরিকৃত দানবাক্স ব্যতীত বাকি চারটি থেকে এবার পাওয়া গেছে ৮৮ লক্ষ ২৯ হাজার ১৭ টাকা। সাথে বৈদেশিক মুদ্রা সহ বেশ কিছু স্বর্ণালঙ্কার। এর আগে গত ৩১ মার্চ মসজিদের চারটি দান বাক্স থেকে ৮৪ লাখ ৯২ হাজার ৪ টাকা পাওয়া যায়।
জেলা প্রশাসক ও মসজিদ কমিটির সভাপতি মো. সারোয়ার মোর্শেদ চৌধুরী এর নেতৃত্বে জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেটবৃন্দ, মসজিদ কমিটির সদস্যবৃন্দ, সাংবাদিকবৃন্দ এবং গণ্যমাণ্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে অর্থ গণনা কার্যক্রম সম্পাদনা করা হয়। দেশের অন্যতম আয়কারী ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃত এ মসজিদের আয় দিয়ে কমপ্লেক্সের বিশাল ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। মানুষের দানের অর্থ মসজিদটির উন্নয়ন কাজে ব্যয় করা হয়। মসজিদের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন দেওয়া হয়।
মসজিদটির একটি এতিমখানা রয়েছে, সেই এতিমখানার ছেলেমেয়েদের থাকা, খাওয়া, পোশাকসহ তাদের লেখাপড়ার যাবতীয় খরচ এখান থেকেই দেওয়া হয়।এছাড়াও বিভিন্ন এলাকার মসজিদের উন্নয়ন ও সংস্কার কাজেও অনুদান দেওয়া হয়। তাছাড়া, মসজিদটির তহবিল থেকে বিভিন্ন দরিদ্র অসহায় লোকদের আর্থিক সহযোগিতা করা, চিকিৎসা সহায়তার পাশাপাশি লেখাপড়া বা বিয়ের সময় আর্থিকভাবে দুর্বলকেও সহযোগিতা করা হয়। পাগলা মসজিদের দানবাক্সের টাকা গণনা কার্যক্রম তদারকির দায়িত্বে থাকা জেলা প্রশাসনের জ্যেষ্ঠ নির্বাহী হাকিম আবু তাহের মো. সাঈদ এবার দানবাক্স খুলে ৮৮ লক্ষ ২৯ হাজার ১৭ টাকা পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, টাকাগুলো মসজিদে উপস্থিত কিশোরগঞ্জ জেলা পরিষদের ম্যাজিস্ট্রেটবৃন্দ, সাংবাদিক, পুলিশ, মসজিদ কমিটি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে রূপালী ব্যাংকে জমা করা হয়েছে। আর যে স্বর্ণালংকার পাওয়া গেছে, তা আগের স্বর্ণালংকারের সঙ্গে যোগ করে একটি সিন্দুকে রেখে দেওয়া হবে।