ঢাকা ০৫:৫১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাখাইনে রোহিঙ্গাদের আশ্রয়শিবিরগুলো খা খা করছে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:৫৫:৩৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩০ জুন ২০১৮
  • ৩৫৪ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ প্রতিদিন গড়ে ১৫০ জন রোহিঙ্গাকে ফিরিয়ে নিতে প্রস্তুত রাখা হয়েছে রাখাইনের অন্তর্বর্তী আশ্রয়শিবিরগুলোকে। কিন্তু দিনের পর দিন তা পুরোপুরি ফাঁকা। এর কারণ, রাষ্ট্রহীন রোহিঙ্গারা সেখানে ফিরে যেতে সাহস পাচ্ছেন না। তাদের মধ্যে ভয়, আতঙ্ক। দেশে ফিরে গেলে এবার তাদের সঙ্গে ভিন্ন রকম বা মানবিক আচরণ করা হচ্ছে এমন নিশ্চয়তা তারা পাচ্ছেন না।

মিয়ানমার সরকার এমন কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না বললেই চলে। তা ছাড়া তাদের প্রধান দাবি নাগরিকত্ব, সেই দাবির বিষয়ে স্পষ্ট কোনো কথা এখনও বলে নি মিয়ানমার সরকার। ফলে ওই সব অন্তর্বর্তীকালীন আশ্রয়শিবিরগুলো ফাঁকাই পড়ে থাকছে। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি। এতে বলা হয়, শুক্রবার ওই আশ্রয়শিবিরে কিছু সাংবাদিকের মুখোমুখি হন মিয়ানমারের অভিবাসন বিষয়ক পরিচালক উইন খাইং। তিনি নগা খু রা’তে অবস্থিত যে আশ্রয়শিবিরের সামনে দাঁড়িয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তা ছিল একেবারে জনমানবশূন্য।

অর্থাৎ সেখানে কোনোই রোহিঙ্গা নেই। ওই কর্মকর্তা বলেছেন, জানুয়ারি থেকেই আমরা এসব আশ্রয়শিবির খুলে বসে আছি। আমরা তাদেরকে (রোহিঙ্গা) গ্রহণ করতে প্রস্তুত। তিনি ওই এলাকা পরিদর্শনে দু’দিনের একটি সফরে সাংবাদিকদের নিয়ে গিয়েছেন। এএফপি লিখেছে, আশ্রয়শিবিরগুলো প্রস্তুত হলেও ফল শূন্য। শূন্য এসব আশ্রয়শিবিরের ভিতরে অফিসিয়াল কাজ করছেন মিয়ানমারের অভিবাসন বিষয়ক কর্মকর্তারা। তারা বিভিন্ন রকম কাগজপত্র উল্টাপাল্টা করছেন।

প্রস্তুত করছেন বায়োমেট্রিক যন্ত্রপাতি। তবে পরিদর্শনকারী ব্যক্তি ও সাংবাদিকদের সঙ্গে কিছু কথাবার্তা বলা ছাড়া তাদের করার মতো কোনোই কাজ নেই। ২৫ শে আগস্ট মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নৃশংসতা শুরুর পর ৭ লাখের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে চলে আসতে বাধ্য হন। তাদের মধ্য থেকে এ পর্যন্ত ২ শতেরও কম রোহিঙ্গা মুসলিম রাখাইনে পুনর্বাসন হয়েছেন বলে মিয়ানমার সরকারের দাবি। উল্লেখ্য, নৃশংসতার সময়ে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও তাদের দোসররা রোহিঙ্গা নারীদের নির্বিচারে, নরপিশাচের মতো গণধর্ষণ করেছে। নির্দয়ের মতো নির্যাতন করেছে সবার ওপর।

প্রকাশ্যে গুলি করে আত্মীয়-স্বজনের সামনে প্রিয়জনকে হত্যা করেছে। জ্বালিয়ে দিয়েছে গ্রামের পর গ্রাম। একে জাতিসংঘ সহ বিভিন্ন মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন জাতি নিধন বলে আখ্যায়িত করেছে। তবে মিয়ানমারের দাবি, তারা শুধু জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়েছে। সন্দেহজনকভাবে আটক কয়েকজনকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে সেনাবাহিনী। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ থেকে অবৈধভাবে বেশ কিছু মানুষ মিয়ানমারে প্রবেশ করার চেষ্টা করে বলে তাদেরকে ফেরত পাঠিয়েছে মিয়ানমার এমন দাবি সেদেশের। বাংলাদেশের শরণার্থী বিষয়ক কমিশনার মোহাম্মদ আবুল কালাম এএফপিকে বলেছেন, এখনও রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তন প্রক্রিয়া শুরু হয় নি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

রাখাইনে রোহিঙ্গাদের আশ্রয়শিবিরগুলো খা খা করছে

আপডেট টাইম : ১১:৫৫:৩৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩০ জুন ২০১৮

হাওর বার্তা ডেস্কঃ প্রতিদিন গড়ে ১৫০ জন রোহিঙ্গাকে ফিরিয়ে নিতে প্রস্তুত রাখা হয়েছে রাখাইনের অন্তর্বর্তী আশ্রয়শিবিরগুলোকে। কিন্তু দিনের পর দিন তা পুরোপুরি ফাঁকা। এর কারণ, রাষ্ট্রহীন রোহিঙ্গারা সেখানে ফিরে যেতে সাহস পাচ্ছেন না। তাদের মধ্যে ভয়, আতঙ্ক। দেশে ফিরে গেলে এবার তাদের সঙ্গে ভিন্ন রকম বা মানবিক আচরণ করা হচ্ছে এমন নিশ্চয়তা তারা পাচ্ছেন না।

মিয়ানমার সরকার এমন কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না বললেই চলে। তা ছাড়া তাদের প্রধান দাবি নাগরিকত্ব, সেই দাবির বিষয়ে স্পষ্ট কোনো কথা এখনও বলে নি মিয়ানমার সরকার। ফলে ওই সব অন্তর্বর্তীকালীন আশ্রয়শিবিরগুলো ফাঁকাই পড়ে থাকছে। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি। এতে বলা হয়, শুক্রবার ওই আশ্রয়শিবিরে কিছু সাংবাদিকের মুখোমুখি হন মিয়ানমারের অভিবাসন বিষয়ক পরিচালক উইন খাইং। তিনি নগা খু রা’তে অবস্থিত যে আশ্রয়শিবিরের সামনে দাঁড়িয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তা ছিল একেবারে জনমানবশূন্য।

অর্থাৎ সেখানে কোনোই রোহিঙ্গা নেই। ওই কর্মকর্তা বলেছেন, জানুয়ারি থেকেই আমরা এসব আশ্রয়শিবির খুলে বসে আছি। আমরা তাদেরকে (রোহিঙ্গা) গ্রহণ করতে প্রস্তুত। তিনি ওই এলাকা পরিদর্শনে দু’দিনের একটি সফরে সাংবাদিকদের নিয়ে গিয়েছেন। এএফপি লিখেছে, আশ্রয়শিবিরগুলো প্রস্তুত হলেও ফল শূন্য। শূন্য এসব আশ্রয়শিবিরের ভিতরে অফিসিয়াল কাজ করছেন মিয়ানমারের অভিবাসন বিষয়ক কর্মকর্তারা। তারা বিভিন্ন রকম কাগজপত্র উল্টাপাল্টা করছেন।

প্রস্তুত করছেন বায়োমেট্রিক যন্ত্রপাতি। তবে পরিদর্শনকারী ব্যক্তি ও সাংবাদিকদের সঙ্গে কিছু কথাবার্তা বলা ছাড়া তাদের করার মতো কোনোই কাজ নেই। ২৫ শে আগস্ট মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নৃশংসতা শুরুর পর ৭ লাখের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে চলে আসতে বাধ্য হন। তাদের মধ্য থেকে এ পর্যন্ত ২ শতেরও কম রোহিঙ্গা মুসলিম রাখাইনে পুনর্বাসন হয়েছেন বলে মিয়ানমার সরকারের দাবি। উল্লেখ্য, নৃশংসতার সময়ে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও তাদের দোসররা রোহিঙ্গা নারীদের নির্বিচারে, নরপিশাচের মতো গণধর্ষণ করেছে। নির্দয়ের মতো নির্যাতন করেছে সবার ওপর।

প্রকাশ্যে গুলি করে আত্মীয়-স্বজনের সামনে প্রিয়জনকে হত্যা করেছে। জ্বালিয়ে দিয়েছে গ্রামের পর গ্রাম। একে জাতিসংঘ সহ বিভিন্ন মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন জাতি নিধন বলে আখ্যায়িত করেছে। তবে মিয়ানমারের দাবি, তারা শুধু জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়েছে। সন্দেহজনকভাবে আটক কয়েকজনকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে সেনাবাহিনী। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ থেকে অবৈধভাবে বেশ কিছু মানুষ মিয়ানমারে প্রবেশ করার চেষ্টা করে বলে তাদেরকে ফেরত পাঠিয়েছে মিয়ানমার এমন দাবি সেদেশের। বাংলাদেশের শরণার্থী বিষয়ক কমিশনার মোহাম্মদ আবুল কালাম এএফপিকে বলেছেন, এখনও রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তন প্রক্রিয়া শুরু হয় নি।